শিলচর শিশু উদ্যান। — নিজস্ব চিত্র
লক্ষ্মী নাথ বেলুনওয়ালাকে ভোলেনি শিলচর।
ছোটদের প্রজন্ম তাঁকে চোখে দেখেনি। গল্প শুনেছে মা-বাবার মুখে। সেই কাহিনি আরও ছড়িয়ে দিতে শিলচর শিশু উদ্যানের সঙ্গে লক্ষ্মী নাথ বেলুনওয়ালার নাম জুড়ে দেওয়ার দাবি তুলল শহরের ছোটরা।
ছড়ার সুরে কথা বলে শহরে বেলুন বিক্রি করতেন লক্ষ্মী নাথ। সুরেলা গলায় বলতেন— ‘ভুবন পাহাড়ের ময়না বলে টুনটুনি। আরে বাপ রে বাপ!’ এর পরই ময়নার মতো আওয়াজ করতেন। প্রায় পাঁচ দশক এ ভাবেই শিলচরের রাস্তায় ঘুরেছেন তিনি। তাঁর গলা শুনলেই ছেলেমেয়েরা ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসত। বেলুন দিয়ে ময়না তৈরি করে দিতেন তিনি। গড়তেন বানরও। যে-দিকে এগোতেন, শিশু-কিশোররা তার পিছনে ছুটত।
সেই বেলুনওয়ালার স্মৃতিতেই শিলচর শিশু উদ্যানের নামকরণের দাবি তুলল কোরাস। ২০০৫ সালে ওই সংগঠনই আন্দোলন করে পার্কের জন্য সরকারের কাছ থেকে জমি আদায় করেছিল। তাই বয়স ১৫ না পেরোলেও কোরাসের সদস্যদের দাবিকে গুরুত্ব দেন শহরবাসী।
সংগঠনের ছোটদের অনেকেই লক্ষ্মী নাথ বেলুনওয়ালাকে চোখে দেখেনি। কিন্তু তাঁর গল্প শোনেনি, এমন শিশু-কিশোর শিলচরে কম রয়েছে। দু-দিনের শিশু নাট্যমেলায় বার বার উঠে এসেছে তাঁর কথা। নামকরণের ব্যাপারে জেলাশাসক এস বিশ্বনাথনের সঙ্গে তারা কথা বলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। সে জন্য স্মারকপত্রও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
শিলচর শিশু উদ্যান শহরের বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে গঠিত ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত। পদাধিকার বলে জেলাশাসক তার চেয়ারম্যান। নামকরণের ব্যাপারে এখনই তিনি কোনও মন্তব্য না করলেও ট্রাস্টের কর্মকর্তা রাজীব কর বলেন, ‘‘লক্ষ্মী নাথ বেলুনওয়ালার সঙ্গে আমাদের সকলের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তাই এই দাবি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।’’
একই বক্তব্য বিশ্বজিৎ দাস, ভাস্কর দাসের মতো অভিভাবকদের। কোরাসের এ বারের শিশু নাট্যমেলায় তাই বিশেষ জায়গা দখল করেন বেলুনওয়ালাই। রবিবার বেলুন উড়িয়েই দু’দিনের নাট্যমেলার উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক সঞ্জীব দাস। ছিলেন নাট্যকার-অভিনেতা সুব্রত ভট্টাচার্য, শেখর দেবরায়, চামেলি কর, আশিস ভৌমিক। দু’দিনে ৯টি নাটক পরিবেশিত হয়। এর মধ্যে কালীবাড়ি চরের মতো বস্তি এলাকা এবং বরশিঙ্গা চা বাগানের শিশু-কিশোরদের নাটক সপ্তদশ বর্ষের নাট্যমেলায় বড় পাওনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy