Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিচ্যুতি মেটাক বিচার বিভাগ নিজেই, চান বহু বিচারপতি

সমস্যার মূলে রয়েছে প্রধান বিচারপতি-সহ ৫ প্রবীণ বিচারপতিকে নিয়ে তৈরি কলেজিয়াম ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগে পছন্দের লোককে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১১
Share: Save:

প্রথমে বিষ। কিন্তু সমুদ্রমন্থনের শেষে অমৃতই মিলেছিল, বলে পুরাণ। সুপ্রিম কোর্টের অন্দরমহলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলেও আখেরে ইতিবাচক ফলই আশা করছেন অধিকাংশ বিচারপতি।

তাঁরা মনে করেন, সমস্যার মূলে রয়েছে প্রধান বিচারপতি-সহ ৫ প্রবীণ বিচারপতিকে নিয়ে তৈরি কলেজিয়াম ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগে পছন্দের লোককে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বহু বিচারপতিই চান, এই সুযোগে কলেজিয়াম ব্যবস্থা ও বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটিবিচ্যুতি দূর করা হোক। সুপ্রিম কোর্টের অধিকাংশ বিচারপতি, আইনজীবীদের মত, বিচার বিভাগ নিজেই নিজের ত্রুটি দূর না করলে বাইরে থেকে চাপ আসবেই।

মোদী সরকার জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন পাশ করিয়েছিল বিচারপতি নিয়োগে বিচারপতিদেরই একচ্ছত্র আধিপত্য শেষ করতেই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেয়। বিচারপতিদের আশঙ্কা, চলতি অন্তর্কলহের সুযোগ নিয়ে সরকার বা বিভিন্ন সংগঠন ফের হস্তক্ষেপ করতে পারে। আশঙ্কাটা অমূলক নয়। আজই বিচার বিভাগে সংস্কার ও স্বচ্ছতা চেয়ে একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে দাবি তুলেছে, বিচারপতি নিয়োগ কমিশন নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনা করা হোক। মামলাটি করেছেন আইনজীবী ম্যাথিউ নেধুমপারা। যিনি প্রাক্তন বিচারপতি সি এস কারনানের আইনজীবী ছিলেন। কারনান বিচার ব্যবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন বলে তাঁকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মোদী সরকারও মনে করে, বিচারপতি নিয়োগ কমিশনকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়া রায়ের পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সংসদেই বলেছেন, সব রাজনৈতিক দল পাশে থাকলে সরকার এগোতে রাজি।

যদিও কলেজিয়াম ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকলেও এ বিষয়ে সরকারের নাক গলানো মানতে রাজি নন বিচারপত ও আইনজীবদের বড় অংশ। তা সে বিচারপতি নিয়োগ হোক বা কোন বেঞ্চ, কোন মামলা শুনবে সেই প্রক্রিয়া। বিচারক ব্রিজগোপাল লোয়া-র রহস্যমৃত্যুর তদন্তের মামলা বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চে পাঠানোয় আপত্তি তুলেই ৪ প্রবীণ বিচারপতি প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। সেই দ্বন্দ্ব এখনও চলছে। আজ বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চও ওই মামলা নিয়ে বিশেষ এগোননি। মহারাষ্ট্র সরকার মামলা সংক্রান্ত রিপোর্ট মুখ বন্ধ খামে জমা দিয়েছে। আদালত মামলাকারী তেহসিন পুণাওয়ালা ও বন্ধুরাজ শম্ভাজিকেও সব তথ্য জানাতে বলে এক সপ্তাহের জন্য মামলা মুলতুবি করে দেওয়া হয়। তবে মামলাটি যে এর পরে ‘উপযুক্ত বেঞ্চে’ তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এত কাণ্ডের পরে অরুণ মিশ্র কী এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Dipak Misra Judiciary Judges CJI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE