ভিক্ষা করছে কৃষকের নাবালক ছেলে।
বাবার মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষে করতে হল এক দরিদ্র কৃষকের ছেলেকে। তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরম জেলার এক কৃষক কোলানজি ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে মারা যান। রাজ্য সরকারের কৃষক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প অনুযায়ী মৃতের পরিবারকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু কোথায় ক্ষতিপূরণের টাকা! দেড় বছর ধরে গ্রামের সরকারি দফতরের দরজায় দরজায় ঘুরেছে কোলানজির নাবালক ছেলে অজিত। টাকা সে পাবে, তবে একটা শর্তে। কী সেই শর্ত? অজিতের অভিযোগ, গ্রামের এক প্রশাসনিক আধিকারিক বলেছিলেন, “আগে ৩ হাজার টাকা টেবিলে রাখো, তার পর চেক ইস্যু হবে।”
একেই বাবাকে হারিয়ে সংসারের বেহাল অবস্থা, তার উপর বাবার শেষকৃত্যে বেশ কিছু টাকা ধার হয়ে গিয়েছে। সাড়ে ১২ হাজার টাকা পাওয়ার জন্য দেড় বছর ধরে বিভিন্ন দফতরে ঘুরে জুতোর শুকতলা খইয়ে ফেলা— তার যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল সব কিছু, জানিয়েছে অজিত। ঘরে হাঁড়ি চড়ছে না যেখানে সেখানে ঘুষের ৩ হাজার টাকা সে জোগাড় করবে কী ভাবে!
উপায়ন্তর না দেখে, হতাশ হয়ে একটি ব্যানারে তাকে সাহায্য করার কথা লিখে রাস্তায় ভিক্ষা করতে বেরোয় অজিত। তামিল ভাষায় ওই ব্যানারে লেখা ছিল “বাবার শেষকৃত্যের জন্য বেশ কিছু টাকা ধার হয়ে গিয়েছে, সেই টাকা শোধ করার সামর্থ্য নেই। বাবার মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য ৩ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে ঘুষ হিসাবে। তাই সকলের কাছে সাহায্য চাইছি।”
বাস-ট্রেনেও তাকে এই ভাবে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। গ্রামের সরকারি দফতরের ওই আধিকারিককে ছুটিতে পাঠানো হয়।
রাজস্ব দফতরের আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে সেই আধিকারিক গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, কোলানজির স্ত্রী বিজয়ার নামে চেক তৈরি হয়ে রয়েছে। কোলানজির ছেলে নাবালক হওয়ায় তার হাতে ওই অর্থ তুলে দেওয়া হয়নি। তবে ওই পরিবার যাতে তাড়াতাড়ি টাকাটা পায় সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy