নজিরবিহীন বিরোধী ঐক্যের সাক্ষী হতে চলেছে নীতীশ কুমারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। টানা তৃতীয় বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন নীতীশ। ২০ নভেম্বর সেই অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে হাজির হচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আমন্ত্রিত দেশের অন্যান্য অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরাও।
নীতীশের শপথে সনিয়া, মমতা ও কেজরীবাল যে অবশ্যই হাজির হচ্ছেন, তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন জেডিইউ সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী। তিনি বলেন, নীতীশ কুমারের এ বারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে বিরোধী দলগুলির ঐক্যের যে সূচনা হবে, তা দেশে আগে কখনও হয়নি। ত্যাগী জানান, রাহুল গাঁধীও থাকবেন পটনার গাঁধী ময়দানে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে নীতীশ কুমারের এ বারের শপথ গ্রহণ। বিহারে মহাজোট গঠন সম্ভব হওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান যে সনিয়া-রাহুলের, তা লালু-নীতীশও মানছেন। একত্রিত হলে যে মোদীর বিজয়রথ হেলায় রুখে দেওয়া যায়, মহাজোটের দৌলতে তা প্রমাণিত বিহারের ভোটে। সেই সাফল্যকে তুলে ধরেই বিজেপি বিরোধী জোটকে বড় আকার দিতে চাইছেন সনিয়া এবং মহাজোটের অন্য নেতারা। জাতীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জন্ম দিতে ২০ নভেম্বর গাঁধী ময়দানের অনুষ্ঠান তাই খুব বড় ভূমিকা নিতে চলেছে। রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বিহার মডেলকে তুলে ধরতে কংগ্রেস যেমন মরিয়া, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বেশ কিছু দিন ধরে চলতে থাকা গেরুয়া ঝড়ের পুনরাবৃত্তি রুখে নিজেদের আঞ্চলিক অস্তিত্ব ধরে রাখতে উদগ্রীব ছোট দলগুলিও। নীতীশের শপথ-মঞ্চ তাই জাতীয় রাজনীতির নতুন রসায়নাগার হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়া, প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডি ও হেমন্ত সোরেন, আইএনএলডি নেতা অভয় চৌটালাও। এঁদের মধ্যে ক’জন শেষ পর্যন্ত ২০ নভেম্বরের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে তরুণ গগৈ ও অখিলেশ যাদব নীতীশের শপথে পৌঁছতে পারেন বলে সূত্রের খবর। আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ এবং জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব শপথ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হচ্ছেন। তবে বিজেপি’র বিরুদ্ধে এককাট্টা হওয়ার বার্তা দিতে মহাজোটের বাইরের যে নেতা-নেত্রীরা নীতীশের শপথে হাজির হচ্ছেন, তা জাতীয় রাজনীতিতে খুব বড় ভবিষ্যৎ সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। নীতীশ-লালু-কংগ্রেস তো আগে থেকেই একত্রিত। এবার তৃণমূল ও আপের মতো আঞ্চলিক শাসক দলগুলি সেই মঞ্চে যোগ দিলে গোটা উত্তর ও পূর্ব ভারতেই আগামী দিনে বিজেপি’র জন্য অপেক্ষায় থাকবে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy