Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরাখণ্ডে গরিষ্ঠতা প্রমাণে রাওয়াতকে দু’ঘণ্টা সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট

মঙ্গলের সকালে ঘড়ি ধরে দু’ঘন্টা। তার মধ্যেই স্থির হয়ে যাবে উত্তরাখণ্ডের ভাগ্য। সুপ্রিম কোর্ট আজ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার সকালে ১১ টা ১ টা পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডের রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিতে হবে। আর এই সময়ে হরীশ রাওয়ত আস্থা ভোটে তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ২২:০৫
Share: Save:

মঙ্গলের সকালে ঘড়ি ধরে দু’ঘন্টা। তার মধ্যেই স্থির হয়ে যাবে উত্তরাখণ্ডের ভাগ্য।

সুপ্রিম কোর্ট আজ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার সকালে ১১ টা ১ টা পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডের রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিতে হবে। আর এই সময়ে হরীশ রাওয়ত আস্থা ভোটে তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন। আপাতত কংগ্রেসের ৯ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক সেই আস্থা ভোটে যোগ দিতে পারবেন না। যেহেতু তাঁদের সদস্যপদ খারিজের মামলা এখনও আদালতে নিষ্পত্তি হয়নি। গোটা আস্থা ভোটটি হবে আদালতের নজরদারিতে আর পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিও তোলা হবে। তবে আস্থা ভোটে জয় যারই হোক, কংগ্রেস ও বিজেপি উভয়েই শীঘ্র রাজ্যে নতুন করে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

কংগ্রেসের ৯ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক যদি ভোটে সামিল হতে না পারেন, তাহলে আপাত দৃষ্টিতে হরীশ রাওয়তের সুবিধা। কারণ, ৭০ সদস্যের বিধানসভায় বিধায়ক কমে দাঁড়াবে ৬১-তে। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ৩১ জন বিধায়কের সমর্থন। কংগ্রেসের ২৭ জনের পাশাপাশি আরও সমর্থকদের নিয়ে আপনা থেকেই সেই সংখ্যাটি রয়েছে হরীশের ঝুলিতে।

কিন্তু বিজেপি এখনই রণে ভঙ্গ দিতে চাইছে না। কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আজই উত্তরাখণ্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ। বিজেপি মনে করছে, আগামিকালই বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সদস্য পদ খারিজের মামলার শুনানি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যদি মঙ্গলবারের মধ্যে এই মামলায় জিতে যান বিক্ষুব্ধরা, তাহলে তাঁরাও আস্থা ভোটে সামিল হতে পারবেন। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের যে প্রধান বিচারপতি কে এম জোসেফ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন, তাঁকে ইতিমধ্যেই বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বিজেপি চেষ্টায় আছে, আরও কিছু বিধায়কের সমর্থন যদি নিজেদের দিকে টানা যায়। গোপন ব্যালটেও ভোট নেওয়া যায় কি না, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দিল বম্বে হাইকোর্ট

উত্তরাখণ্ডে আস্থা ভোট করানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মত জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়ে দেন, কেন্দ্র আস্থা ভোট করাতে রাজি। মোদী সরকারের সূত্রের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যেভাবে চেপে ধরেছিল, তাতে আস্থা ভোট মেনে নেওয়া ছাড়া আর উপায় ছিল না। তবে হার-জিত যারই হোক, এ রাজ্যে শীঘ্রই নির্বাচন হবে। বিজেপিও তাই চাইছে, কংগ্রেসও।

বিজেপি নেতৃত্ব মনে করেন, উত্তরাখণ্ডে সঙ্কট বিজেপি তৈরি করেনি। এটি হয়েছে কংগ্রেসের ভিতরে ফাটল ধরায়। ফলে দ্রুত ভোট হলে বিজেপি এটি রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগাতে পারবে। আর হরীশ রাওয়ত মনে করেন, গোটা ঘটনায় তিনি মানুষের সহানুভূতি কুড়োতে পেরেছেন। ফলে আবেগ তাঁর পক্ষে। ফলে আগামী বছর এমনিতেই নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এখনই ভোটে গেলে বাড়ি লাভ।

তবে কপ্টার-দুর্নীতিতে বিদ্ধ কংগ্রেস শিবির আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছুটা স্বস্তিতে। আজ সকালেই যন্তর-মন্তরে সনিয়া গাঁধী ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ সভা করে গোটা কংগ্রেস শিবিরকে তাতিয়ে দিয়েছেন। তারপর এই রায়ের পর কংগ্রেস আজ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের পদত্যাদের দাবি করে বসেছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় ঐতিহাসিক। যারা গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরতে চেয়েছে, তাদের পরাজয় হয়েছে। গণতন্ত্রের হত্যাকারী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE