আধার মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হোঁচট খেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
সরকারি সুবিধার জন্য আধার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল নবান্ন। তা করতে গিয়ে রাজ্য সরকার আধারের সাংবিধানিক বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসে। এই মামলায় আজ বিচারপতি এ কে সিক্রি ও অশোক ভূষণের বেঞ্চ বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত ভাবে, সাধারণ নাগরিক হিসেবে আধারের বিরুদ্ধে মামলা করুন। তা শোনা হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও আইনকে রাজ্য সরকার চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে না। রাজ্যকে আর্জি শোধরানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
এ দিনই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, আধার নিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশের বিরোধিতায় দাখিল করা মামলাগুলি শুনানির জন্য সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হবে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ওই মামলাগুলির শুনানি সেখানেই হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের আদালতের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি মনে করি না, ওতে কোনও সমস্যা আছে। কোর্টের রায় আমরা মেনে চলব।’’ একই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, শীর্ষ আদালত রাজ্যের মামলা খারিজ করে দেয়নি। সরকারি সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যের আর্জিটি সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্টে ফের দায়ের করা হবে।
এ কথা ঠিক, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের আর্জি খারিজ করেনি। রাজ্যকে আর্জি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সিক্রির মন্তব্য, ‘‘আধার বাধ্যতামূলক করার প্রশ্নটি বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু একটা রাজ্য কী ভাবে সংসদে পাশ হওয়া আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে? এর পর তো কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের পাশ করা আইনকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবে!’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ব্যক্তিগত স্তরে, নাগরিক হিসেবে মামলা করুন। আমরা নাগরিক হিসেবেই তাঁর আর্জি বিবেচনা করব।’’
আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের একটি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের শ্রম দফতর সুপ্রিম কোর্টে যায়। মামলাটি করা হয় সংবিধানের ৩২তম অনুচ্ছেদের আওতায়। দেশের কোনও নাগরিক যদি মনে করেন, রাষ্ট্রের কোনও আইনে তাঁর মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে, তখন তিনি সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ কাজে লাগিয়ে মামলা করতে পারেন। কোনও রাজ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এর ব্যবহার করতে পারে না।
রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে জানান, রাজ্য সরকার নয়, মামলাটি করেছে রাজ্যের শ্রম দফতর। বিচারপতি সিক্রি হেসে ফেলে সিব্বলকে বলেন, ‘‘এ সব বিষয়ে আপনি আমার থেকেও বেশি অভিজ্ঞ। মুখ্যসচিবের মাধ্যমে মামলা হচ্ছে। শ্রম দফতর তো রাজ্য সরকারেরই।’’ এর পরেই আর্জি শোধরানোর পরামর্শ মানেন সিব্বল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy