ব্যভিচারকে আর সেকেলে আইনের চোখে দেখতে চাইছে না সুপ্রিম কোর্ট। বরং সমানাধিকারের ভাবনায় ব্যভিচারের ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে এ বার মহিলাকেও শাস্তি দেওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে শীর্ষ আদালত।
এ দেশে ব্যভিচার সংক্রান্ত আইনটি ১৫৭ বছরের পুরনো। ভারতীয় দণ্ডবিধি আইপিসি-র ধারা ৪৯৭ বলছে, কোনও ব্যক্তি পরস্ত্রীর সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক করলে তা ধর্ষণ নয়, ব্যভিচার হিসেবে গ্রাহ্য হবে। তবে এ ক্ষেত্রে শাস্তি শুধু পুরুষেরই হবে। পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে। অবশ্য ওই সম্পর্কে স্বামীর মত থাকলে বিষয়টি আর ব্যভিচারের অপরাধ হিসেবে গ্রাহ্য হবে না। ব্রিটিশ জমানার এই আইনটির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই আজ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ।
ব্যভিচার আইনের মূলত দু’টি বিষয়কে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এক, আইনের ধারায় মহিলাদের কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে— তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আদালতের। কারণ, ব্যভিচারের ঘটনায় স্বেচ্ছায় নারী ও পুরুষ দু’জনেই জড়িত থাকলেও ধারা ৪৯৭ মহিলাকে নির্যাতিতা হিসেবেই দেখিয়েছে আর পুরুষের জন্য দিয়েছে শাস্তির বিধান। আদালতের মতে, অপরাধ হলে বিবাহিতা মহিলাও তাতে সমান অংশীদার, ফলে শাস্তির প্রশ্নে তার ভূমিকাও খতিয়ে দেখতে হবে। দুই, স্বামীর জ্ঞাতসারে এমন সম্পর্ক তৈরি হলে তা যে হেতু অপরাধ হিসেবে গ্রাহ্য হয় না— তাই এর পিছনে মহিলাকে পুরুষের সম্পত্তি হিসেবে দেখার মনোভাব জড়িয়ে রয়েছে কিনা, সে প্রশ্নও উঠেছে। আইনের এই অংশটিও খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে নোটিস দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে মতামত জানাতে বলেছে। কোর্টের মতে, ‘‘এমন সময় এসেছে যখন সমাজকে বুঝতে হবে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এক জন নারীর সমানাধিকার রয়েছে। ফলে কোনও আইনে এই ধরনের ব্যাপার থাকলে তাকে একেবারে সেকেলে বলেই মনে হয়।’’ শীর্ষ আদালতের মতে, ‘‘সমাজ এগিয়ে গিয়েছে। নতুন ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy