Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
National News

ইস্তফা দিতে চাইলেন রেলমন্ত্রী, মোদী বললেন অপেক্ষা করতে

ট্রেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে এর আগে ভারতে ইস্তফা দিয়েছিলেন আরও দুই রেলমন্ত্রী। লালবাহাদুর শাস্ত্রী ও নীতীশ কুমার। ’৫৬ সালে তামিলনাড়ুর আরিয়ালুতে একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে ইস্তফা দিয়েছিলেন তদানীন্তন রেলমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী। আর ’৯৯ সালে গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনার পরে পদত্যাগ করেছিলেন রেলমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।- ফাইল চিত্র।

রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ১৭:০৭
Share: Save:

গত চার দিনে পর পর দু’টি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে ইস্তফা দিতে চাইলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। বুধবার দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। তিনি যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তার ইঙ্গিত দিয়ে প্রভুর টুইট, সব শুনে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছেন, ‘একটু অপেক্ষা করুন’।

ট্রেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে এর আগে ভারতে ইস্তফা দিয়েছিলেন আরও দুই রেলমন্ত্রী। লালবাহাদুর শাস্ত্রী ও নীতীশ কুমার। ’৫৬ সালে তামিলনাড়ুর আরিয়ালুতে একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে ইস্তফা দিয়েছিলেন তদানীন্তন রেলমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী। আর ’৯৯ সালে গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনার পরে পদত্যাগ করেছিলেন রেলমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

তার পরের বছরেই পর পর দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন তদানীন্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী অবশ্য মমতার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি।

কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না

গত শনিবার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটে দিল্লি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে, উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে। লাইন থাকায় পুরী-হরিদ্বার উৎকল এক্সপ্রেসের ১৩টি কামরা বেলাইন হয়ে যাওয়ায় ২২ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ২০০-রও বেশি যাত্রী। আর মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশেরই আওরাইয়া জেলায় একটি ডাম্পারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে দিল্লিগামী কৈফিয়ত এক্সপ্রেসের। তাতে ১০টি বগি লাইনচ্যূত হয়ে যায়। ৭০ জনেরও বেশি যাত্রী জখম হন।

দেখুন গ্যালারি: প্রভুর তিন বছরে ৮টি বড় রেল দুর্ঘটনা, বলি ৩০০

আরও পড়ুন- বাবা রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার রায় ঘিরে বারুদের স্তূপে দুই রাজ্য

আরও পড়ুন- ফের উঃ প্রদেশ, লাইনচ্যুত কৈফিয়ত এক্সপ্রেস, আহত অন্তত ৭৪

বুধবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করে আসার পর ৫টি টুইট করেন রেলমন্ত্রী। একটি টুইটে প্রভু লেখেন, ‘‘এই সব ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। মর্মাহত।’’

মঙ্গলবার ট্রেন দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে মিত্তল। বুধবার তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন অশ্বিনী লোহিনী। রেল বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান লোহিনী এ দিনই কার্যভার গ্রহণ করেছেন।

রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর জমানায় ভারতে গত ৩ বছরে একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩০০ জনের। গত বছর পটনা-ইনদওর এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়লে মৃত্যু হয় ১৫০ জনের। ট্রেন দুর্ঘটনার বড় বড় ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৮টি। ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে কর্নাটকের আনেকালে বেঙ্গালুরু-এর্নাকুলাম ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়লে ১০ জনের মৃত্যু হয়। তার পরের মাসেই রায়বরেলীতে দেহরাদুন-বারাণসী জনতা এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হলে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫-র মে মাসে উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বিতে রৌরকেল্লা-জম্মু তাওয়াই মুরি এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হওয়ায় ৫ জনের মৃত্যু হয়, জখম হন ৫০ জনেরও বেশি। ২০১৫-র অগস্টেই মধ্যপ্রদেশে কামায়নী এক্সপ্রেস ও জনতা এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হওয়ায় ৫০ জনেরও বেশি যাত্রী মারা যান। তার পরের মাসেই কর্নাটকের কালবার্গিতে দুরন্ত এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হলে মৃত্যু হয় ২ জনের, জখম হন ৭ জন। ওই সেপ্টেম্বরেই কালকা থেকে শিমলা যাওয়ার পথে ২ ব্রিটিশ পর্যটকের মৃত্যু হয়, ১৫ জনেরও বেশি জখম হন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজিয়ানাগরামে জগদলপুর-ভুবনেশ্বর হীরকখণ্ড এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হলে ৪১ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন প্রায় ৭০ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE