Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পরের মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী, বিহারে ঘোষণা লালুর

ছেলে তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখার ইচ্ছাটা এক দিন আগেই ভাসিয়ে দিয়েছিলেন মা, রাবড়ী দেবী। শুক্রবার তেজস্বীর বাবা লালুপ্রসাদ সেই ইচ্ছায় সিলমোহর লাগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চাপে ফেললেন।

তেজস্বী যাদব

তেজস্বী যাদব

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

ছেলে তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখার ইচ্ছাটা এক দিন আগেই ভাসিয়ে দিয়েছিলেন মা, রাবড়ী দেবী। শুক্রবার তেজস্বীর বাবা লালুপ্রসাদ সেই ইচ্ছায় সিলমোহর লাগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চাপে ফেললেন।

এ দিন লালুপ্রসাদ বলেন, ‘‘সন্দেহ নেই নীতীশ কুমার মহাজোটের সর্বসম্মত নেতা। কিন্তু আমি ও নীতীশ বুড়ো হচ্ছি। ভবিষ্যতে তেজস্বীকেই মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নিতে হবে।’’ যা দেখে পটনার রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তবে কী নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়াটা চূড়ান্ত করে ফেলেছেন এবং অদূর ভবিষ্যতে লালুপ্রসাদকে ছেড়ে তিনি বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়তে পারেন। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই কি লালুর এই প্যাঁচ?

লালুর ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, যাদব নেতা না ভেবে-চিন্তে কোনও কথা বলেন না। তাঁর আপাত কৌতুকের মধ্যেও অনেক অঙ্ক থাকে। লালু নিজেও এই কথা বলে এক দিকে পুত্রের মুখ্যমন্ত্রিত্বের আগাম সম্ভাবনা মানুষের সামনে তুলে ধরছেন, তেমনই নীতীশের সঙ্গে বিচ্ছেদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখতে চাইছেন। যাতে নীতীশ লালুকে ছাড়ার আগেই যাদব-প্রধান পুত্রকে সামনে এনে বিরোধিতার রাজনীতিতে যেতে পারেন।

আরও পড়ুন:
মদ ছাড়ায় না ডান্ডা, ভোটে গুলাবি গ্যাং

ইতিমধ্যেই দলের সাংসদ-বিধায়করা বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা লালুপ্রসাদের কনিষ্ঠ পুত্র তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব হয়েছেন। গত সপ্তাহে গয়ার সভায় তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি করেন নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তথা আরজেডি নেতা চন্দ্রশেখর প্রসাদ। সেই দাবি সমর্থন করেন গয়ার দলীয় বিধায়ক সুরেন্দ্র যাদব। দু’জনের বক্তব্যের সময়ে মঞ্চে ছিলেন তেজস্বী। তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। শুধু মুচকি মুচকি হেসেছেন। এর আগে থেকেই ভাগলপুরের সাংসদ তথা আরজেডি যুব মোর্চার সভাপতি বুলু মণ্ডল তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি করে আসছেন।

তবে লালুর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছে জেডিইউ। দলের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম রজক বলেন, ‘‘রাজনীতিতে বুড়ো বলে কিছু হয় না। বীর কুঁয়র সিংহ থেকে জয়প্রকাশ নারায়ণ, সকলেই শেষ দিন পর্যন্ত লড়েছেন।’’ ঠারেঠোরে রজক বুঝিয়ে দেন, লালুপ্রসাদ এটা বলে ঠিক করেননি।

জেডিইউ-আরজেডি, জোট সরকারের দুই শরিকের বিবাদ চলছে বেশ কিছু দিন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, নোট বাতিলের মতো বিষয়ে কেন্দ্রের পাশে ছিলেন নীতীশ। আবার দিল্লি গিয়ে নীতীশ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে হাজিরাও দেন। নীতীশের এই দ্বিমুখী কৌশলের উদ্দেশ্য ছিল লালুপ্রসাদ ও তাঁর পুত্রদের ওপরে চাপ তৈরি করা। এরই মধ্যে বিহার কর্মী নিয়োগ আয়োগের দুর্নীতি সামনে এসে পড়ে। লালুপ্রসাদ ঘনিষ্ঠদের সেই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলছে। এ সুযোগ ছাড়েননি নীতীশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tejashwi Yadav Lalu Prasad Yadav
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE