নিজের হোটেলের সমস্ত কর্মীকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন নইম রব্বানি। সেখানেই বলছিলেন, ‘‘আরও একটা দাদরি হতে হতে হল না। লোকগুলো খেপে ছিল। আমি ওখানে থাকলে কী হতো? আমার হোটেলের ম্যানেজারকেই বা কেন ওদের মাঝখানে নিয়ে যাওয়া হল?’’ ম্যানেজার ওয়াসিম আহমেদ জানালেন, জনতার মার থেকে তিনি পুরোপুরি বাঁচতে পারেননি। জয়পুরের রাষ্ট্রীয় মহিলা গো-রক্ষা দলের নেত্রী ‘কমল দিদি’র নেতৃত্বে প্রায় দেড়শো জনের একটা দল রবিবার রাতে চড়াও হয়েছিল তাঁদের হোটেলে। গো-রক্ষকদের অভিযোগ ছিল, হোটেলে নাকি গোমাংস রান্না হয়েছে। তার পরেই শুরু হাঙ্গামা।
গোমাংস নিয়ে এমন গুজবের জেরেই দাদরিতে মহম্মদ আখলাখকে পিটিয়ে মেরেছিল জনতা। জয়পুরে পুলিশ অবশ্য ওয়াসিম এবং হোটেলের আর এক কর্মী কাসিমকে তুলে নিয়ে যায়। যদিও ওয়াসিমের অভিযোগ, একটু পরেই ‘জনতাকে শান্ত করতে’ ফের থানা থেকে হোটেলে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। তখন তাঁকে নাগালে পেয়ে জনতা যখন ‘হাতের সুখ’ করছিল, তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল পুলিশ।
সিন্ধি ক্যাম্প এলাকার এই হোটেলে তালা ঝুলিয়েছে পুলিশ। হোটেল কর্তৃপক্ষ বারবার বলছেন, তাঁদের রেস্তোরাঁয় গোমাংসের পদই হয় না। রবিবার হোটেলকর্মীদের জন্য মুরগি রান্না হয়েছিল। আস্তাকুঁড়ে তার উচ্ছিষ্ট ফেলতে গিয়েই গো-রক্ষকদের কবলে পড়েন দুই হোটেলকর্মী। পুলিশ অফিসার মনফুল সিংহও বলেছেন, ‘‘নমুনা পরীক্ষা করে মনে হচ্ছে সেটা মুরগিরই মাংস।’’
মাংসের ফরেন্সিক পরীক্ষার আগেই জয়পুরের নবনির্বাচিত মেয়র অশোক লাহোটি রাজ্য বিজেপির মিডিয়া সেলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ করেছেন, ‘গরুদের গোমাংস খাওয়ানো হচ্ছিল বলে ওই হোটেল সিল করা হল।’ সেটা কী রকম? গো-রক্ষকদের দাবি, পথে ফেলা গোমাংসের উচ্ছিষ্ট খেয়ে নাকি রাস্তার গরুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিল! মেয়র এখন দাবি করছেন, মেসেজটি শুধু ফরোয়ার্ড করেছিলেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি ছিল না কর্তৃপক্ষের। তাই বন্ধ করা হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে সরব সিপিএম, সিপিআই, পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ-সহ একাধিক দল ও সংগঠন। তাদের দাবি, সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তাদের সাসপেন্ড করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy