রাজেশ ও নূপুর তলোয়ার। ফাইল চিত্র।
নিম্ন আদালতের রায়কে শুধু খারিজই করেনি। আরুষি হত্যা মামলায় রায় শোনানোর সময় শুক্রবার নিম্ন আদালতের বিচারপদ্ধতিকেও কটাক্ষ করেছে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি বি কে নরায়ণ এবং বিচারপতি এ কে মিশ্র।
আরও পড়ুন:
শেষ হয়েও শেষ হল না জেল-জীবন, সোমবার পর্যন্ত বন্দিই তলোয়ার দম্পতি
‘সুন্দরী ভূত’ তেলঙ্গানার গ্রামে! বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন পুরুষরা
২০০৮ সালে আরুষি-হেমরাজ জোড়া হত্যা মামলায় আরুষির বাবা-মা রাজেশ ও নূপুর তলোয়ারকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল গাজিয়াবাদের বিশেষ সিবিআই আদালত। ওই মামলায় ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর তলোয়ার দম্পতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা শোনান অতিরিক্ত দায়রা বিচারক শ্যাম লাল। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন আরুষির বাবা-মা তথা নয়ডার চিকিৎসক দম্পতি। সেই মামলার রায়ে গত কাল রাজেশ ও নূপুরকে বেকসুর খালাস করে হাইকোর্ট। মামলার রায়ে বিচারপতি বি কে নরায়ণ এবং বিচারপতি এ কে মিশ্র জানান, পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণকে হাতিয়ার করে বিশেষ সিবিআই আদালত এই সাজার যে বিধান দিয়েছিল তা তলোয়ার দম্পতিকে খুনি প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিচারপতি এ কে মিশ্রের কথায়, ‘‘নিম্ন আদালতের বিচারক নিজের মতো করে ঘটনাক্রম সাজিয়েছেন। সাজা ঘোষণার সময় একটা সম্পূর্ণ ভিন্ন গল্প বলা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘পারিপার্শ্বিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে অভিযোগ প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনার গভীরে যাননি বিচারক। নিজের মতো করে সত্য প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।’’ বিচারপতি মিশ্রের ব্যাখ্যা, “বিচারক আসলে একটা ধাঁধাঁর সমাধান করতে চেয়েছিলেন। অনেকটা অঙ্ক কষার মতো। ঠিক যেমন ভাবে কোনও অঙ্কের শেষটা মেলানোর চেষ্টা করা হয়।”
বিচারপতির মিশ্রের দাবি, ২০০৮ সালের ১৬ মে নয়ডার জল বায়ু বিহারের এল-৩২ নম্বর ফ্ল্যাটের ভিতর এবং বাইরে ঠিক কী হয়েছিল সেটা পুরোপুরি রং চড়িয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। গোটা ঘটনাটাই কাল্পনিক গল্পের মতো ব্যাখ্যা করেছে নিম্ন আদালত। বিচারপতি মিশ্রের কথায়, ‘‘আরুষি এবং হেমরাজকে ঘরের মধ্যে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছিলেন রাজেশ তলোয়ার। তার পর নিম্ন আদালতের বিচারক এক জন চলচ্চিত্রকারের মতো কিছু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঘটনাকে সাজানোর চেষ্টা করেছেন। এর পর ওই ঘটনার যে ব্যাখ্যা তিনি করেছেন তার কোনও যৌক্তিকতাই নেই।’’ বিচারপতি মিশ্র জানান, আদালতের বিচারপক্রিয়া উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে হয়। কিন্তু, এই মামলা পুরোপুরি ধারণার উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়েছিল। আর শুধুমাত্র কিছু মনগড়া ধারণার উপর ভিত্তি করে কোনও ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy