Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
National News

এই ছেলের বাবাকে মেরেছিল জঙ্গিরা

ফেসবুক পোস্টের দৌলতে ফকিরগঞ্জের দুরবস্থায় সামান্য আলো পড়তে পারে বলে মিজানুরবাবু ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদারদের আশা।

স্বাধীনতা দিবসে সেই পতাকা তোলার ছবি। — সংগৃহীত।

স্বাধীনতা দিবসে সেই পতাকা তোলার ছবি। — সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ২০:০৫
Share: Save:

বুক জল ঠেলে পতাকা তুলে স্যালুট ঠুকেছিল তারা। তারপর পর পর গেয়েছিল জনগণমন এবং বন্দেমাতরম। শিক্ষক মিজানুর রহমান ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ১৫ অগস্ট সকালে বানভাসি ধুবুড়িতে স্বাধীনতা দিবস পালনের সেই ব্যতিক্রমী ছবি। তা গোটা দেশে ভাইরাল হয়ে পৌঁছেছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও। দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে ওঠা তৃতীয় শ্রেণির দুই ছাত্র জিয়ারুল আলি খান ও হায়দর আলি খান এবং তাঁদের শিক্ষকদের সম্বর্ধিত করল এআইইউডিএফ। সেখানেই জানা গেল, জঙ্গি মঞ্চের ডাকা বনধ ও বন্যা অগ্রাহ্য করে দেশের পতাকা তোলা ছোট্ট হায়দরের বাবাকে ২০১২ সালে বড়োভূমিতে হত্যা করা হয়। হায়দররা তিন ভাইবোন। মা পরিচারিকার কাজ করে এখন সংসার চালাচ্ছেন। জিয়ারুলের বাবাও দিনমজুর। সম্বর্ধনা নিতে আসার জন্যই জীবনে প্রথম বার গাড়ি চড়ার সৌভাগ্য হয়েছে তাদের।

মাসুদ আখতারের কোলে হায়দর ও জিয়ারুল। ছবি— সংগৃহীত।

আইনজীবী মাসুদ আখতার জামানের গাড়িতে ওরা আসে। গাড়ির ভিতরে ঠান্ডা, বাইরে গরম- তা দেখে চমকে যায় তারা। ফকিরগঞ্জের নাসকারা নিম্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মিজানুরবাবু জানান, ধুবুরি অঞ্চলের দুরবস্থা নিয়ে তিনি নিজে আগে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছিলেন মে মাসে। জানিয়েছিলেন সেখানে হাসপাতালে যাওয়ারও রাস্তা নেই। নদী পেরিয়ে জেলা সদরে যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। চলে দিনে দুটি ফেরি। মিজানুর জানান, প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাঁর চিঠি রাজ্য সরকারকে পাঠালেও গত তিন মাসে রাজ্য কোনও জবাব দেয়নি।

আরও পড়ুন, ১৯১২-তেই স্কুলে ঋতুকালীন ছুটি মঞ্জুর করেছিল কেরল

আরও পড়ুন, ডোকলাম পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে, আশাবাদী রাজনাথ

এ বার তাঁর ফেসবুক পোস্টের দৌলতে ফকিরগঞ্জের দুরবস্থায় সামান্য আলো পড়তে পারে বলে মিজানুরবাবু ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদারদের আশা। দেশপ্রেমের অনন্য উদাহরণ তুলা ধরায় এআইইউডিএফ প্রধান তথা ধুবুড়ির সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল নাসকারা স্কুল-সহ সেখানকার চারটি স্কুলকে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেন। বাকি তিনটি স্কুলের শিক্ষক-ছাত্ররা স্কুলে জলের জন্য ঠাঁই না পেয়ে নৌকায় পতাকা তুলেছিল। নাসকারা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ২৫ হাজার, বাকি ন’জন শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য তুলে দেন আজমল। শিক্ষক-ছাত্রদের সঙ্গেই পতাকা তোলায় সাহায্য করা সরযু বিবিকেও সাহায্য দেওয়া হয়। তাঁর ছেলেরাও ওই স্কুলে পড়ে। আজমল জানান, সেখানকার সমস্যা নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE