Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ত্রিপুরায় কোপে মুকুল, সুদীপেরা

বিধায়ক পদে ইস্তফা না দিয়েই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ৬ জন। তাঁদের মধ্যে এক জন আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে চলে গিয়েছেন। বাকি পাঁচ জন বিধায়ক রবিবার জানিয়ে দেন, রাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী মীরা কুমারকে তাঁরা সমর্থন করবেন না।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।—ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুরের পরে ত্রিপুরা। উত্তর-পূর্বের আরও এক রাজ্যে বিড়ম্বনায় পড়ল তৃণমূল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে ত্রিপুরায় তৃণমূল বিধায়কদের ‘বিদ্রোহে’র জেরে ফের কোপ এসে পড়ল দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের উপরে। তাঁকে সরিয়ে মানিক সরকারের রাজ্যে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা ঘটনায় এক দিকে যেমন ভিন্ রাজ্যে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ল, তেমনই বিধানসভা ভোটের আগের বছরে ত্রিপুরায় বিজেপি-র প্রভাব বিস্তারে সুবিধা হলো বলে মনে করা হচ্ছে।

বিধায়ক পদে ইস্তফা না দিয়েই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ৬ জন। তাঁদের মধ্যে এক জন আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে চলে গিয়েছেন। বাকি পাঁচ জন বিধায়ক রবিবার জানিয়ে দেন, রাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী মীরা কুমারকে তাঁরা সমর্থন করবেন না। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে ‘দল-বিরোধী’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওই পাঁচ বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূল কোনও সম্পর্ক রাখবে না বলে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানিয়েছেন। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘আঙুর ফল তো টক! তৃণমূল ধূমধাম করে কংগ্রেস থেকে ওঁদের নিয়ে এসেছিল। এখন কাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন পার্থবাবু!’’

পার্থবাবুর ঘোষণার পরে সন্ধ্যায় আগরতলায় ওই বিধায়কদের তরফে সুদীপ রায়বর্মন বলেন, ‘‘সিপিএমের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই করতেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। দলনেত্রী আগে বলতেন, তিনি সিপিএমের ছায়ায় পা দিতে চান না! কিন্তু এখন তাঁদের কাছাকাছি আসতে শুরু করেছেন।’’

সুদীপবাবুর বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাউকে কিছু না বলে তাঁরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারতেন। কিন্তু প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা মুখ খুলেছেন। আবার বিজেপি নেতা রামমাধব সমর্থন চাইলেও তাঁকে কোনও আশ্বাস দেননি।

সিপিএম-তৃণমূল সমঝোতার কারণ দেখিয়ে ত্রিপুরার বিধায়কেরা যে তলে তলে বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছেন, তার জন্য পর্যবেক্ষক হিসাবে ব্যর্থতা স্বীকার করে দিনকয়েক আগে মুকুলবাবু নিজেই তৃণমূল নেত্রীকে চিঠি লিখে অব্যাহতি চেয়েছিলেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। মুখে অবশ্য সেই চিঠির কথা মুকুলবাবু স্বীকার করতে চাননি। কিন্তু ওই চিঠি এবং রবিবার বিধায়কদের ঘোষণার জেরেই সব্যসাচীবাবুকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া হলো বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা। পার্থবাবু অবশ্য এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘এটা দলের সাংগঠনিক ব্যাপার।’’ সব্যসাচীবাবুকে পাশে নিয়ে পার্থবাবু যখন ত্রিপুরা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন, তখন তৃণমূল ভবনেই ছিলেন মুকুলবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE