Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সংসদে দু’পক্ষের সমদূরত্বে তৃণমূল

দলের কৌশল, গোটা অধিবেশনে কংগ্রেস ও বিজেপি— উভয়ের সঙ্গেই সমদূরত্ব রেখে চলবে তৃণমূল। বিষয়ভিত্তিক ভাবে কেন্দ্রের বিরোধিতা অবশ্যই করা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

শ্যাম আর কুল, উভয়ের সঙ্গেই সমদূরত্ব রেখে চলার জন্য দলকে নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য শুরু হয়েছে সংসদের অধিবেশন। দলের কৌশল, গোটা অধিবেশনে কংগ্রেস ও বিজেপি— উভয়ের সঙ্গেই সমদূরত্ব রেখে চলবে তৃণমূল। বিষয়ভিত্তিক ভাবে কেন্দ্রের বিরোধিতা অবশ্যই করা হবে। তবে কংগ্রেসের ‘উপগ্রহ’ হিসেবে নয়। দলের কোর কমিটির বৈঠকে শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি বুঝে সংসদে দরকারে এক পা এগিয়ে, দু’পা পিছিয়ে চলতে হবে।

ভারসাম্যের খেলাটা শুরুও হয়ে গিয়েছে। রাহুল গাঁধী কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পরে সীতারাম ইয়েচুরি, অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদব, এ কে স্ট্যালিনের মতো অনেক বিরোধী নেতাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তালিকায় নেই মমতা বা তাঁর দলের কোনও নেতা-নেত্রীর নাম। অথচ মমতা গত সপ্তাহে সনিয়া গাঁধীর জন্মদিনে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এই সূত্রে উঠে আসছে রাহুল-মমতার মতবিরোধের প্রসঙ্গ।

বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করতে কংগ্রেসের ডাকে বারবারই দিল্লি গিয়েছেন মমতা। তাঁর প্রস্তাব ছিল, যেখানে যার শক্তি বেশি তাকে সামনে রেখে বিরোধী সমাবেশ হোক দেশের নানা প্রান্তে ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে। তা হয়নি। উল্টে বিরোধী ঐক্য শিকেয় তুলে রাহুলকে সামনে রেখে দলের প্রসার ঘটাতে তৎপর হয়েছে কংগ্রেস। রাহুল সভাপতি হওয়ার পরে তারা এখন বাড়তি অক্সিজেন নিয়ে ঝাঁপাতে চায় বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই কাজে সংসদে তারা পাশে চাইবে তৃণমূলের মতো দলকে। কিন্তু মমতা এ বার ‘হিসেবি’।

বিজেপি এ দিকে আক্রমণের মাত্রা বাড়াচ্ছে মমতার বিরুদ্ধে। নিশানা করা হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৎপরতা বাড়ছে সিবিআইয়ের। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিন খারিজ করতে তারা উঠে পড়ে লেগেছে। মমতাকে তাই এগোতে হচ্ছে ভারসাম্য রেখে। লোকসভায় সুদীপ দলের নেতা। কিন্তু যে রকম চাপের মধ্যে রয়েছেন তিনি, তাতে লোকসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। দলকে তাই আলটপকা মন্তব্য না করে সতর্ক ভাবে চলার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। পরশু দিল্লিতে বিরোধীদের বৈঠকের পরে নেত্রীকে না জানিয়েই দলের তরফে টুইট করা হয়, সরকার-বিরোধিতার রূপরেখা নিয়ে। মমতা অসন্তুষ্ট হয়েছেন এতে। সামনে একাধিক উপনির্বাচন হবে পশ্চিমবঙ্গে। আগামী বছরের প্রথমার্ধে আছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। দিল্লিতে সমন্বয় করতে গিয়ে রাজ্যে খেসারত দিতে রাজি নন মমতা। বরং তৃণমূল-বিরোধী ভোট যত ভাগ হবে, ততই সুবিধা তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE