জ্বলছে পুলগাঁওয়ের গোলাবারুদের গুদাম।
রাত তখন প্রায় দেড়টা। হঠাৎ প্রবল শব্দ আর ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে গেল অগ্রগাঁও গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ সাভারকরের। মা ও স্ত্রীকে নিয়ে ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারাও তখন থরথর করে কাঁপছেন। প্রবীণ গ্রামবাসীরা অবশ্য অনেকে অবশ্য আঁচ করেছিলেন, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ গোলাবারুদের ঘাঁটিতে ফের আগুন লেগেছে। মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধা জেলায় পুলগাঁও ঘাঁটির যে অগ্নিকাণ্ডে বলির সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৬। তাঁদের মধ্যে দু’জন সেনা অফিসার।
পুলগাঁওয়ে ৭ হাজার একরের ঘাঁটিটি সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ মজুত করার সবচেয়ে ব়়ড় গুদাম। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, আজ রাত দেড়টা নাগাদ একটি শেডে আগুন লাগে। সেনা অফিসারদের মতে, ওই শে়ডে যে গোলাবারুদ ছিল তাতে নিমেষে আগুন ধরে যায়।
আগুন লাগার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নেমে পড়ে সেনা ও দমকলের বিশাল বাহিনী। ফলে আগুন শেডের বাইরে ছড়াতে পারেনি বলে দাবি সেনার। দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল রণধীর পওয়ার, ঘাঁটির মুখ্য নিরাপত্তা অফিসার মেজর এম মনোজ এবং সেনা ও দমকলের মোট ১৪ জন কর্মী। গুরুতর আহত অবস্থায় ওয়ার্ধার হাসপাতালে ভর্তি ৯ জন সেনা ও ৬ জন দমকল কর্মী।
আহত সেনাদের দেখতে হাসপাতালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর এবং সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ। ছবি: পিটিআই।
এর আগে ১৯৮৯ ও ১৯৯৫ সালে এই ঘাঁটিতে আগুন লেগেছিল। কিন্তু তখন কোনও প্রাণহানি হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুলগাঁও যান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর ও সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ। পরে পর্রীকর বলেন, ‘‘প্রাণহানি সব সময়েই গোলাবারুদ নষ্টের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকর।’’
কিন্তু বার বার এই ঘাঁটিতে আগুন লাগা নিয়ে চিন্তায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কারণ, এই ঘাঁটিতে থাকে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র। এখনও অন্তর্ঘাতের কথা বলতে রাজি নন কেউই। নিয়ম মেনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সেনা।
এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেয় প্রশাসন। সেনা অবশ্য জানাচ্ছে, আগুন ঘাঁটির বাইরে ছড়ায়নি। তাই গ্রামবাসীদের ক্ষতির সম্ভাবনাই ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy