পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদ সামলেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। এ বার তিনি দেশের উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের বাজি। ছবি: পিটিআই।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী হচ্ছেন গোপালকৃষ্ণ গাঁধী। ১৮ দলের বৈঠকে মঙ্গলবার তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। গোপালকৃষ্ণ গাঁধী নিজেও প্রার্থী হতে রাজি বলে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী জানিয়েছেন। মহাত্মা গাঁধীর নাতি তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করার প্রস্তাব তৃণমূলের তরফে পেশ করা হয়েছিল। ওই একটি মাত্র নাম নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এবং সর্বসম্মতিক্রমে তাতে সিলমোহর পড়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের সময়েও গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর নাম উঠে এসেছিল। তবে বিজেপি তথা এনডিএ নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা পর্যন্ত বিরোধীরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে চায়নি। বিজেপি অবশেষে দলিত নেতা রামনাথ কোবিন্দকে প্রার্থী করে। ফলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকেও দলিত মুখ মীরা কুমারকে বেছে নিতে হয়। গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে প্রার্থী করার কথা আর ভাবা হয়নি।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিন্তু কৌশল বদল করল বিরোধীর দলগুলি। শাসক জোটের প্রার্থী ঘোষণার জন্য আর অপেক্ষা করলেন না তাঁরা। বিজেপি নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার আগেই বিরোধীদের তরফ থেকে মহাত্মা গাঁধীর নাতির নাম উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হল।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছতে বৈঠকে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর পৌরোহিত্যেই হল বৈঠক। ছিলেন দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং এইচ ডি দেবেগৌড়া। ছিলেন জেডি(ইউ), তৃণমূল, বসপা, সপা, এনসিপি, সিপিএম, সিপিআই-সহ মোট ১৮টি দলের প্রতিনিধি। ছবি: পিটিআই।
গোপালকৃষ্ণকে প্রার্থী করে নীতীশ কুমারকে কংগ্রেস কিছুটা প্যাঁচে ফেলে দিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর নাম যখন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল, সে সময় নীতীশ কুমার জানিয়েছিলেন, ওই নামে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু বিজেপি রামনাথ কোবিন্দের নাম ঘোষণা করার পর নীতীশ জানিয়ে দেন, কোবিন্দকে সমর্থন করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় তাঁর নেই। বিহারে শাসক জোটের অন্য দুই শরিক আরজেডি এবং কংগ্রেস বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়। নীতীশের তীব্র সমালোচনা শুরু করে তারা। কিন্তু নীতীশ ঘনিষ্ঠরা জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা নিয়ে কংগ্রেস যদি টালবাহানা না করত, যদি আগেই গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হত, তা হলে জেডি (ইউ) তাঁকেই সমর্থন করত।
আরও পড়ুন: নীতীশকে সমর্থনের প্রস্তাব বিজেপির
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ১৮টি বিরোধী দলের যে বৈঠক হয়েছে, তাতে নীতীশ যোগ দেননি। তাঁর দলের প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন সভাপতি শরদ যাদব বৈঠকে ছিলেন। গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর নামে জেডি (ইউ)-র সমর্থন রয়েছে বলে শরদ যাদব বৈঠকে জানিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু শরদ যাদবের কথা যে জেডি (ইউ)-তে চূড়ান্ত নয়, সে আগেও অনেক বারই দেখা গিয়েছে। নীতীশ কুমার নিজে গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে নিয়ে মুখ না খোলা পর্যন্ত জেডি (ইউ)-এর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলেই রাজনৈতিক শিবির মনে করছে। তবে নীতীশ রাষ্ট্রপতি পদের জন্য গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর নামে যে ভাবে নিজের সমর্থন জানিয়েছিলেন, তাতে উপরাষ্ট্রপতি পদে গোপালকৃষ্ণের বিরোধিতা করা নীতীশের পক্ষে কঠিন হবে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy