লকার থেকে বেপাত্তা রুবি রায়ের সেই ‘উত্তরপত্র’। গত দু’দিন ধরে খুঁজেও বিষুণ রায় কলেজের ওই ছাত্রীর উত্তরপত্রের কোনও হদিশ পায়নি পটনা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। এখন উত্তরপত্রের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন সিট।
আসলে উত্তরপত্রের ফরেনসিক পরীক্ষা করাতে চাইছিলেন তাঁরা। সে কারণেই দরকার ছিল ওই উত্তরপত্রগুলির। এর ফলে তদন্তের মোড় ঘুরেও যেতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। নতুন করে কয়েক জনকে গ্রেফতার করার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে পরীক্ষা কেলেঙ্কারির বেশ কয়েকটি নতুন বিষয়ের খোঁজ পেয়েছে সিট।
পটনা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা মনে করছেন, প্রমাণ লোপাটের জন্যই রুবি রায়ের উত্তরপত্র সরানো হয়েছে। তাঁদের দাবি, বিষুণ রায় কলেজের অধ্যক্ষ বাচ্চাপ্রসাদের সঙ্গে বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান লালকেশ্বরের চুক্তি হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায় উপর থেকে নীচ পর্যন্ত, সমস্ত স্তরের এক শ্রেণির কর্মী যুক্ত রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই কর্মীদের সাহায্যেই উত্তরপত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভবনা রয়েছে। তদন্তকারীরা উত্তরপত্রের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের গ্রেফতার করে জেরা করতে চাইছেন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, শিক্ষা দফতরের বৈশালী জেলা অফিসে বাচ্চাবাবুর যথেষ্ঠ প্রভাব ছিল। বাচ্চাবাবুর অফিস থেকে বৈশালীর আরএম কলেজের শিলমোহর মারা দু’ডজনের বেশি ফাঁকা উত্তরপত্র পাওয়া গিয়েছে। আরএম কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা পরিদর্শককে জেরা করবেন গোয়েন্দারা। কী ভাবে বোর্ডের শিলমোহর দেওয়া ওই ফাঁকা উত্তরপত্র বাচ্চাবাবুর কাছে গেল তা জানতে চাইবেন তাঁরা।
সূত্রের দাবি, বাচ্চাবাবুর কলেজে বসেই উত্তরপত্রগুলি লেখা হতো। তারপরে তা আসল উত্তরপত্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতো। এরই পাশাপাশি, বিষুণ রায় কলেজের পরীক্ষার সেন্টার প্রথমে হাজিপুরের গুরুকুল পীঠ কলেজে করা হয়েছিল। পরে তা পাল্টে হাজিপুরের এসডিও রোডের জি এ ইন্টার কলেজে করা হয়। কেন এই পরিবর্তন, তা নিয়ে কোনও লিখিত সরকারি নির্দেশ সিট পায়নি। সিটের তদন্তকারীরা গুরুকুলের অধ্যক্ষ এবং পরীক্ষা পরিদর্শকের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলবেন। কার নির্দেশে সেন্টার পাল্টানো হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।
এরই মধ্যে রুবি রায়কে গ্রেফতার করা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার নেতা জিতনরাম মাঁঝি গ্রেফতারের বিরোধিতা করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। অবিলম্বে রুবির মুক্তি চেয়েছেন তিনি। আরজেডি নেতা রঘুবংশপ্রসাদ সিংহও এ দিন বলেন, ‘‘এই ছাত্রছাত্রীদের কী দোষ? এরা দুর্নীতির শিকার। অভিভাবক ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সমস্ত দোষ। তাঁদেরই গ্রেফতার করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy