Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাকেও সাড়া দেন না, লিখছেন কবিতা

যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব! কবিতা লিখতে লিখতে এমন কোনও ভাবনাই কি ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁর মাথায়? সকলের আগে নিজে থেকেই যখন মাঠে নেমে গা ঘামাতে শুরু করেছিলেন, দলের কর্তারা তখন সেটা ভাল ভাবে নেননি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব! কবিতা লিখতে লিখতে এমন কোনও ভাবনাই কি ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁর মাথায়? সকলের আগে নিজে থেকেই যখন মাঠে নেমে গা ঘামাতে শুরু করেছিলেন, দলের কর্তারা তখন সেটা ভাল ভাবে নেননি। তার পর থেকে সাইডলাইনের ধারে বসে থাকতে হয়েছে তাঁকে। আর এখন যখন লড়াইটা আর তেমন সহজ মনে হচ্ছে না, তখন ডাক এসেছে মাঠে নামার। কী না, ম্যাচ বাঁচাতে হবে! কিন্তু এখন আর মাঠে নেমে ঘাম ঝড়ানোর কোনও ইচ্ছেই নেই তাঁর। সুলতানপুরের বিজেপি সাংসদ বরুণ গাঁধী পড়ে রয়েছেন তাঁর দিল্লির ঠিকানাতেই! রাজনীতির পাশাপাশি কবিতার চর্চাটা ছিলই। আপাতত কবিতা লেখাতেই মন দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে পালালেন পরমানন্দ

কিন্তু বরুণের ভাবনা অন্য। বরুণ-ঘনিষ্ঠ বিজেপি সূত্র বলছে, এত দিন মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখায় তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ যে দলীয় প্রচার থেকে আপাতত দূরেই থাকবেন বলে মনস্থ করেছেন। উত্তরপ্রদেশ নিয়ে কার্যত আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছেন গাঁধী পরিবারের এই নেতা। এমনকী নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা বিধানসভাগুলিতেও প্রচারে যাবেন কি না তা নিয়ে বেশ সংশয় রয়েছে বিজেপি শিবিরে।

অথচ, এই বরুণ গাঁধীই প্রায় এক বছর আগে থেকে উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে রীতিমতো ছক কষে এগোতে শুরু করেছিলেন। চেয়েছিলেন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে উত্তরপ্রদেশে ভোটের ময়দানে নামুক বিজেপি। মা মেনকা গাঁধীও এ নিয়ে তদ্বির করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। নরেন্দ্র মোদী তাতে ক্ষুব্ধ হন। বরুণ তবু মায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র পীলীভীত ও নিজের সুলতানপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে প্রবল ভাবে কাজে নেমে পড়েন। মাঠে নেমে কাজের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় হোর্ডিং বানিয়েও প্রচারে নেমে পড়েন মেনকা-পুত্র। দলের অনুমতি ছাড়াই নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হিসেবে তুলে ধরার এই চেষ্টাকে মোদী, অমিত শাহরা ভাল ভাবে না নিলেও দলের পক্ষ থেকে এক সমীক্ষায় দেখা যায় ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বরুণই সাধারণ মানুষের পছন্দ। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার জন্য বিজেপির উপরে চাপ আসে সঙ্ঘ পরিবারের থেকেও।

আরও পড়ুন: পুরকর্মী ধর্মঘটে নাভিশ্বাস শিলচরের

বিপদের সময়ে দলের ওই গা-বাঁচানো মনোভাবে এমনিতেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বরুণ। ক্ষোভের আঁচ বেড়েছে আরও কিছু কারণে। যেমন, পছন্দের জনা কুড়ি নেতাকে টিকিট দেওয়ার জন্য তদ্বির করেছিলেন বরুণ। দল সেই অনুরোধ রাখেনি। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের প্রথম দু’পর্বে তাঁকে প্রচার থেকে দূরে সরিয়ে রাখে দল। প্রচারের তালিকাতেই রাখা হয়নি তাঁকে। এর পরেই ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ জানিয়ে কার্যত ঘরে বসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বরুণ। এখন তাই তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রচারে ডাক পেয়েও সে ভাবে সাড়া দিচ্ছেন না বরুণ।

বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘বরুণকে তারকা প্রচারকের তকমা দেওয়া হলেও, আদৌ তিনি প্রচারে নামবেন কি না এখনও সে বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেননি। শুনেছি তিনি এখন কবিতা লেখায় ব্যস্ত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Varun Gandhi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE