এক অস্পৃশ্যতা না হয় ঘুচল! কিন্তু অন্য অস্পৃশ্যতা?
সঙ্ঘ-বিজেপির আগ্রাসনের মোকাবিলায় বিরোধী সব শক্তিকে একজোট করার ডাক দিয়েছে সিপিএম। পথ নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে পার্টি কংগ্রেসে শেষ পর্যন্ত একমত হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট। কিন্তু তার পর? বাংলায় আগামী লোকসভা ভোট এবং তার পরবর্তী সময়ে কী হবে সিপিএমের অবস্থান? বাংলায় তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম সব দলই বিজেপির বিরুদ্ধে। এবং সেই তালিকায় তর্কাতীত ভাবে এখন শক্তির বিচারে পয়লা নম্বরে তৃণমূল। এ বার লড়়াই যখন বিজেপিকে ঠেকানোর এবং পার্টি কংগ্রেসও তাতে সিলমোহর দিয়েছে, তা হলে সিপিএম কি তৃণমূল ‘অচ্ছুৎ’ বলে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ থেকে দূরে থাকবে?
মমতা বন্দোপাধ্যায় কয়েক দিন আগেও বলেছেন, সিপিএম দিল্লিতে এক রকম, বাংলায় আর এক রকম! কারাট থেকে বাংলার সূর্যকান্ত মিশ্র, সকলেরই পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের কাজকর্মে বাংলায় বিজেপির জমিই শক্ত হচ্ছে। তাই তৃণমূলের সঙ্গে ভাব করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না! সুর্যবাবুদের যুক্তি, তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যের কথা বলছেন। তৃণমূলকে তাঁরা না ধর্মনিরপেক্ষ মনে করেন, না গণতান্ত্রিক! এই প্রশ্নে কারাটেরও জবাব, ‘‘তৃণমূল সম্পর্কে আমাদের মনোভাব পাল্টে যাবে কেন? তৃণমূল যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বাংলায় এই পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে আবার দেখা যাচ্ছে!’’
কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন থাকছে। লোকসভা ভোটে সারা দেশ থেকে সিপিএম যা আসন পাবে, শুধু বাংলা থেকেই তৃণমূল তার চেয়ে বেশি আসন নিয়ে যাবে— এতে বিশেষ সংশয় নেই কারও। তর্কের খাতিরে লোকসভা ভোটের পরে অ-বিজেপি দলগুলির আসন যদি বিজেপির চেয়ে বেশি হয়, তখন সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সরকার থেকে দূরে রাখতে তৃণমূলের কদরই বেশি হবে। সে ক্ষেত্রে কি তৃণমূল থাকলে সিপিএম ইউপিএ-র মতো প্রচেষ্টায় যাবে না? সেটা করলে তো বিজেপিরই সুবিধা করে দেওয়া হবে!
সিপিএম নেতারা আবার পাল্টা বলছেন, বিজেপি-বিরোধিতায় তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সকলেরই সংশয় আছে। সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব বা প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করার প্রস্তাবে তৃণমূলের সামিল না হওয়াতেই তাদের দোলাচল স্পষ্ট। এখন সিপিএম নেতারা বরং কংগ্রেস-সহ অন্যান্য দলের নেতৃত্বকে সতর্ক করবেন তৃণমূলের কথায় না ভুলতে! বলবেন, তৃণমূলের কাজ যাচাই করতে!
দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল নেত্রী দিল্লি গিয়ে গণতন্ত্রের কথা বলেন আর বাংলায় গণতন্ত্র ধ্বংস করেন! তা ছাড়়া, ভোট নিয়ে কোনও আলোচনা এখনও হয়নি। কী হলে কী হবে, তা নিয়ে এখন থেকে মাথা ঘামিয়ে কী হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy