স্ট্যালিনের মন্তব্যে বিচ্ছিন্নতাবাদ দেখছেন অনেকেই। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণী রাজ্যগুলি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা দেশ গঠন করতে চাইলে তিনি সমর্থন করবেন। মন্তব্য ডিএমকে-র কার্যকরী সভাপতি এম কে স্ট্যালিনের। গোটা দেশেই সমালোচনা শুরু হয়েছে তামিলনাড়ুর প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের। তামিলনাড়ুতেও বিতর্কের জন্ম হয়েছে স্ট্যালিনের এই মন্তব্যকে ঘিরে।
তামিলনাড়ুর ইরোডে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই মন্তব্য করেছেন স্ট্যালিন। শুক্রবার ওই সাংবাদিক সম্মেলনে ‘দ্রাবিড় নাড়ু’ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হন স্ট্যালিন। একটা তত্ত্ব নিয়ে সম্প্রতি খুব চর্চা হচ্ছে, ‘দ্রাবিড় নাড়ু’ গঠনের দাবিতে দক্ষিণী রাজ্যগুলির এক হওয়া উচিত বলে চর্চা হচ্ছে— এ প্রসঙ্গে স্ট্যালিন কী মনে করছেন? প্রশ্ন ছিল এই রকমই। করুণানিধির পুত্র জবাবে বলেন, ‘‘যদি তা হয়, তা হলে তাকে স্বাগত জানানো হবে। আমরা আশা করব তেমন পরিস্থিতিই তৈরি হবে।’’
স্ট্যালিন কোনও নতুন কথা অবশ্য বলেননি। তাঁর দল ডিএমকে জন্মলগ্ন থেকেই দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র ‘দ্রাবিড় নাড়ু’ গঠনের প্রবক্তা। কিন্তু সেই লক্ষ্য থেকে ডিএমকে ৫৫ বছর আগেই সরে এসেছে। ১৯৬২ সালে ভারত-চিন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে যখন দেশ জুড়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া ওঠে, সেই সময়েই দ্রাবিড় নাড়ু গঠনের দাবিকে দলের মূল লক্ষ্য থেকে বাদ দিয়ে দেন ডিএমকে নেতৃত্ব।
কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের পাওনা-গণ্ডা সংক্রান্ত বিষয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি কেন্দ্রকে যে পরিমাণ কর জোগায়, তার নিরিখে কেন্দ্রের কাছ থেকে তারা কম ফেরত পায়— এমনই বক্তব্য এই তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তিন মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভ প্রকাশের পরেই দ্রাবিড় নাড়ু তত্ত্ব আবার চর্চায় এসেছে। আর সে সম্পর্কে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েই স্ট্যালিন সে তত্ত্বকে সমর্থন জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুনে অভিযুক্ত বিজেপি সভাপতি, কংগ্রেসে এমন হয় না: রাহুল গাঁধী
আরও পড়ুন: ‘ওরা জানে, খামোখাই অনাস্থা আনছে’
দক্ষিণের রাজ্যগুলোকে নিয়ে পৃথক দ্রাবিড় নাড়ু গঠনের তত্ত্ব স্বাধীনতার আগেই তুলে ধরেছিলেন পেরিয়ার। পরে ডিএমকে সেই তত্ত্ব নিয়ে এগিয়েছিল। কিন্তু অন্ধ্র, তেলঙ্গানা এবং কর্নাটকে বর্তমানে যে সব দল ক্ষমতায়, সেই টিডিপি, টিআরএস এবং কংগ্রেস কোনও দিনই দ্রাবিড় নাড়ু তত্ত্ব নিয়ে গলা ফাটায়নি। চন্দ্রবাবু, চন্দ্রশেখর এবং সিদ্দারামাইয়া কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুললেও, ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সংক্রান্ত কোনও মন্তব্য তাঁরা করেননি। কিন্তু স্ট্যালিন বলেছেন, তিনি আশা করবেন যে দ্রাবিড় নাড়ু গঠনের পরিস্থিতি তৈরি হবে।
বিতর্কের মুখে পড়ে অবশ্য নিজের মন্তব্য থেকে পিছু হঠেছেন করুণা-পুত্র। তিনি বলেছেন, একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেই তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তিনি দ্রাবিড় নাড়ু গঠনের দাবিতে প্রচারে নামতে চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy