Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিকল্প নীতি ও কর্মসূচির ভিতে বিরোধী জোটের পক্ষে ইয়েচুরি

হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএমের রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করা নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। তার আগে আগামী নির্বাচনে মোদী-বিরোধী জোটের সম্ভাব্য সূত্রের কথা সামনে রাখলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

সীতারাম ইয়েচুরি।

সীতারাম ইয়েচুরি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৯
Share: Save:

হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএমের রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করা নিয়ে দলের মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। তার আগে আগামী নির্বাচনে মোদী-বিরোধী জোটের সম্ভাব্য সূত্রের কথা সামনে রাখলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মতে, কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোট করতে হলে তার ভিত হতে হবে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি। যা তুলে ধরবে বিজেপি-সঙ্ঘের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পাল্টা বিকল্প একটি ভাষ্য। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রাহুল গাঁধীও এই বিকল্প ভাষ্যের কথা বলেছেন।

বিরোধীদের জোটের ভিত হিসেবে ইয়েচুরি যে বিকল্প নীতির কথা বলছেন, তা শুধুই বিকল্প আর্থিক নীতি নয়। বিজেপি-আরএসএসের পাল্টা বিকল্প ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক আদর্শও তুলে ধরতে হবে। নেতা নন। নীতিই হবে সেই জোটের ভিত।

সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রকাশ কারাট শিবির যখন কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকম জোটের বিরুদ্ধে, তখন ইয়েচুরি বিকল্প নীতির ভিত্তিতে বিরোধীদের জোট চাইছেন। বলা বাহুল্য, সেই জোট প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। ইয়েচুরি বোঝাতে চাইছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে স্রেফ নির্বাচনী আঁতাত তিনি চান না। বামেরা বিকল্প নীতি সুপারিশ করবেন। প্রথম ইউপিএ জমানার মতো ‘ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি’ তৈরি হবে। তার ভিত্তিতেই হতে পারে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির জোট।

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে সরাসরি মন্তব্যে না গিয়ে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘সময় এগোলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে ভোট রয়েছে। তার আগে কর্নাটকে ভোট। এ সব হয়ে গেলে স্পষ্ট হবে ছবি।’’ রাহুলের নরম হিন্দুত্বকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান না ইয়েচুরি। তাঁর যুক্তি, ‘‘কংগ্রেস এটা সব সময়েই করে। তবে বিকল্প ভাষ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে আপস হবে না।’’

কী সেই বিকল্প ভাষ্য?

ইয়েচুরি বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে কৃষকদের ক্ষোভ, জিগ্নেশ মেবাণীর নেতৃত্বে দলিতদের আন্দোলন— এগুলোই তো বিকল্প ভাষ্য।’’ তবে সেই বিকল্প ভাষ্য যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে লড়াইয়ে এখনও এঁটে উঠতে পারছে না, তা-ও মানছেন ইয়েচুরি। স্বীকার করছেন, অর্থনীতির খারাপ দশার ফায়দাও বিরোধীরা কুড়োতে পারছে না। কারণ, গুজরাতের ভোটের শেষ দফার প্রচারের মতো নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দল বারবার মেরুকরণের রাজনীতিতে চলে যাচ্ছে। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘রাস্তার মারামারিতে ভদ্রলোকরা কখনও জেতে না। গুজরাতে মোদী পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে এত নীচে নেমেছিলেন যে ভদ্রলোক মনমোহন সিংহও এঁটে উঠতে পারেননি।’’ তবে, ফসলের নায্য দামের দাবিতে, গোরক্ষক বাহিনীর বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ, দলিতদের বিক্ষোভের মতো জঙ্গি আন্দোলন আরও দেখা যাবে বলেও ইয়েচুরির ভবিষ্যৎবাণী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE