তাজ: গোরক্ষনাথে এক অনুষ্ঠানে আদিত্যনাথ। রবিবার। ছবি: পিটিআই
গরুদের খাইয়ে গোরক্ষনাথ মন্দিরে তখন পুজো করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে বাইরে এক ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ঋণ মাফের দাবিতে। তাঁকে কোনও রকমে আটকানো হয়। হোমগার্ডরাও পাকা চাকরির দাবিতে আজ ওই মন্দিরের বাইরে প্রতিবাদ জানান। এই সব দাবিদাওয়া ও প্রত্যাশার চাপের মধ্যে আগামী কালের অযোধ্যা যাত্রা বাতিল করলেন যোগী আদিত্যনাথ। কারণ হিসেবে এক টিভি সাক্ষাৎকারে জানালেন, আগে তিনি সন্তদের সঙ্গে কথা বলে নিতে চান।
দিল্লিতে বিজেপি সূত্রের খবর, আসলে এখনই অযোধ্যা সফর করে হিন্দুত্বের পারদ চড়াতে নিষেধ করা হয়েছে যোগীকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চান না, হিন্দুত্ব নিয়ে বেশি মাতামাতিতে উন্নয়ন পিছনের সারিতে চলে যাক। মুখে যোগী বলছেন, উন্নয়ন হবে সকলের জন্য। জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ হবে না। কিন্তু এখনও সকলের জন্য উন্নয়নের বার্তা দিতে পারেননি তিনি। মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে কৃষি ঋণ মাফের প্রতিশ্রুতিও রাখা যায়নি এখন পর্যন্ত। আজ যিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, তিনি অবশ্য চিকিৎসার জন্য ঋণ নিয়েছেন। তবু মানুষের অসন্তোষ সামলানো ও ভারসাম্য রেখে চলাকেই অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে যোগীকে।
এতে যোগীর অযোধ্যা যাত্রা স্থগিত হলেও তাঁর জমানায় হিন্দুত্ব উস্কে দেওয়ার ঘটনায় ছেদ পড়ছে না।
আরও পড়ুন: হাসিনার সফরের আগে মোদীর মুখে জয় বাংলা
নমুনা এক: গোরক্ষপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগীর সামনেই অযোধ্যার দিগম্বর আখড়ার মহন্ত সুরেশ দাস বলেছেন, ‘‘রামজন্মভূমিতেই মন্দির হবে, মসজিদ নয়। সুপ্রিম কোর্টের মধ্যস্থতায় না হলে কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপির সরকার তো আছেই।’’
নমুনা দুই: ওই অনুষ্ঠানে যোগী সরাসরি মন্দির নিয়ে না বলেও নিজের অবস্থানটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আকবরকে কখনও রাজা মানেননি তুলসীদাস। রামচন্দ্রের জয়ধ্বনি দিতেন তিনি। সিকন্দরকে এক যোগী বলেছিলেন, বিশ্ববিজেতা নয়, ভাগ্যবিধাতা এক জনই।’’
নমুনা তিন: প্রশাসক যোগীর দিশা স্পষ্ট সরকারি ঘোষণাতেও। তাঁর সরকার আজ কৈলাস, মানস সরোবর যাত্রীদের জন্য ১ লক্ষ টাকা অনুদান এবং অযোধ্যা, মথুরা, বারাণসী ও গোরক্ষপুরে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ জোগানোর কথা ঘোষণা করেছে।
নমুনা চার: রোমিও দমন ও বেআইনি কসাইখানা বন্ধের নামে জুলুম চলছে উত্তরপ্রদেশে। পাঁঠা-মুরগি-সহ সব মাংস বিক্রেতা কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করছেন। এক বিধায়ক প্রকাশ্যেই শাসাচ্ছেন, যারা গো-মাতাকে সম্মান করে না, বন্দে মাতরম বলতে গর্ব বোধ করে না, তাদের হাত-পা ভেঙে দেবেন। এত বাড়াবাড়ির ফলে শুরুতেই বিতর্কের মুখে যোগী সরকার। জাতির ভিত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগও তুলছেন অখিলেশ যাদব। এ সব দেখে-শুনেই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বার্তা পাঠিয়েছেন, ধীরে চলো যোগী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy