Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

৮৬ লক্ষ কৃষকের ঋণ মকুব যোগীর

নরেন্দ্র মোদীর ভোট-প্রতিশ্রুতি রক্ষা হল। কথা রাখলেন যোগী আদিত্যনাথ। হইহই করে প্রচারে নামল বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারও। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন উঠে গেল প্রথম দিনেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীর ভোট-প্রতিশ্রুতি রক্ষা হল। কথা রাখলেন যোগী আদিত্যনাথ। হইহই করে প্রচারে নামল বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারও। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন উঠে গেল প্রথম দিনেই।

শপথ নেওয়ার এক পক্ষকাল পরে মন্ত্রিসভার প্রথম সরকারি বৈঠকে রাজ্যের ৮৬.৬৮ লক্ষ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের মার্চের আগে নেওয়া এই ঋণ এ বছরের মার্চ পর্যন্ত যাঁরা মেটাতে পারেননি, এমন কৃষকরাই এর সুবিধা পাবেন। আরও ৭ লক্ষ কৃষকের ঋণ, যেগুলি ‘অনুৎপাদক সম্পদ’ হয়ে গিয়েছে, তা-ও মকুব হবে। সব মিলিয়ে সরকারের বোঝা ৩৬,৩৫৯ কোটি টাকা।

যোগী সরকারের সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, সঙ্ঘ-ভিএইচপি নেতৃত্ব। কিন্তু বিরোধীরা একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছেন। অমিত শাহরা প্রচারে বলছেন, রাজ্যের ২.১৫ কোটি কৃষক এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন। কিন্তু যোগী সরকারের সরকারি বিজ্ঞপ্তিই বলছে, উপকৃত কৃষকের সংখ্যা ৮৬.৬৮ লক্ষ। ক্ষুব্ধ কংগ্রেস-সপার প্রশ্ন, কেন প্রতিশ্রুতি মতো সব কৃষকের ঋণ মকুব করা হল না? ঋণ মকুবের ৩৬ হাজার কোটি টাকা আসবে কোথা থেকে, এই প্রশ্নও উঠেছে।

আরও পড়ুন: ‘ব্র্যান্ড’ হবে সংস্কৃত, মাঠে নেমেছে সঙ্ঘ

এত দিন ধরে খয়রাতির অর্থনীতির বিরোধিতা করেও মোদী শেষ পর্যন্ত কেন জনপ্রিয় রাজনীতির কাছে মাথা নোয়ালেন, সে প্রশ্নও উঠছে। দিল্লির যন্তর-মন্তরে কৃষকদের বিক্ষোভ দেখে আজই মাদ্রাজ হাইকোর্ট তামিলনাড়ু সরকারকে বলেছে, সব কৃষি ঋণ মাফ করতে। এই সব কিছুকে হাতিয়ার করেই আসরে নামছে বিরোধীরা। গোটা দেশে কৃষকদের ঋণ মকুবের দাবি নিয়ে কাল থেকে সংসদে সরব হবে তারা।

সপা নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেন, ‘‘পুরো ঋণ মকুবের কথা ছিল। কোনও সীমা বেঁধে দেওয়া নয়। এ ভাবে কৃষকদের ধোঁকা দিল সরকার।’’ কংগ্রেসের বক্তব্য, এক লক্ষ টাকার বেশি ঋণ নিলে তা মাফ হবে না। তাই ২ কোটির বেশি ছোট ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে মাত্র ৮৬.৬৮ লক্ষ এই সুবিধা পাচ্ছেন। আর শস্য ঋণ মকুব হলেও মেয়াদি ঋণ মকুব হচ্ছে না।

সরকার জানিয়েছে, ঋণ মকুবের টাকা জোগাড়ে ‘কৃষক সুরাহা বন্ড’ ছাড়া হবে। ইতিমধ্যেই কসাইখানা বন্ধের জেরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ও কমেছে। তার উপর কৃষি-ঋণ মকুবের ভোট-প্রতিশ্রুতি। সব মিলিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নতুন সরকারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE