কম করে চার জন। স্যুট তৈরি করে রেখেছিলেন শপথের ডাক এলে সেজেগুজে যেতে হবে তো! সে সব স্যুট কাজেই এল না। শিকে ছিঁড়ল যাঁর ভাগ্যে, স্যুটের বালাই নেই তাঁর। আগাগোড়া গেরুয়া। ফ্যাশন বলতে একটি দামি সানগ্লাস।
ছ’দিন ধরে চলছিল দৌড়। আজ এ এগিয়ে, তো কাল ও। শেষ ল্যাপে দৌড়টা যেন গতি পায় আরও। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বদলে যাচ্ছে নাম। কাল রাত পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন মনোজ সিন্হা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মোদীর সঙ্গে তুই-তোকারির সম্পর্ক। প্রশাসক হিসেবেও সফল হতে পারতেন। আজ ভোর ছ’টা থেকেই তিনি বারাণসীতে ব্যস্ত ছিলেন কালভৈরব, সঙ্কটমোচন ও বিশ্বনাথ মন্দির দর্শনে। পিছু পিছু সংবাদমাধ্যম।
দিল্লিতেও তখন প্রবল ছোটাছুটি। কেশবপ্রসাদ মৌর্য লেগে রয়েছেন। লখনউয়ের পথে নামিয়ে দিয়েছেন সমর্থকদের। যোগী আদিত্যনাথের সমর্থকরাও হল্লা করছে। বাড়ছে আরএসএসের চাপও। এ দিকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহকে যেতে হবে উত্তরাখণ্ডে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথে। জাত-পাতের রেষারেষিতে উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে কাউকে মুখ করা যায়নি। শেষ বাজারে সেই আঁচই পোহাতে হল মোদী-অমিতকে।
আরও পড়ুন: স্যুট বুট নয় গেরুয়া পথ
এক সঙ্ঘ নেতা বললেন, ছাত্রজীবনে মনোজ তো সঙ্ঘেরই ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁকে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী করা যায়? সব রাজ্যে এখন সঙ্ঘের লোক আসছে, উত্তরপ্রদেশে নয় কেন? অতএব?
উঠে এল যোগীর নাম। দিল্লিতে মোদী, উত্তরপ্রদেশে যোগী। হিন্দুত্বের মুখ দিয়েই হোক উন্নয়ন। যোগী একটি সমান্তরাল হিন্দু গোষ্ঠী। গোরক্ষপুরে নিজের সাম্রাজ্য। জন্মসূত্রে রাজপুত। এখন মহন্ত। সঙ্ঘের তত পছন্দ নয়। বরং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কিছুটা কাছাকাছি। তাতে কী? হিন্দু মুখ তো!
দিল্লিতে ডাক পড়ল যোগীর। পৌঁছে দেখেন অমিত পাড়ি দিয়েছেন দেহরাদূনে। বিশেষ বিমানে ফের যোগীকে সঙ্গে নিয়ে মৌর্য, ওম মাথুর, সুনীল বনশলরা গেলেন লখনউ। মনোজকে বলা হল, মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন না তা ঘোষণা করে ফিরুন দিল্লিতে।
শেষ ভরসা অবশ্য সেই জাত-পাত-ধর্মের অঙ্কই। উত্তরাখণ্ডে শপথ নিলেন ৪ ব্রাহ্মণ, ২ ঠাকুর ও ১ দলিত। উত্তরপ্রদেশেও ভারসাম্যের সূত্র মেনে উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন দু’জন। দীনেশ শর্মা উচ্চবর্ণ। মৌর্য ওবিসি। নজর দলিত আবেগেও। শপথ কাল মায়াবতীর সাজানো কাঁসিরাম উপবনে। সূচনা মোদী-যোগী রসায়নের। এই রসায়নই কি লোকসভার বৈতরণী পার করবে?
বিজেপির এক নেতার কথায়, উত্তরপ্রদেশে রাশ মোদীর হাতে। তাঁর সচিব এখন লখনউয়ে। আমলাতন্ত্র পিএমও-র আওতায়। গায়ত্রী প্রজাপতি গ্রেফতার তো সে ভাবেই হল। মোদী আজ ফের বলেছেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ শুধু স্লোগান নয়। কাজে তা করে দেখাবেন। উত্তরপ্রদেশের ভোট নয়া ভারতের সূচনা করেছে।’ সেই ভারতের প্রথম ‘মেগা ইভেন্ট’-এ ডাকা হচ্ছে ১১ জন মুখ্যমন্ত্রীকে। মেহবুবা মুফতিকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy