শহরের নানা এলাকায় চোখে পড়ছে এমন দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র।
উত্সবের মধ্যেই শহর আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। বহু এলাকায় রবিবার সকালে সাফাই না হওয়ায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারও বাড়ির সামনে বা দোকানের কাছে আবর্জনা কয়েকদিন ধরে পড়ে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। পুর এলাকার চম্পাসারি বাজার, প্রধাননগরের নিবেদিতা রোড, নিয়ন্ত্রিত বাজার, মাল্লাগুড়ি, শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন লাগোয়া বাস টার্মিনাস এলাকা, আশিঘর এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে কয়েক দিন ধরে জমে থাকা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখে গিয়েছে। এমনকী শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ের সামনে আবর্জনার স্তুপ পড়ে ছিল। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, রবিবার তো বটেই শনিবারও অনেক জায়গায় ময়লা পরিষ্কার হয়নি। দু-তিনদিনের আবর্জনা জমে, পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে।
শিলিগুড়ি পুর কমিশনার তাঁর মোাবইল ফোনটি বন্ধ রাখায় বাসিন্দাদের অনেকেই সমস্যার কথা জানাতে তাকে ফোন করে এ দিন পাননি বলে অভিযোগ। পুরসভার সচিব সপ্তর্ষি নাগ বলেন, “সাফাইয়ের মত জরুরি পরিষেবা বন্ধ থাকার কথা নয়। কেন সাফাই হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখব। সাফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।” পুরসভার সাফাই বিভাগের এক আধিকারিক দাবি করেন, দু’একজন সাফাই কর্মী ছুটিতে থাকলেও বাকিদের ওই সমস্ত এলাকায় সাফাই করার কথা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যেখানে জঞ্জাল পরিষ্কারের উপরে জোর দিচ্ছে, সেখানে এভাবে শহরে সাফাইয়ের কাজে গাফিলতি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন বাসিন্দারা।
শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারে রবিবার বেচা কেনা বন্ধ থাকে। সেখানে রাস্তার উপরে এ দিন পচা বাঁধাকপি, বিভিন্ন সব্জি, পচা আলু পেঁয়াজের বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বাজারের তিন নম্বর রাস্তাতেও দেখা গিয়েছে একই দৃশ্য। বাজারের এক ব্যবসায়ী রাজু প্রসাদ বলেন, “পুরসভা কর আদায় করার সময় কোনও ছাড় দেয় না। অথচ রোজকার আবর্জনা নিয়মিত সাফ করে না তারা। ময়লা পড়ে থেকে গন্ধ ছড়ায়। অনেক সময় বাধ্য হয়ে নিজেদেরই ময়লা সাফ করতে হয়।” চম্পাসারিতেও সব্জি বাজারের একই হাল। বাজারের মধ্যেই ডাঁই করা রয়েছে সব্জি-সহ অন্য আবর্জনার স্তুপ। বাজার করতে আসা বাঘাযতীন কলোনির বাসিন্দা অনিল রায় বলেন, “রোজই বাজার করতে গিয়ে ময়লা পাড়িয়ে যেতে হয়। আগে নিয়মিত পরিষ্কার করা হলেও এখন সাফাই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। তাই ইতস্তত আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায় হামেশাই।”
আশিঘর মোড় থেকে রবীন্দ্রনগর মেন রোডের দিকে কিছুটা এগোলেই একাধিক জায়গায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ-সহ বাড়ির ময়লা, আবর্জনা জমা করে রাখা আছে স্তূপাকারে। সামনেই থাকা একটি চায়ের দোকানের মালিক বিশু সরকার জানান, “মাঝে মধ্যেই পুরসভার ময়লার গাড়ি আসে না। ফলে এলাকার অনেকেই বাড়ির আবর্জনা রাস্তার ধারে ফাঁকা জায়গায় ফেলে যান। কয়েকদিন জমা হলে পরে জঞ্জাল অপসারণের ট্রাক গিয়ে আবর্জনা তোলে। কয়েকদিন ধরে ট্রাকের দেখা নেই, তাই আবর্জনাও তোলা হয়নি।” হিলকার্ট রোডের সেবক মোড়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের ঠিক সামনে আবর্জনার স্তুপ জমা করা ছিল রবিবার সকালে। জঞ্জালের পরিমাণ এতটাই বেশি যে সেটাকে পাশ কাটিয়ে যেতে হচ্ছে পথচারীদের। দলের জেলা কমিটির অন্যতম নেতা কৃষ্ণ পাল বলেন, “সাফাই তো নিয়মিত করাই হচ্ছে। কেউ বা কারা অপপ্রচার করছেন। এলাকার একটি পুজো মণ্ডপ খোলা হচ্ছে বলে আবর্জনা রয়েছে। ওই কাজ শেষ হলেই জায়গা পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।” এলাকার এক ব্যবসায়ী অবশ্য বলেন, “দিনের পর দিন এ ভাবেই চলছে। অথচ শাসক দলের দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এমনভাবে পড়ে থাকছে জঞ্জাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy