Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নতুন উপসর্গ ডায়েরিয়া, স্যালাইন চলছে রামুর

দু’দিনে আট বোতল স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। বেবি ফুড ও আখের রসও খানিক খেয়েছে। এক-দু’বার উঠেও দাঁড়িয়েছে। তবুও সঙ্কট কাটেনি ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানায় চিকিত্‌সাধীন অসুস্থ হস্তিশাবক রামুর। ফুসফুসের সংক্রমণের পাশাপাশি, শারীরিক দুর্বলতা ছিলই। নতুন করে দেখা দিয়েছে ডায়েরিয়ার উপসর্গ। ফলে, রামুকে নিয়ে প্রাণী চিকিত্‌সকদের চিন্তা আরও বেড়েছে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার দুই সরকারি প্রাণী চিকিত্‌সক অরুণাংশু প্রতিহার ও সজল দত্ত’র নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা রামুর উপর তীক্ষ্ম নজর রাখছেন।

স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে রামুকে।  ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে রামুকে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

দু’দিনে আট বোতল স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। বেবি ফুড ও আখের রসও খানিক খেয়েছে। এক-দু’বার উঠেও দাঁড়িয়েছে। তবুও সঙ্কট কাটেনি ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানায় চিকিত্‌সাধীন অসুস্থ হস্তিশাবক রামুর। ফুসফুসের সংক্রমণের পাশাপাশি, শারীরিক দুর্বলতা ছিলই। নতুন করে দেখা দিয়েছে ডায়েরিয়ার উপসর্গ। ফলে, রামুকে নিয়ে প্রাণী চিকিত্‌সকদের চিন্তা আরও বেড়েছে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার দুই সরকারি প্রাণী চিকিত্‌সক অরুণাংশু প্রতিহার ও সজল দত্ত’র নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা রামুর উপর তীক্ষ্ম নজর রাখছেন। প্রাণী চিকিত্‌সকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সদ্যোজাত শাবক হাতির জন্য মাতৃদুগ্ধই অপরিহার্য। এখনও বাইরের খাবার বা তন্তুজাতীয় খাবার হজম করার ক্ষমতা নেই এই হস্তিশাবকের। ফলে, নানা

উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।

গোয়ালতোড়ের জঙ্গলে অসুস্থ হয়ে পড়া হস্তিশাবকটিকে বৃহস্পতিবার সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের মিনি চিড়িয়াখানায়। মিনি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ শাবকটির নাম রেখেছেন ‘রামু’। চিড়িয়াখানার একটি ঘরে রামুর চিকিত্‌সা চলছে।

বৃহস্পতিবার চিকিত্‌সায় কিছুটা সাড়া দিয়েছিল রামু। কিন্তু রাতের দিকে তার ডায়েরিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। শুরু হয় শ্বাসকষ্টও। ইনজেকশন দেওয়ার পরে রাত তিনটে নাগাদ ঘুমোয় রামু। শুক্রবার দিনভর মেঝেতে খড়ের বিছানায় শুয়েছিল দলছুট শাবকটি। তার মধ্যেই সকালে চিড়িয়াখানার কর্মী সাহেবরাম মুর্মু, মিঠু মাহাতোরা রামুকে বোতলে করে দু’লিটার আখের রস ও এক লিটার তরল বেবি ফুড খাওয়ান। শুয়েই কিছুটা খাবার খায় রামু। স্যালাইনও দেওয়া হয় তাকে। তারপর বিকেল পর্যন্ত রামু ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়। বিকেল ৩ টে নাগাদ ঘুম থেকে ওঠার পরে রামু নিজেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। তারপর দাঁড়িয়েই চিড়িয়াখানা কর্মীদের এগিয়ে দেওয়া ফিডিং বোতল থেকে তরল বেবিফুড ও আখের রসও খায় সে। ঘন্টা খানেক চিড়িয়াখানার ঘরে এদিক-সেদিক ঘুরেও বেড়ায় রামু। কিন্তু এক সময় ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ে। রামুর ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাকে দেওয়া হয় ইনজেকশন। ফের রামুকে স্যালাইন দেওয়া শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রামুকে দেওয়া হয়েছিল চার বোতল স্যালাইন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত দেওয়া হয় আরও চার বোতল স্যালাইন।

এ দিন দেখা যায় রামু জলের মতো দুর্গন্ধযুক্ত বিষ্ঠাত্যাগ করছে। রামুর ডায়ারিয়া হওয়া নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে নারাজ প্রাণী চিকিত্‌সকেরা। ঝাড়গ্রামের প্রাণী চিকিত্‌সক অরুণাংশু প্রতিহার বলেন, “আমরা হাল ছাড়ছি না। শাবকটিকে সুস্থ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।” ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও বিজয় সালিমঠ-ও একই কথা বলছেন।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত ছোট সদ্যোজাত হস্তিশাবককে সুস্থ করে তোলাটা রীতিমতো কঠিন কাজ। ফলে, রামুকে নিয়ে প্রাণী চিকিত্‌সকদের পাশাপাশি, বন দফতরেরও দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jhargram elephant diarrhea ramu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE