Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Science

পৃথিবীতে এক দিন আর কোনও গ্রহণই হবে না!

চাঁদ আছে বলেই তো যাবতীয় গ্রহণের আলো-আঁধারি। তাই সুর্য আর চন্দ্রগ্রহণ, যা নিয়ে আমাদের এত মাতামাতি, আর ৬৫ কোটি বছর পর পৃথিবী থেকে আর সে সব কিছুই দেখা যাবে না।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।- ফাইল চিত্র।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।- ফাইল চিত্র।

সুজয় চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ১০:০০
Share: Save:

এক দিন আসবে, যখন পৃথিবী থেকে আর দেখা যাবে না সূর্যগ্রহণ। না, পূর্ণগ্রাস, খণ্ডগ্রাস, বলয় গ্রাস বা সংকর গ্রাস, কোনওটাই নয়। চাঁদ দিয়ে সূর্যের মুখ ঢাকা-চাপা দেওয়া আর সম্ভব হবে না। মুখ লুকোতে পারবে না চাঁদও। তাই সে দিন চন্দ্রগ্রহণও আর দেখা যাবে না আমাদের এই গ্রহ থেকে।

সে দিন কোনও গ্রহণকেই আর ‘গ্রহণ’ করা সম্ভব হবে না পৃথিবীর!

কারণ চাঁদ যে আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে দূরে। উত্তরোত্তর। বছরে হাতের নখ যতটা বাড়ে, ফি বছর আমাদের ছেড়ে ততটাই দূরে চলে যাচ্ছে চাঁদ। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে সূর্যের আরও কাছাকাছি। চাঁদ আছে বলেই তো যাবতীয় গ্রহণের আলো-আঁধারি। তাই সূর্য আর চন্দ্রগ্রহণ, যা নিয়ে আমাদের এত মাতামাতি, আর ৬৫ কোটি বছর পর পৃথিবী থেকে আর সে সব কিছুই দেখা যাবে না।

তার ফলে, পৃথিবী যে লাট্টুর মতো নিজের চার দিকে ঘুরছে, তার ওপর চাঁদের ‘খবরদারি’ কমে যাবে। কমে যাবে পৃথিবীর লাট্টুর গতি। আমাদের পার্থিব দিন আরও বড় হয়ে যাবে, ২৪ ঘণ্টার চেয়ে। চাঁদ অনেক অনেক দূরে চলে যাওয়ার ফলে আজ থেকে ৬৫ কোটি বছর পর পার্থিব দিন হবে ২৭ ঘণ্টার! এখনকার চেয়ে ৩ ঘণ্টা বেশি। বছরে দিনের সংখ্যাও আর ৩৬৫ থাকবে না। ঝুপ্ করে তা কমে যাবে অনেকটাই।

সময় যত গড়াবে, যত বেড়ে যাবে দিনের আয়ু, বেলা দ্রুত পড়ে আসছে বলে আর আক্ষেপ করতে হবে না। বেলা যে কাটতেই চায় না বলে চরম অস্বস্তির দিন ঘনিয়ে আসছে! আর কী হবে? জোয়ার, ভাটার জোরও যাবে কমে। রাত ঢেকে যাবে আরও ঘুটঘুটে অন্ধকারে। এগিয়ে যেতে যেতে এক দিন সূর্যের ভয়ঙ্কর গ্রাসে চলে যাবে আমাদের আদরের চাঁদ। স্বপ্নের চাঁদ। যেন ৪০০ কোটি বছর ধরে তার মুখ ঢাকার ‘বেয়াদপি’র বদলা নেবে আমাদের নক্ষত্রমণ্ডলের ‘রাজা’- সূর্য। চাঁদকে গিলে নিয়ে!

আরও পড়ুন- ‘ঈশ্বরের মন’ পড়তে পেরেছিলেন আইনস্টাইন!


চাঁদ, পৃথিবী, সূর্যের কেরামতি। কখন পূর্ণগ্রাস, কখনই বা বলয় গ্রাস

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেছেন, সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে জন্ম হয়েছিল পৃথিবীর। আর তার একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ গড়ে উঠেছিল আরও ৫০ কোটি বছর পর। আজ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে। সেই সময় চাঁদ অনেক বেশি কাছাকাছি ছিল পৃথিবীর ‘হৃদয়’-এর। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ছিল তখন মাত্র সাড়ে ২২ হাজার কিলোমিটার বা ১৪ হাজার মাইল। একেবারে আমাদের নাগালের মধ্যেই! পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরুর দূরত্ব ১২ হাজার ৪৩০ মাইল। তার চেয়ে মেরেকেটে দেড় হাজার মাইল দূরে ছিল চাঁদ, তার জন্মের সময়ে। আর আজ, সরতে সরতে সেই চাঁদ চলে গিয়েছে পৃথিবী থেকে ৪ লক্ষ ২ হাজার ৩৩৬ কিলোমিটার বা আড়াই লক্ষ মাইল দূরে! মানে, প্রায় ১৮ গুণ বেশি দূরত্বে।

আরও পড়ুন- ওজন আধুলির মতো! পৃথিবীকে পাক মারছে ৬ মহাকাশযান

বছরে হাতের নখ যতটা বাড়ে, চাঁদ সরছে ততটাই!

অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি ল্যাবরেটরির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর বিষ্ণু রেড্ডি বলছেন, ‘‘বছরে আমাদের হাতের নখ যতটা বাড়ে, প্রত্যেক বছরে চাঁদ ঠিক ততটা দূরত্বই সরে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে। সেই দূরত্বটা বছরে ৩.৭৮ সেন্টিমিটার বা ১.৪৮ ইঞ্চি। তার ফলে, জন্মের পর থেকেই পৃথিবী যতটা জোরে লাট্টুর মতো ঘুরছে নিজের চার দিকে (পৃথিবীর আহ্নিক গতি), তা একটু একটু করে কমতে শুরু করেছে।’’

আরও পড়ুন- এ বার সূর্যকে ‘ছুঁতে’ যাচ্ছে মহাকাশযান! ঘোষণা করল নাসা

সহজে মালুম না হলেও, যার জেরে নিজের চার দিকে পাক মারতে ফি বছর ১৪ মাইক্রো সেকেন্ড করে সময় বেশি লাগছে পৃথিবীর। সে জন্যই পৃথিবীর ঘড়িকে আপডেটেড রাখতে ১৮ মাস অন্তর জুড়তে হয় ‘লিপ সেকেন্ড’। অধ্যাপক রেড্ডির বক্তব্য, ৬৫ কোটি বছর পর চাঁদ পৃথিবীর থেকে যে দূরত্বে পৌঁছে যাবে, সেখান থেকে তার পক্ষে আর সূর্যের মুখ ঢাকা সম্ভব হবে না। চাঁদ যে সূর্যের মুখ ঢাকছে, অন্তত পৃথিবী থেকে তা আর দেখা যাবে না। পুরোপুরি বা আংশিক, কোনওটাই নয়।


সূর্যগ্রহণ: যে এলাকায় (আমব্রা) পূর্ণগ্রাস, আর যে এলাকায় (পেনআমব্রা) খণ্ডগ্রাস

জন্মের পর থেকে এখনও পর্যন্ত চাঁদ আমাদের সঙ্গ ছেড়ে অনেকটাই দূরে চলে যাওয়ার ফলে, ইতিমধ্যেই আমাদের গ্রহে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। চাঁদ যত দূরে চলে যাবে, ততই কমতে থাকবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সংখ্যা। সেই সময় খণ্ডগ্রাস আর বলয় গ্রাস সূর্যগ্রহণ বাড়বে। আর থাকবে সংকর গ্রাস। এখন ১৮ মাস অন্তর পৃথিবীর কোথাও না কোথাও হয় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কী হারে কমছে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সংখ্যা?

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মোট চার রকমের সূর্যগ্রহণ দেখা যায় পৃথিবীতে। পূর্ণগ্রাস, খণ্ডগ্রাস, বলয় গ্রাস ও সংকর গ্রাস। এই চার রকমের মধ্যে এখন পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয় মাত্র ২৮ শতাংশ। ৩৫ শতাংশ হয় খণ্ডগ্রাস, ৩২ শতাংশ বলয় গ্রাস। আর মাত্র ৫ শতাংশ হয় সংকর গ্রাস। অথচ, ৪০০ কোটি বছর আগে যখন চাঁদ জন্মাল, তখন পূর্ণগ্রাস হত মোট সূর্যগ্রহণের ৫০ শতাংশেরও কিছু বেশি। কারণ, চাঁদ সেই সময় খুব কাছে ছিল পৃথিবীর। ফলে চাঁদের পক্ষে সূর্যের মুখ পুরোপুরি ঢেকে দেওয়ার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত। তার ছায়াটা অনেক বেশি এলাকা জুড়ে পড়ত পৃথিবীর ওপর। আর ৩০ কোটি বছর পর পূর্ণগ্রাসের হার কমে হবে ১০ শতাংশ। ৫০ কোটি বছর পর তা হবে মাত্র ২ শতাংশ। আর ৬৫ কোটি বছর পর পৃথিবী থেকে আর কোনও ধরনের গ্রহণই দেখা সম্ভব হবে না। গ্রহণের ‘সুধা পান’-এ বঞ্চিত হবে এই ধরিত্রী।

সূর্যগ্রহণে কী ভূমিকা থাকে চাঁদের? দেখুন নাসার ভিডিও।

গ্রহণ হওয়ার জন্য কলকাঠি নাড়ে কে?

আসল ‘নারদ’ হল পৃথিবী আর তার একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের কক্ষপথ। সূর্যের চার পাশে যে পথ ধরে ঘোরে পৃথিবী আর পৃথিবীকে যে পথ ধরে পাক মারে চাঁদ, সেই দু’টি পথই কিন্তু পুরোপুরি বৃত্তাকার নয়। বরং তা কিছুটা চ্যাপ্টা। উপবৃত্তাকার। রাগবি খেলার বলের মতো। তার ফলে পৃথিবী থেকে চাঁদকে কোনও কোনও সময়ে সূর্যের চেয়ে অনেকটা বড় দেখতে লাগে। ফলে, তা সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দিতে পারে। তখন চাঁদের ছায়া পড়ে পৃথিবী জুড়ে। আবার কখনও চাঁদের চেয়ে বড় লাগে সূর্যকে। সেই সময় চাঁদের পক্ষে আর সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেওয়া সম্ভব হয় না। চলার পথে বছরে দু’বার সূর্যের সামনে দিয়ে যেতেই হবে চাঁদকে। সেই সময় চাঁদ, সূর্য আর পৃথিবী একেবারে আক্ষরিক অর্থে সরল রেখায় দাঁড়িয়ে গেলে হয় পূর্ণগ্রাস বা বলয় গ্রাস সূর্যগ্রহণ। আর তা ঠিক সরল রেখা না হলে হয় সূর্যের খণ্ডগ্রাস। আর যেটা হয় সেটা সূর্যের সংকর গ্রাস। মানে, কোথাও যখন দেখা যাচ্ছে পুর্ণগ্রাস, তখনই পৃথিবীর অন্যত্র হচ্ছে বলয় গ্রাস। সূর্যগ্রহণে চাঁদের পিছনে যে অংশটা পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে যায়, তাকে বলে ‘আমব্রা’ (ছায়া)। আর তার দু’পাশের আলো-ছায়া অংশগুলিকে বলা হয় ‘পেনআমব্রা’ (উপচ্ছায়া)।

জোরে ঘোরার দম কমছে পৃথিবীর! দিন বড় হচ্ছে

চাঁদ একটু একটু করে দূরে চলে যাচ্ছে বলেই পার্থিব দিন আগের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে যখন অনেক জোরে লাট্টুর মতো ঘুরতো পৃথিবী, তখন পার্থিব দিন ছিল মাত্র ২৩ হাজার সেকেন্ড বা সাড়ে ৬ ঘণ্টার। ৩০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর লাট্টুর গতি যখন একটু কমল, তখন পার্থিব দিনের আয়ু বেড়ে হয় ৮ ঘণ্টা। ৬২ কোটি বছর আগে পার্থিব দিন ছিল ২২ ঘণ্টার। আজ যেটা দাঁড়িয়েছে ২৪ ঘণ্টাতে। আরও ৬৫ কোটি বছর পর হবে ২৭ ঘণ্টার দিন। অর্থাত্ যত দিন যাবে, এই সময় আরও বাড়তে থাকবে।

চাঁদ কী কী উপকার করেছে, করে চলেছে?

চাঁদ আছে বলেই অনেক বেশি সময় ধরে দিনের আলো দেখতে পেয়েছে পৃথিবী। আর তা প্রাণ সৃষ্টি ও বিকাশের সহায়ক হয়েছে। পৃথিবীর ‘লাট্টু’টা খুব জোরে ঘুরলে দিন বা রাত কোনওটাই খুব বেশি ক্ষণের জন্য স্থায়ী হতে পারতো না। সেই লাট্টুর ঘোরার গতি কমানোর কাজটাই এত দিন ধরে করে গিয়েছে চাঁদ। তার অভিকর্ষ বলের টানে। যেমন কোনও চলমান সাইকেলের চাকায় হাত বা অন্য কিছু ছোঁয়ালে তার ঘোরার গতি কমে যায়। চাঁদ সেই কাজটাই করেছে, করে চলেছে। পৃথিবীর খুব কাছে থাকার সময়ে তো বটেই। এমনকী, পৃথিবীর ‘মায়া’ কাটিয়ে তাকে ছেড়ে দূরে চলে যেতে যেতেও। চাঁদের জন্যই জোয়ার, ভাটা।

নানা ধরনের সূর্যগ্রহণ হয় কেন ? দেখুন ভিডিও

শেষ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ কত বছর পর হবে?

অধ্যাপক বিষ্ণু রেড্ডি বলছেন, ‘‘আজ থেকে আর ঠিক ৫৭ কোটি বছর পর শেষ বারের মতো পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে পৃথিবী থেকে। আর তার আরও ৮ কোটি বছর পর পৃথিবী থেকে দেখা যাবে সূর্যের শেষ সংকর গ্রাস।’’

চাঁদ ‘বাই বাই’ জানাচ্ছে আমাদের!

সে দিন আসছে, যখন আমাদেরও ‘বাই বাই’ জানাতে হবে সব রকমের গ্রহণকে।


৬৫ কোটি বছর পর চাঁদ-বিচ্ছেদের জেরে কক্ষপথে আরও বেশি (সাড়ে ২৪ ডিগ্রি) ঝুঁকে পড়বে পৃথিবী। আক্ষেপে?

চাঁদ বন্ধুই ছিল আমাদের। কারণ, চাঁদই পৃথিবীকে তার কক্ষপথের ওপরে ২২.১ ডিগ্রি ঝুঁকিয়ে রাখতো। যার ফলে, গ্রীষ্মে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে অনেকটাই ঝুঁকে থাকতো। যা ওই গোলার্ধকে উষ্ণতর করে তুলে তার দিনকে টেনে বাড়িয়ে দিত। আর শীতে উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরে ঝুঁকে থাকতো। ফলে, তার দিন ছোট হতো আর তা ঠান্ডা হয়ে যেত। কিন্তু চাঁদ প্রায় নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার পর কক্ষপথে পৃথিবী ঝুঁকে পড়বে আরও বেশি। কৌণিক মানে যা সাড়ে ২৪ ডিগ্রি। দুঃখে, আক্ষেপে!

বন্ধুবিচ্ছেদের দহনজ্বালা!

চাঁদের সঙ্গে ‘বন্ধুবিচ্ছেদ’-এর যন্ত্রণাটা তাই পৃথিবীকে সহ্য করতে হবে তখন সূর্যের গা ঝলসানো তাপে পুড়ে গিয়ে!

‘বন্ধুবিচ্ছেদ’-এর যন্ত্রণাটা তখন পৃথিবীর কাছে সত্যি সত্যিই হয়ে উঠবে দহনজ্বালা!

ছবি, ডায়াগ্রাম ও ভিডিও সৌজন্যে: নাসা ও অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি ল্যাবরেটরি, আমেরিকা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE