ছবি: সংগৃহীত।
নিলামের শুরুতেই কোটি টাকা দামের আনাস এডাথোডিকাকে তুলে নিল টাটার টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রথম রাউন্ডের পর দ্বিতীয় রাউন্ড গড়াতেই সাতাশি লাখের সুব্রত পাল আর পঁচাত্তর লাখের প্রীতম কোটালও বিক্রি হয়ে গেলেন। দুই বঙ্গসন্তানকে কিনে নিল যথাক্রমে জামশেদপুর এফসি এবং দিল্লি ডায়নামোজ এফসি।
আনাসের মতোই তালিকায় থাকা এক কোটি দশ লাখ টাকা দামের আর এক ফুটবলার ইউজেনসন লিংডোকে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি কেনে তা দেখার জন্য তখন মুম্বইয়ের সাগরপাড়ের পাঁচ তারা হোটেলের বলরুমে উত্তেজনা তুঙ্গে। যা প্রত্যাশিত ছিল তাই হল। প্রথম সুযোগেই এটিকে তুলে নিল দেশের অন্যতম সেরা মিডিও-কে। তাঁকে যখন কিনছে কলকাতা, তখনও হলে এসে পৌঁছতে পারেননি লিংডো। ফের অ্যাশলে ওয়েস্টউডের ঘরে ফিরেছেন শুনে উচ্ছ্বসিত দেখাল তাঁকে।
বেঙ্গালুরুতে খেলছেন তিন বছর। আই লিগ, ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন করেছেন দলকে। তাঁর আগে খেলছেন শিলং লাজং, রাংদাজিদে। সুনীল ছেত্রীর মতোই স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের টিমের অপরিহার্য ফুটবলার তিনি। কিন্তু কখনও খেলেননি ফুটবলের মক্কায়। জেতেননি আইএসএল। সেই স্বপ্ন কলকাতার জার্সিতে পূরণ করতে চান তিনি। বলছিলেন, ‘‘কলকাতা দু’বার চ্যাম্পিয়ন আইএসএলে। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও আইএসএল জিতিনি। সেই স্বপ্নটা কলকাতায় এসে পূরণ করতে চাই। কলকাতায় খেলার স্বপ্নটাও পূরণ হবে। ওয়েস্টউড স্যারের কোচিংয়ে খেলছি বেঙ্গালুরুতে। উনি জানেন আমি কোথায় সফল হব।’’ আনাস বিদেশে। তাই তাঁকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এক কোটি দশ লাখ টাকা নিজের দাম রেখেও তিনি যে বিক্রি হবেন নিশ্চিত ছিলেন দাবি করলেন পাহাড়ি ছেলেটি। ‘‘আমার কোনও টেনশন ছিল না। কারণ এর আগে এর চেয়ে বেশি দামেও আমাকে নিয়েছে আইএসএলের ক্লাব পুণে। তবে কলকাতায় খেলতে পারাটা বড় ব্যাপার।’’ বলছিলেন এ দিন আইএসএল নিলামের সবচেয়ে দামি ফুটবলার। আর লিংডোকে কেন এত দাম দিয়ে নিলেন জানাতে গিয়ে এটিকে টিডি অ্যাশলে আর কোচ টেডি শেরিংহ্যাম দু’জনেই বললেন, ‘‘মাঝমাঠে দু’প্রান্তেই খেলতে পারে। সেন্ট্রাল মিডিও হিসাবেও ব্যবহার করা যাবে। এ রকম মিডিও দেশে কম আছে বলেই নেওয়া।’’
মাত্র তিন রাউন্ডের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেলেন নিলামের তালিকায় থাকা সবচেয়ে দামি চার ফুটবলার। দেখা গেল, কলকাতার দুই প্রধানে খেলা ফুটবলারদের চাহিদাই সবার আগে। মেহতাব হোসেন, বিকাশ জাইরু, রাহুল ভেকে, শুভাশিস বসু থেকে বলবন্ত সিংহ তো দ্রুত বিক্রি হয়ে গেলেনই, এমনকী অনিয়মিত বিক্রমজিৎ সিংহ, শৌভিক ঘোষদেরও তুলে নিল বিভিন্ন টিম। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন আইজল এফ সি-র ফুটবলারদের উপর নজর ছিল বেশি। বেঙ্গালুরুর লক্ষ্য ছিল পুরনো টিম ধরে রাখা। কিন্ত টিমের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী এবং তাঁর কোচ আলবার্তো রোকা স্বীকার করলেন, ‘‘লিংডোকে না পাওয়াটা বড় ক্ষতি।’’
এ দিনের নিলামে জন আব্রাহাম থাকলেও তাঁর দলের কোচ আসেননি। বাকি নয় দলের কোচ এসেছিলেন। অভিষেক বচ্চন বসেছিলেন চেন্নাইয়িনের টেবলে। জন এবং অভিষেক দু’জনেই নিলামে থাকা ফুটবলারদের পাওয়ার জন্য সওয়াল করলেন রীতিমতো। দেখা গেল ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পলকেও। টাটার টিম জামশেদপুর এফসি-র লোগো প্রকাশ করতে এসেছিলেন তিনি। টিমের তিনটি জার্সির ডিজাইনও করছেন তিনি।
নিলামে দেশীয় ফুটবলার কিনতে সবচেয়ে বেশি খরচ করল বেঙ্গালুরু। ছয় কোটি টাকা। সবচেয়ে কম খরচ করল নর্থ ইস্ট, সাড়ে তিন কোটির কিছু বেশি। জনের টিমের দেখানো রাস্তায় হাঁটল গোয়া, পুণে, দিল্লিও। তারা টাকা রেখে দিল ভাল বিদেশির পিছনে খরচ করবে বলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy