বিমানবন্দরে মলিনা। বুধবার। -শঙ্কর নাগ দাস
চব্বিশ ঘণ্টা আগেই ফুটবলমহলকে চমকে দেওয়া জোসে মলিনার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে যে রহস্য রয়েছে, বুধবার শহরে পা রেখে প্রথমেই সেটা সামনে আনলেন এটিকে অধিনায়ক বোরহা ফার্নান্ডেজ।
মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে ফিরতি সেমিফাইনালে কলকাতার স্প্যানিশ কোচ আগের ম্যাচের প্রথম দলের ন’জন ফুটবলার পরিবর্তন করেছিলেন। যা নিয়ে ভারতীয় ফুটবল মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। অথচ তাঁদের কোচের এহেন সিদ্ধান্তে নাকি মোটেই অবাক হননি আটলেটিকো কলকাতার ফুটবলাররা।
কেন? এ দিন দুপুরে দমদম বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর পথে বোরহা জবাবে বললেন, ‘‘কোচ আমাদের সব সময় বলে থাকেন, ওনার কাছে রিজার্ভ বেঞ্চ বলে কিছু নেই। সবাই প্রথম একাদশের প্লেয়ার। স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী উনি যখন খুশি, যাকে খুশি খেলাতে পারেন।’’ এর সঙ্গেই বোরহা যোগ করলেন, ‘‘সে ভাবেই মরসুমের শুরু থেকে কোচ আমাদের তৈরি করেছেন। ওই রকম মানসিকতাই আমাদের মধ্যে গড়ে দিয়েছেন। প্র্যাকটিসেও সবাইকে ঘুরিয়েফিরিয়ে খেলান। তাই যে কোনও পরিস্থিতিতে আমাদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না।’’
বোরহাদের কোচও টিম হোটেলে ফেরার গাড়িতে ওঠার আগে বলে গেলেন, ‘‘আমি বরাবর বলি, আমার টিমের সবাই প্রথম এগারোয় খেলার যোগ্য। আর সেটাই মঙ্গলবার মুম্বইয়ে আমার ছেলেরা প্রমাণ করে দিয়েছে। তাই আরও বেশি ভাল লাগছে। আমি খুব খুশি।’’
জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বোরহা ফার্নান্ডেজ।
আইএসএলের প্রথম বছর থেকে এটিকে-তে খেলছেন বোরহা। এটিকে-র সব সুখ-দুঃখের সঙ্গী এই স্প্যানিশ ফুটবলার। কলকাতা দলকে যেমন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উল্লাসে ভাসতে দেখেছেন, তেমনই গত বছর টিমের সেমিফাইনাল থেকে নাটকীয় ছিটকে যাওয়ার যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হওয়ারও সাক্ষী বোরহা। হাবাস আর মলিনা— দুই কোচের অধীনেই টিমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন বছর পঁয়ত্রিশের এই ডিফেন্সিভ মিডিও। তবে দুই কোচের মধ্যে তুলনা টানতে রাজি নন তিনি। শুধু বললেন, ‘‘হাবাসের কোচিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এ বারও চ্যাম্পিয়ন হয়ে মলিনার হাতে ট্রফি তুলে দিতে চাই।’’ এ দিন হোটেলে ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে টিভির সামনে বসে পড়েছিল পুরো এটিকে ব্রিগেড। কেরল না দিল্লি— রবিবার কোচির ফাইনালে কে তাদের প্রতিপক্ষ হবে, সেটা চূড়ান্ত জানার জন্য। বোরহা, পস্টিগারা অবশ্য কেরল-দিল্লি ফিরতি সেমিফাইনাল শুরু হওয়ার আগেই বলে দেন, ‘‘ফাইনালে যারাই প্রতিপক্ষ হোক না কেন, আমাদের নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে। সেরাটা দিতে হবে। ফাইনালে জেতা ছাড়া আরও কোনও ভাবনাই নেই এখন আমাদের।’’
মুম্বইয়ে মঙ্গলবার ফাইনালে ওঠার পর ড্রেসিংরুমে ফিরে মলিনা অ্যান্ড কোং সেলিব্রেট করেছেন। কোচকে ঘিরে উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন কলকাতার দেশি-বিদেশি ফুটবলাররা। তবে সেখানেই শেষ। হোটেলে ফেরার পর থেকে সবাই আবার সিরিয়াস। চূড়ান্ত লড়াই যে এখনও বাকি। হয়তো সে জন্যই পস্টিগা এ দিন দমদম বিমানবন্দর ছাড়ার আগে বলে গেলেন, ‘‘গত বার আমি চোট পেয়ে পুরো টুর্নামেন্ট থাকতে পারিনি। এ বার তাই ফাইনালে উঠতে পেরে খুব ভাল লাগছে। তবে এখান থেকে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে কোনও লাভ নেই। তাই রবিবারের ফাইনাল নিয়ে এখন থেকেই পুরো মনঃসংযোগ করছি।’’ টিম হোটেলে ফেরার পর হিউমও বলছিলেন, ‘‘এখন আমাদের ফোকাস ফাইনাল। শুধুই ফাইনাল।’’
জাভি লারা যেমন। কলকাতার এই স্প্যানিশ মিডিওর এ বার পারফরম্যান্সের প্রশংসা করছেন প্রায় সব ফুটবল বিশেষ়জ্ঞই। কিন্তু তিনি সে সব নিয়ে এখন বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাতে রাজি নন। শহরে ফিরে বললেন, ‘‘এর পর চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে কোনও লাভ নেই। তাই আগে ফাইনালটা জিতি, তার পর সব কথা।’’ পিয়েরসন আবার বিশ্বাস করতে চান, এটিকে-ই এ বার চ্যাম্পিয়ন হবেন। ‘‘আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। ফাইনালটার জন্য অপেক্ষা করছি। রবিবার নিজেদের সবটা নিংড়ে দিতে আমরা প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy