Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

ড্র ম্যাচেও স্বপ্ন দেখাল শেরিংহ্যামের এটিকে

শুক্রবারের রাত অবশ্য হতাশ করল হলুদ সাম্রাজ্যকে। উদ্বোধনী দিনে বিনোদনের ককটেলে আপ্লুত হলেও অ্যালেক্স ফার্গুসনের সহকারীর তৈরি করা মশলা তাদের খুশি করতে পারল না। হতাশা আর বিরক্তি নিয়েই বাড়ি ফিরতে হল সাঁইত্রিশ হাজার সমর্থককে।

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

এটিকে ০ • কেরল ব্লাস্টার্স ০

গ্যালারিতে ইংরেজিতে লেখা বিশাল একটা ব্যানার ঝুলছিল। তাতে যা লেখা ছিল তার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, ‘বারো জনকে নিয়ে খেলছ। এ বার অন্তত চ্যাম্পিয়ন হও।’

তার পাশের একটা জায়গায় দেখা গেল আরও একটা ফেস্টুন। সেখানে মালয়ালি ভাষায় লেখা, ‘মঞ্জাপডা’। যার অর্থ ‘ইয়োলো আর্মি’ বা ‘হলুদ সেনা’।

দুটোর মর্মার্থ একই—ঘরের মাঠে খেললে কেরল ব্লাস্টার্স টিমে এগারোজনের সঙ্গে আছে আরও একজন—মাঠ ভর্তি সমর্থক। তারা ট্রফি হাতে চায়।

শুক্রবারের রাত অবশ্য হতাশ করল হলুদ সাম্রাজ্যকে। উদ্বোধনী দিনে বিনোদনের ককটেলে আপ্লুত হলেও অ্যালেক্স ফার্গুসনের সহকারীর তৈরি করা মশলা তাদের খুশি করতে পারল না। হতাশা আর বিরক্তি নিয়েই বাড়ি ফিরতে হল সাঁইত্রিশ হাজার সমর্থককে।

টুনার্মেন্টের সবে শুরু। বেঙ্গালুরু-সহ আট টিমের মাঠে নামা বাকি। তবুও প্রথম দিনের ছবি যদি ভবিষ্যতের কথা বলে তা হলে লিখতেই হচ্ছে এ বারও সচিন তেন্ডুলকরের টিমের ট্রফি জেতার সম্ভবনা কম। আর এটিকে? আবারও ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারেন টেডি শেরিংহ্যাম।

ম্যাচ শেষে কলকাতার ব্রিটিশ কোচের আফশোস দেখে অবাক-ই লাগছিল। টানেল দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলছিলেন, ‘‘টিমের খেলায় আমি খুশি। কিন্তু তিন পয়েন্টটা আমার প্রাপ্য ছিল। রেনেকে (কেরল কোচ) মাঠে বলে এলাম তুমি ভাগ্যবান বেঁচে গেলে।’’ টুনার্মেন্টের প্রথম ম্যাচ জিততে না পারার হতাশায় ডুবে থাকা টেডি আফশোস করতে করতে আরও বললেন, ‘‘এটাই ফুটবল। মানতেই হবে। দু’গোল তো হতেই পারত। একটা টিম হিসাবে খেলেছি আমরা। বের্বাতভকে তো নড়তেই দেয়নি আমার রক্ষণ।’’

এবং কী আশ্চর্য ছত্রিশ ঘণ্টা আগে যিনি নিশ্চিত ছিলেন নতুন ইতিহাস গড়বেন বলে, সেই কেরল কোচ রেনে মিউলিনস্টিনও স্বীকার করে গেলেন, ‘‘গোল খাইনি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।’’

আসলে জিততে না পারলেও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের দুই প্রাক্তন তারকার যুদ্ধে টেডি টপকে গেলেন রেনেকে। মগজাস্ত্রের জোরে। নিখুঁত অঙ্ক করে পাল্টা আক্রমণের ঝড় তুলে। মাঠ ভর্তি করে আসা ‘ইয়েলো আর্মি’-দের একবারের জন্যও চিৎকার করতে দিলেন না জর্ডি মন্টেল, জোস স্যান্টোস ব্র্যাঙ্কো, প্রবীর দাশ, ইউজেনসন লিংডোরা।

আরও পড়ুন: সলমন-ক্যাটরিনার মঞ্চে নায়ক সেই তেন্ডুলকর

প্রতিপক্ষ একেবারে আচেনা হলে যা হয়। নব্বই মিনিট পর্যন্ত তাই মেপে ফুটবল খেলল দু’দলই। দিমিতার বের্বাতভ খেললেও কেরলের রক্ষণের সেরা অস্ত্র ওয়েস্ট ব্রাউন চোটের জন্য মাঠে নামেননি। সেটা সুবিধা করে দিয়েছিল টেডির টিমকে। তা সত্ত্বেও এটিকে-ও নেমেছিল এক স্ট্রাইকার নিয়ে। এ দিন ৪-৫-১ এ টিম নামিয়ে সতর্কতার ফুটবল খেলার দিকেই ঝুঁকলেন এটিকে-কোচ। বরং তাঁর নজর ছিল বুলগেরিয়ার ‘গোল মেশিন’ বের্বাতভ, তাঁর সঙ্গী স্ট্রাইকার ইয়ান হিউমের উপর। ডাবল কভারিংয়ে তাদের অকোজো করে দিল এটিকে। হিউমের হাল এতটাই খারাপ হল যে বিরতির পর তাঁকে বসিয়ে দিতে হল।

ফিটেনেসের প্রশ্নেও রেনে মিউলিনস্টিনের টিমকে প্রতি মিনিটে হারালেন টে়ডি। কলকাতা টিম কোচির এই তীব্র গরমেও কোচের অঙ্ক মেনে খেলল। কেরলের সঙ্গে সেই পার্থক্যটা ধরা পড়ল প্রতি মিনিটে। লং বল নয়, এ বার পাসিং ফুটবলের উপরই জোর দিয়েছেন এটিকে কোচ। কলকাতার টিমে দু’জন বঙ্গসন্তান দেবজিৎ আর প্রবীর বাদে সবাই নতুন। বিদেশিরাও। প্রথম ম্যাচে তাদের মধ্যে চোখে পড়ল স্প্যানিশ জর্ডি এবং পর্তুগিজ মিডিও জোস স্যান্টোস ব্র্যাঙ্কোকে। জর্ডি পিছন থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। যেমন আগে দিতেন বোরহা ফার্নান্ডেজ বা জাভি লারা। আর ব্র্যাঙ্কো সেট পিসে খুব ভাল। বিশেষ করে কর্নারে। তার একটি কর্নার থেকে গোলও হয়ে যাচ্ছিল। জর্ডির হেড গোলে ঢোকার মুখে বাঁচান কেরল কিপার পল রিচুবকা। ব্যাঙ্কোর শট পোস্টে লেগেও ফিরল। এই বিদেশিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারেন টেডি। তার বড় সুবিধা গোলে রয়েছেন দেবজিৎ মজুমদার। যাকে সবসময়ই মনে হয় অপ্রতিরোধ্য।

এটিকে: দেবজিৎ মজুমদার, প্রবীর দাশ, ডর্ডি মন্টেল, থমাস থর্প, কিগান পেরিরা, হিতেশ শর্মা, রুর্পেট ননগ্রুম (বিপিন সিংহ), ইউজেনসন লিংডো, জোসে ব্র্যাঙ্কো, কোনর থমাস, নাজি কুকি (রবিন সিংহ)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATK Football ISL 2017-18 ISL 4
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE