Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সেরা কুলদীপ যাদব ২-১৬

কুলদীপদের ভয় পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

সোজা কথাটা হল অস্ট্রেলিয়া কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চহালদের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে ভয় পাচ্ছে। ওরা বল হাতে এলেই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা যেন একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকছে।

আগ্রাসী: সেই পরিচিত ভঙ্গি, সেই আক্রমণাত্মক মেজাজ। ধোনির ঘরের মাঠে বিরাট কোহালি। শনিবার। ছবি: এএফপি

আগ্রাসী: সেই পরিচিত ভঙ্গি, সেই আক্রমণাত্মক মেজাজ। ধোনির ঘরের মাঠে বিরাট কোহালি। শনিবার। ছবি: এএফপি

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

কোথায় সেই অস্ট্রেলিয়া? শনিবার রাঁচীতে যে অস্ট্রেলিয়াকে দেখলাম, সেই দলটাকে দেখে মনে হচ্ছে ওদের সেই মস্তানি, সাহসটাই যেন উধাও হয়ে গিয়েছে।

আসলে ভারতের সামগ্রিক ফর্ম আর আমাদের স্পিনারদের দাপটই ওদের এই হাল করে ছেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। না হলে প্রত্যেকটা ম্যাচে এ ভাবে কেউ আত্মসমর্পণ করে?

সোজা কথাটা হল অস্ট্রেলিয়া কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চহালদের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে ভয় পাচ্ছে। ওরা বল হাতে এলেই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা যেন একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকছে।

আরও পড়ুন:

জন্মদিনে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে নজির গড়লেন প্রশান্ত

শনিবার যে রকম হল। কুলদীপ যাদবের চার ওভারে মাত্র ১৬ রান নিতে পারল ব্যাটসম্যানরা। ওকে দুটো উইকেটও দিল ওয়ার্নাররা। একটাও চার বা ছয় দেয়নি কুলদীপ। আর চহালের চার ওভারে একটা চার আর একটা ছয় হাঁকালেও ২৩ রানের বেশি নিতে পারেনি ওদের ব্যাটসম্যানরা। এই আট ওভারে উঠল মাত্র ৩৯ রান ওঠে। পাঁচের গড়ও নয়। এই আট ওভারেই তো ওদের হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে যায়। দুই স্পিনারের আট ওভারে উইকেটও পড়ছে। রাঁচীতে শনিবার যেমন ফিঞ্চ, ম্যাক্সওয়েল আর এনরিকে-কে তুলে নিল স্পিনাররা।

শুধু স্পিনারদের কেন, ভারতের কোনও বোলারকেই তো ওরা ঠিকমতো খেলতে পারছে না ওরা। বুমরা আর ভুবনেশ্বর যে ভাবে নিখুঁত বোলিং করছে, তাতে অস্ট্রেলিয়া কেন, যে কোনও দলের ব্যাটসম্যানই ওদের বিরুদ্ধে অস্বস্তিতে পড়বে। বুমরার ইয়র্কার আর ভুবির নিখুঁত সুইংয়ের জন্য এখন ভারতীয় পেস ব্যাটারিকে বিশ্বের সেরা বলা যায় অনায়াসে।

আরও একটা জিনিস লক্ষ্য করছি। অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারের উপর বড্ড বেশি নির্ভর করে আছে ওদের দলের বাকিরা ফলে এরা দু’জন ছাড়া বাকিদের খুব দুর্বল মনে হচ্ছে। শনিবারের ম্যাচেও যখন ওয়ার্নার প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যায় আর ফিঞ্চ ৩০ বলে ৪২ রান করে দিয়ে চলে যায়, তার পরে সেই ছন্দটা ধরে রাখার মতো কাউকে আর পাওয়া গেল না। ম্যাক্সওয়েল, ট্রাভিস হেড-রাই যেখানে কিছু করতে পারছে না। অদ্ভূত ভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, তা হলে বাকিদের কাছ থেকে আর কীই বা আশা করা যায়?

জানি না বীরেন্দ্র সহবাগ কতটা ঠিক, তবে আমারও এটা মনে হয়েছে যে, নিজেদের পুরোপুরি মেলে ধরতে না পারার যন্ত্রণাটা ওদের কুরে কুরে খাচ্ছে। সোজা করে বলতে গেলে, স্লেজিং করতে পারছে না বলে হয়তো ভিতরে ভিতরে ছটফট করছে। ওদের স্বাভাবিক আগ্রাসনটা ওরা মেলে ধরতে পারছে না বলেই নিজেদের স্বাভাবিক পারফরম্যান্সটাও মেলে ধরতে পারছে না হয়তো।

অনেকে হয়তো ভাবছেন স্টিভ স্মিথের চোটের আকস্মিক খবর ওদের পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলেছে। আমার ধারণা, স্মিথ খেললেও বেশি কিছু করতে পারত না। ও তো আর বিরাট কোহালি নয়। খুব রক্ষণাত্মক ক্যাপ্টেন ও। ওর শরীরের ভাষাও খুব নেতিবাচক।

ভারতের ছয় ওভারে ৪৮ তোলা নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগে এটা কোনও বড় টার্গেটই নয়, এটা জেনেই নেমেছিল ভারত। যে কাজটা অনায়াসে শেষ করে আসে বিরাট আর শিখর।

শেষে বলব, আশিস নেহরাকে কেন টিমে নেওয়া হল, এটা যেন কুলদীপের স্পিনের চেয়েও বড় রহস্য। যে ঘরোয়া ক্রিকেটেো টি-টোয়েন্টি খেলে না, তাকে ভারতীয় দলে নেওয়ার অর্থ কী? আর শনিবার পেসারদের এই পারফরম্যান্সের পর বাকি দুই ম্যাচে ওকে আর দরকার হবে বলে তো মনে হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE