উৎসব: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরির পরে বাংলাদেশের মোমিনুল হক। বুধবার চট্টগ্রামে। এএফপি
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই চালকের আসনে বাংলাদেশ। দিনের শেষে বাংলাদেশের রান চার উইকেটে ৩৭৪। যার মধ্যে ১৭৫ রানে অপরাজিত আছেন মোমিনুল হক।। মোমিনুল শতরান পেলেও এ দিন শতরানের কাছে গিয়েও ফিরলেন উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম।। ৯২ রানেই থেমে গেল তাঁর ইনিংস।। দিনের শেষে মোমিনুল-এর সঙ্গে ক্রিজে ৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
চট্টগ্রামে বুধবার সকালে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। আর শুরুতেই সুরঙ্গা লাকমল, রঙ্গনা হেরাথ-দের বোলিং আক্রমণকে ছত্রভঙ্গ করে দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৫২) এবং ইমরুল কায়েস (৪০)। মাত্র দশ ওভারের মধ্যেই ৫০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ তাঁদের দুই ওপেনারের মারমুখী ব্যাটিং-কে সম্বল করে। কিন্তু দলের ৭২ রানের মাথায় তামিম ইকবাল আউট হতেই লাঞ্চের আগে দ্রুত ১২০-২ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
শুরুতেই এই ঝোড়ো ব্যাটিং কেন তা জানতে চাইলে দিনের শেষে সেই রহস্য ফাঁস করেছেন, তামিম ইকবাল স্বয়ং। তিনি বলেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার বোলারদের চাপে রাখতে শুরুতেই আক্রমণের পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। যা ঠিকঠাক কাজে লেগেছে।’’
দুই ওপেনার প্যাভিলিয়নে ফেরার পরেই মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে খেলা ধরেন মোমিনুল। প্রাক্তন অধিনায়ক মুশফিকুরের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ২৩৬ রানের জুটি তৈরি করেন মোমিনুল। দুর্ভাগ্য মুশফিকুরের। পঞ্চম টেস্ট শতরানের দোরগড়ায় গিয়েও এ দিন ফিরতে হয় তাঁকে। না হলে যে মেজাজে এ দিন মুশফিকুর খেলছিলেন তাতে শতরান করতেই পারতেন তিনি।
তবে দিনের নায়ক অবশ্যই মোমিনুল। গত তিন বছর ধরে যাঁকে স্বমহিমায় দেখাই যায়নি প্রায়। আগের কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে-র পছন্দের দলে ছিলেন না তিনি। তাই বাদ পড়ে একসময় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। সেই মোমিনুলই ২০৩ বলে অপরাজিত ১৭৫ রান করার পথে এ দিন মারেন ১৬ টি চার। আর শ্রীলঙ্কার অফস্পিনার রঙ্গনা হেরাথকে মারেন একটি বিশাল ছক্কা। মজার ব্যাপার এটাই যে, বর্তমানে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ এখন হাথুরুসিংহে-ই। টেস্ট ক্রিকেটে এটি মোমিনুল-এর পঞ্চম শতরান। যা তিনি করেন মাত্র ৯৬ বলে। শ্রীলঙ্কার বাঁ হাতি স্পিনার লক্ষ্মণ সান্দাকান-কে পর পর দু’টি চার মেরে শতরানে পৌঁছান তিনি। এমন কি রঙ্গনা হেরাথকেও চার মেরে ব্যক্তিগত ১৬০ রানের মাথায় টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর ২০০০ রান পূর্ণ করেন মোমিনুল। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে মোমিনুলই হলেন টেস্টে দ্রুততম ২০০০ রানের মালিক। যা করতে তিনি নিয়েছেন মাত্র ৪৭ টি ইনিংস। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি ২০০০ রান ছুঁয়েছিলেন ৫৩ ইনিংসে।
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মোমিনুল-এর ঝকঝকে ইনিংস নিয়ে উচ্ছ্বসিত তামিম ইকবাল। বলেন, ‘‘ব্যাট করতে নেমে আগাগোড়া আক্রমণাত্মক মেজাজেই খেলে গেল মোমিনুল। কিন্তু কখনও উইকেট ছুড়ে দেয়নি। অনেকেই ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলে আউট হয়ে যায়। কিন্তু সেই ভুল করেনি মোমিনুল। বুঝতে পেরেছিল, দুই ওপেনার চলে যাওয়ার পরে ওর উইকেটটা গুরুত্বপূর্ণ। আজ ওর অনেক কিছু প্রমাণ করার ছিল।’’ সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘তৃতীয় উইকেটে একটা বড় রানের জুটি তৈরি করা দরকার ছিল আমাদের। মোমিনুলের সঙ্গে মুশফিকুরও দারুণ খেলে সেটা করে দিয়েছে।’’
দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নেওয়ার পরে যদিও পর পর মুশফিকুর ও লিটন দাস (০)-কে ফিরিয়ে শেষ বেলায় বাংলাদেশকে কিছুটা ধাক্কা দেন শ্রীলঙ্কার পেসার সুরঙ্গা লাকমল (২-৪৩)। যে প্রসঙ্গে তামিমের আক্ষেপ, ‘‘শেষের দিকে পর পর দুই উইকেট চলে না গেলে চাপটা আরও বেশি থাকত শ্রীলঙ্কার দিকে। তবে দ্বিতীয় দিনেও আক্রমণাত্মক মেজাজেই খেলতে হবে আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy