অভিমন্যু ঈশ্বরনের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির পরে এ বার ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের ডাবল সেঞ্চুরি। এই দুই ব্যাটসম্যানের হাত ধরে কার্যত রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলা। তিন বছর পরে আবার মনোজদের হয়তো রঞ্জি ফাইনালে ওঠার যুদ্ধে নামতে দেখা যাবে আগামী রবিবার থেকে।
জয়পুরে কোয়ার্টার ফাইনালে চতুর্থ দিনের শেষে বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৮৩-৪। গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাতের বিরুদ্ধে ৬১৩-র পাহাড়প্রমাণ রানে এগিয়ে তারা। সোমবার শেষ দিনে বড় কোনও অঘটন ছাড়া সেই রানের পাহাড় টপকানো পার্থিব পটেলদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
সোমবার শেষ দিনে মনোজ যদি ডিক্লেয়ার করে গুজরাতকে রান তাড়া করতে পাঠায় তা হলে এক দিনে এই রান তোলা পার্থিবদের পক্ষে প্রায় অবাস্তব। আবার বাংলা যদি সারা দিনে তাদের দশ উইকেট নাও ফেলতে পারে, তা হলেও প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকায় শেষ চারে ঢুকে পড়বে। অর্থাৎ বাংলার সেমিফাইনালে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা আর নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন: তরুণ প্রজন্মের টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন মঞ্জরেকরের
কোয়ার্টার ফাইনালের চতুর্থ দিনেই শেষ চারে ওঠা কার্যত নিশ্চিত করে ফেললেন অভিমন্যু, ঋত্বিকরা। সব ঠিকঠাক চললে এবং বোর্ডের পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী শেষ চারের লড়াইয়ে বাংলার মুখোমুখি হওয়ার কথা দিল্লি বনাম মধ্যপ্রদেশ ম্যাচের জয়ীদের। যে ম্যাচে দিল্লিই এগিয়ে। সোমবার শেষ দিনে দিল্লিকে জয়ের জন্য ২০৯ রান করতে হবে।
তিন বছর আগে ২০১৩-’১৪-র রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলা। সে বার ইনদওরে মহারাষ্ট্রের কাছে দশ উইকেটে হেরে গিয়েছিল তারা। এ বার ফের সুযোগ এল ফাইনালে ওঠার। তবে সাম্প্রতিক কালে ব্যাটিংয়ে এত দাপট শেষ কবে দেখিয়েছে বাংলা, তা সহজে মনে করা কঠিন। জয়পুরে সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামে দুই ইনিংস মিলিয়ে সাড়ে আটশোর কাছাকাছি রান তুললেন বাংলার ব্যাটসম্যানরা।
প্রথম ইনিংসে অভিমন্যু সেঞ্চুরি করলেও ঋত্বিক মাত্র চার রানে আউট হয়ে যান। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে অভিমন্যুর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ছাড়াও বারাসতের ঋত্বিকের দ্বিশত বাংলার বাড়তি পাওনা।
বাংলার ক্রিকেটের পক্ষে আরও বড় খুশির খবর হল, এ রকম একটা স্মরণীয় সাফল্য আসতে চলেছে মূলত তরুণ ক্রিকেটারদের হাত ধরে। বোলিংয়ে ঈশান পোড়েল, বি অমিতরা যেমন চমক দেখান, তেমনই অভিমন্যু, ঋত্বিকদের ব্যাটও ঝলসে উঠল এই ম্যাচে। নক আউট পর্যায়ে ঢোকার পরেই বাংলার এই ফর্মের শিখরে আসাটাই এ বার রঞ্জিতে সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যা গত ২৭ বছরেও আসেনি।
এই জয়পুরেই গত বছর রঞ্জির প্রথম ম্যাচে উত্তর প্রদেশের বিরুদ্ধে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন দেহরাদুনজাত ওপেনার অভিমন্যু। ফের সেই পয়া মাঠেই একই মাইলস্টোন গড়লেন তিনি। আগের দিন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সাত নম্বর সেঞ্চুরি থেকে সাত রান দূরে ছিলেন তিনি। রবিবার ব্যাট করতে নেমে সাত বল খেলেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন তিনি। কিন্তু আর ১৪ রান করার পরেই ঈশ্বরের বলে আউট হয়ে যান ঈশ্বরন। গুজরাতের পেসার ঈশ্বর চৌধুরিকে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বঙ্গ ওপেনার। ঋত্বিকের সঙ্গে ১২১ রানের পার্টনারশিপ খেলে অভিমন্যু ফিরে যেতে ব্যাট হাতে নামেন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। এতে আরও সুবিধা হয় ঋত্বিকের। উল্টো দিকের ক্রিজ থেকে সারাক্ষণ এই তরুণ অলরাউন্ডারকে বড় ইনিংস গড়ার রাস্তা দেখান অভিজ্ঞ মনোজ। সেই সাহসও অধিনায়কের কাছ থেকেই তিনি পান বলে এ দিন জানান ঋত্বিক। মনোজ এ দিন ৫৯ রান করেন ১৭৭ বল খেলে। দু’জনে মিলে ১৬৬ রান তোলেন ঋত্বিক ও মনোজ। তবে মনোজ ফিরে যাওয়ার পরে ঋত্বিক জীবনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছন ৩২৯ বল খেলে। দিনের শেষে তিনি আর এক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অনুষ্টুপ মজুমদারের সঙ্গে অপরাজিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy