ছবি: সংগৃহীত।
অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে স্পেনের বিরুদ্ধে গোল করে লিঙ্কন ডস স্যান্টোসের ফাঙ্ক ড্যান্সে মুগ্ধ হয়েছিলেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। তার পর পাওলো হেনরিক সাম্পাইও ফিলফো (পাওলিনহো) মাতিয়ে দিয়েছিল সাম্বার ছন্দে।
ব্রাজিল শিবিরের অন্দরমহলও একইরকম ছন্দময়। সাম্বা, পাগুয়াজো ও ফাঙ্ক ড্যান্স মেতে ফুটবলাররা।
পাগোয়াজু ছাড়া উৎসবের কথা ভাবতেই পারেন না রিও দে জেনেইরোর মানুষ। ১৯৭৮ সালে বেথ কার্ভালোর সৃষ্টি এই পাগোয়াজু। সাম্বার আধুনিক রূপই হচ্ছে পাগোয়াজু। আর ষাটের দশকে আফ্রো-আমেরিকানদের আবিষ্কার ফাঙ্ক ড্যান্স। জ্যাজ, ব্লু, হিপহপের সঙ্গে আফ্রিকার লোকসঙ্গীতের মিশ্রন। সাম্বার পাশাপাশি পাগোয়াজু, ফাঙ্ক-ও দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্রাজিলীয়দের মধ্যে। নতুন প্রজন্মও এখন সেই সুরে আচ্ছন্ন।
কী ভাবে সময় কাটান পাওলিনহো-রা? ব্রাজিল ফুটবলাররা টিম হোটেলের বাইরে খুব একটা বেরোয় না। কেউ কেউ মেতে থাকে পাগুয়াজু, ফাঙ্ক ও সাম্বায়। কারও পছন্দ তাস খেলা। আবার কেউ কেউ সময় কাটায় প্লে-স্টেশন খেলে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সঙ্গীতে মেতে থাকা ফুটবলারের সংখ্যাই বেশি।
অনূর্ধ্ব-১৭ ব্রাজিল দলের এক কর্মী বলছিলেন, ‘‘আমরা ব্রাজিলীয়রা শুধু আবেগপ্রবণ নই, আমুদেও। আমরা হইহই করতে খুব ভালবাসি। আমাদের দেশে তিন-চার জন একসঙ্গে হলেই শুরু হয়ে যায় গান, নাচ, আড্ডা ও ফুটবল নিয়ে চর্চা। পাওলিনহো-রা সেই ধারাই বজায় রেখেছে।’’
অন্দরমহলে উৎসবের আবহের মধ্যেই অবশ্য প্রতিপক্ষ বধের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে বসে পড়েন কার্লোস।
ব্রাজিল কোচ দু’বার ক্লাস নেন ফুটবলারদের। মধ্যাহ্নভোজের সময় তিনি আগের ম্যাচে ফুটবলাররা কে কী ভুল করেছে, তা ধরিয়ে দেন। আর নৈশভোজের সময় প্রতিপক্ষের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা করেন। দলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমাদের কোচকে কখনও রেগে যেতে দেখিনি। ম্যাচে ভুল করার জন্য কাউকে বকেন না। শান্ত ভাবে বুঝিয়ে দেন কী করা উচিত ছিল।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘কোচ কখনও ফুটবলারদের ব্যক্তিগত জীবনেও নাক গলান না।’’
কার্লোসের যুক্তি, ‘‘ফুটবলাররা মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দিচ্ছে কি না, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মাঠের বাইরে ওরা কী করছে, তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। ম্যাচ জিতে গভীর রাত পর্যন্ত উৎসব করলেও আমার কোনও আপত্তি নেই।’’
কার্লোসের ফুটবলারদের উজ্জীবিত করার পদ্ধতিও চমকে দেওয়ার মতো। প্রাতঃরাশের সময় হয়তো কোনও ফুটবলারের পাশে গিয়ে বসে পড়লেন। তার পর বলতে শুরু করলেন, ‘‘এই টুর্নামেন্টই তোমাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার মঞ্চ। এখানে নিজেদের প্রমাণ করতে পারলেই কিন্তু সিনিয়র দলে ডাক পাবে। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলো তোমাদের নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে।’’
ব্রাজিল কোচের এই স্ট্র্যাটেজির জন্যই ভিনিসিয়াস জুনিয়ারের না থাকা নিয়ে কোনও হতাশা এখনও পর্যন্ত নেই। চোটের জন্য অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ থেকে ভিনিসিয়াস ছিটকে যাওয়ার পর ফুটবলারদের কার্লোস বলেছিলেন, ‘‘ব্রাজিল দল কখনও এক জন ফুটবলারের উপর নির্ভর করে না। তোমরা যে যোগ্য, সেটা মাঠে নেমে প্রমাণ করো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy