যুগলবন্দি: দুই নায়ক অশোক ডিন্ডা এবং মহম্মদ শামি। ছবি: টুইটার
মঙ্গলবার রায়পুরের শহিদ বীর নারায়ণ সিংহ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ছত্তীসগঢ়ের শেষ দুই ব্যাটসম্যান দেখলেন এক অদ্ভুত দৃশ্য। তাঁদের পিছনে উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার পাশে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাংলার ন’জন ফিল্ডার! এই ফিল্ডিং নিয়ে উল্টো দিক থেকে নাগাড়ে বোলিং করে গেলেন অশোক ডিন্ডা ও মহম্মদ শামি। শেষ পাঁচ ওভার এ ভাবেই টানা অফ স্টাম্পের বাইরে আগুন ঝরিয়ে গেলেন তাঁরা। আর তাতেই শেষ ছত্তীশগড়ের ব্যাটিং।
দুই ইনিংসে দশ উইকেট নিয়ে বাংলাকে ইনিংস ও ১৬০ রানে ম্যাচ জিতিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের শততম ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখলেন অশোক ডিন্ডা। সঙ্গে পেলেন মহম্মদ শামিকে। যিনি এখন ভারতীয় দলের বাইরে থাকলেও আগুনে বোলিংয়ে তাঁরও ক্লান্তি নেই। ছত্তীশগঢ়ের বিরুদ্ধে ইনিংসে জয় পেতে কুড়িটা উইকেটের মধ্যে আঠেরোটাই নিলেন বাংলার দুই পেসার। দশটা ডিন্ডা। আটটা শামি। এবং, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল নয় স্লিপ নিয়ে বল করার ছবি। যা ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র করতে দেখা গিয়েছে অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি ডেনিস লিলি-কে।
আরও পড়ুন: পৃথ্বীর ব্যাটিং দেখে অবাক নিউজিল্যান্ড
মঙ্গলবার ইনিংস জয়ের জন্য বাংলার দরকার ছিল পাঁচ উইকেট। মাত্র ১০.৪ ওভারের মধ্যে সেই কাজ সেরে ফেলেন দলের দুই পেসার। প্রথম ইনিংসে ডিন্ডার গতির ঝড়ের সামনে মাত্র ১১০ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ছত্তীশগঢ়। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধের লক্ষণ দেখালেও বেশিক্ষণ টেকেনি সেই লড়াই। ২১১-৪ থেকে ২৫৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট নিয়ে ঘাতক ছিলেন ডিন্ডা। দ্বিতীয় ইনিংসে শামি নিলেন ৬১ রানে ছয় উইকেট। ছত্তীশগঢ়কে এক ইনিংস ও ১৬০ রানে হারিয়ে বোনাস পয়েন্টও আদায় করে নেয় বাংলা।
অভাবনীয়: ভয়ঙ্কর শামি-ডিন্ডা। স্লিপে বাংলার ৯ ফিল্ডার। মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাংলা জিতল ইনিংস ও ১৬০ রানে। ছবি: টুইটার
স্লিপে ন’জন ফিল্ডার দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি রায়পুর থেকে ফোনে বললেন, ‘‘গুয়াহাটিতে অসমের বিরুদ্ধে ম্যাচে এ রকম ফিল্ডিং সাজিয়েছিলাম। আজ আবার সে রকমই করলাম। শামি-ডিন্ডারা যে রকম বিধ্বংসী বোলিং করছিল, তাতে বেশ ভয় পাচ্ছিল ব্যাটসম্যানরা। তাই ওদের উপর চাপ আরও বাড়াতে চেয়েছিলাম।’’ শামি বললেন, ‘‘জানতাম এতে ওরা চাপে থাকবে। আমরাও সকালের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে চটপট উইকেট তুলে নিতে পারলাম। ওদের চাপে ফেলে দিতে এই পরিকল্পনা।’’ ডিন্ডা বলছেন, ‘‘শামি আর আমি ঠিক করেই নিয়েছিলাম সকালের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব কাজে লাগাবো। উইকেটে বাউন্স ছিল। সেটা আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি।’’
এই উইকেটে দলের পেসারদের এই পারফরম্যান্স দেখে যেমন খুশি অধিনায়ক মনোজ, তেমন অবাকও। বললেন, ‘‘উইকেটটা বোলিংয়ের পক্ষে সহজ ছিল না। উইকেটের অবস্থা ও কন্ডিশনকে ওরা দুর্দান্ত কাজে লাগিয়েছে। দুর্দান্ত রিভার্স সুইং করিয়েছে দু’জনেই। এমন একটা জয়ই চেয়েছিলাম সতীর্থদের কাছ থেকে। ওদের ধন্যবাদ।’’ দুই ম্যাচে দশ পয়েন্ট পেয়ে এখন গ্রুপের শীর্ষে বাংলা। এ বারে রঞ্জিতে বাংলা রয়েছে গ্রুপ ‘ডি’-তে। মনোজদের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে বিদর্ভ, হিমাচল প্রদেশ, ছত্তীশগঢ়, গোয়া, পঞ্জাব, সার্ভিসেস। বাংলার পরের ম্যাচ ১ নভেম্বর হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy