চনমনে: চার্চিল ম্যাচের প্রস্তুতিতে আমনা, চার্লস ও প্লাজা। —নিজস্ব চিত্র।
লাজং এফসি কাঁটায় বিদ্ধ হয়ে দিপান্দা ডিকা-রা পয়েন্ট নষ্ট করায় উচ্ছ্বসিত লাল-হলুদ সমর্থকরা। ব্যতিক্রম কোচ খালিদ জামিল।
চব্বিশ ঘণ্টা আগে মোহনবাগানের ড্র অশনি সঙ্কেত ইস্টবেঙ্গল কোচের কাছে। সনি নর্দে-রা পাঁচ গোলে চার্চিল ব্রাদার্সকে হারানোর পরেই ধাক্কা খান লাজংয়ের বিরুদ্ধে। মহম্মদ আল আমনা-রাও আগের ম্যাচে লাজংকে ৫-১ গোলে হারিয়ে আই লিগের খেতাবি দৌড়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন। আজ, শনিবার বারাসত স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ আই লিগ পয়েন্ট টেবলের সবচেয়ে নীচে থাকা চার্চিল। সেটাই লাল-হলুদ কোচের উদ্বেগের কারণ। এই পরিস্থিতিতে উইলিস প্লাজাকে ফর্মে ফেরানোর চেয়েও খালিদের কাছে এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ ফুটবলারদের আত্মতুষ্ট হয়ে পড়া আটকানো।
শুক্রবার সকালে ইস্টবেঙ্গল মাঠে ঘণ্টা দেড়েকের অনুশীলনের পরেই ফুটবলারদের নিয়ে চার্চিলের আগের তিনটি ম্যাচের ভিডিও রেকর্ডিং দেখতে বসে পড়েন খালিদ। মোহনবাগানের উদাহরণ দিয়ে বারবার সতর্ক করেছেন ফুটবলারদের। ক্লাব ছাড়ার সময় আমনা বলেই দিলেন, ‘‘অন্য দলকে নিয়ে ভাবতে চাই না। আমরা এই মুহূর্তে নিজেদের দল নিয়েই চিন্তিত। এখন আমাদের সব ম্যাচেই তিন পয়েন্ট দরকার।’’
শনিবার আই লিগে
ইস্টবেঙ্গল বনাম চার্চিল ব্রাদার্স
(বারাসত, বিকেল ৫.৩০)।
এ দিন প্রাক্টিসের ফাঁকে আমনা-কে বারবারই দেখা গিয়েছে একান্তে মহম্মদ রফিক, প্লাজা, চার্লস ডি’সুজাদের সঙ্গে কথা বলতে। আর বিকেলে ক্লাব তাঁবুতে সাংবাদিক বৈঠকে খালিদ বললেন, ‘‘অতীত নয়। আমরা শুধু এই ম্যাচটা নিয়েই ভাবতে চাই। ভাল খেলতে চাই।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘টেলিভিশনে চার্চিলের খেলা দেখেছি। ওরা যথেষ্ট শক্তিশালী দল।’’
চার্চিলকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচের বাড়তি সতর্কতার আরও একটা কারণ, হঠাৎ করেই প্রতিপক্ষ শিবিরের বদলে যাওয়া পরিস্থিতি। আই লিগের প্রথম দুটো ম্যাচে চার্চিলের কোচ ছিলেন ইউক্রেনের মিকোলা শেভচেঙ্কো। গত রবিবার বারাসত স্টেডিয়ামে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হারের পরেই তিনি চাকরি খোয়ান। সরকারি ভাবে দায়িত্ব না নিলেও সনি নর্দে-দের প্রাক্ত কোচ জোসেফ আফুসি-ই এখন অনুশীলন করাচ্ছেন ফুটবলারদের। চার্চিলের প্রাক্তন তারকা ওগবা কালুকে তিনিই ফিরিয়ে এনেছেন। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নাইজিরীয় মিডফিল্ডারকে খেলাতে মরিয়া চার্চিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের সহকারী কোচ আলফ্রেদ ফার্নান্দেজ সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, ‘‘কালুর খেলার সম্ভাবনা আশি শতাংশ।’’
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে এই বছর মহমেডানের হয়ে খেলেছেন কালু। কল্যাণী স্টেডিয়ামে ঘরোয়া লিগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২৪ ম্যাচ পরে ইস্টবেঙ্গলের জয়রথ থামানোর নেপথ্যে অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে প্লাজা গোল করে হার বাঁচান লাল-হলুদের। সেই ধাক্কা এখনও ভোলেননি খালিদ।
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের ত্রাতা হয়ে ওঠা প্লাজা এই মুহূর্তে একেবারেই ছন্দে নেই। তার উপর চার্চিলের সহকারী কোচ এ দিন হুঙ্কার দিয়ে গেলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল দারুণ দল ঠিকই। লড়াইটা কিন্তু মাঠে হবে। আর তার জন্য আমরা তৈরি। তবে বারাসতের কৃত্রিম ঘাসের মাঠই একটু চিন্তায় রাখছে।’’
আই লিগে এই মরসুমে তিনটি ম্যাচের একটিতেও গোল পাননি ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর জাতীয় দলের স্ট্রাইকার। তাঁর মতোই হাল আর এক বিদেশি স্ট্রাইকার চার্লসের। তাঁর পায়েও গোল নেই। এ দিন সকালে প্র্যাকটিস ম্যাচেও দুই স্ট্রাইকার গোল করতে ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে লাল-হলুদ শিবিরে প্লাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও চার্চিলের বিরুদ্ধে তিনিই ভরসা ইস্টবেঙ্গল কোচের! ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো স্ট্রাইকার নিয়েই সাংবাদিক বৈঠকে খালিদের পাসে বসে জানিয়ে দিলেন, সমালোচনায় গুরুত্ব দিতে নারাজ। বললেন, ‘‘আমার গোল করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দলের জয়। দল জিতলেই আমি খুশি। তাই সমালোচকদের আমি গুরুত্ব দিতে চাই না। দল হারছে, অথচ আমি গোল করতে পারছি না এটা সবচেয়ে যন্ত্রণার।’’ তার পরেই প্লাজার দাবি, ‘‘আগের ম্যাচে দলের দুরন্ত জয়ের পর আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি!’’
লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের দাবিতে সমর্থকরা কতটা আশ্বস্ত হলেন, সেটা সময়ই বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy