সফল: গোলদাতা জবি জাস্টিনকে অভিনন্দন কাতসুমির। নিজস্ব চিত্র
পাহাড়ের পর সাগর পাড়ে এসেও খালিদ জামিলের দল ধাক্কা খেল।
ডার্বিতে হারের পর অপরাজিত থাকার রথ ছোটালেও ফের পয়েন্ট নষ্ট করলেন আল আমনারা। ফলে লিগ শীর্ষে থাকলেও ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে আরও জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করল মিনার্ভা পঞ্জাব এবং নেরোকা এফ সি। ইস্টবেঙ্গলের নয় ম্যাচে ১৮ পয়েন্টের পাশে পঞ্জাবের ৭ ম্যাচে এখন ১৬। আর নেরোকার ৭ ম্যাচে ১৪। মোহনবাগান সেখানে ৮ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট।
লিগ টেবলের ছবি থেকে স্পষ্ট গোয়ার তিলক ময়দানে সোমবার দু’পয়েন্ট নষ্ট করে বড় সমস্যায় পড়ে গেলেন আল আমনারা। কারণ লিগ টেবলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা দু’টি দলের চেয়ে দুটি ম্যাচ বেশি খেলে ফেলেছে ইস্টবেঙ্গল। সাধারণ ভাবেই চার্চিলকে হারাতে না পেরে হতাশ ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলে দিয়েছেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ দুটি পয়েন্ট নষ্ট করলাম। আরও পরিশ্রম করতে হবে আমাদের।’’ খালিদের আরও সংযোজন, ‘‘চার্চিল ম্যাচের আগে দু’সপ্তাহ বিশ্রাম পেয়েছে। ক্লান্তিটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াল।’’ এ দিন প্রথমার্ধে জোবি জাস্টিনের গোলে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি গোল হজম করেন লাল-হলুদের কিপার লুইস ব্যারেটো। ইস্টবেঙ্গল বক্সের উপর থেকে চার্চিলের কোফি মোশাক প্লেসিং শটে বুদ্ধিদীপ্ত গোল করে যান। আইভরি কোস্টের কোফির এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। বিদেশি এই স্ট্রাইকারের গোলে আই লিগের লাস্ট বয় চার্চিল প্রথম পয়েন্ট পেয়ে যায় এ দিন।
আরও পড়ুন: কম রানে আউট কোহালি, হতাশায় গায়ে আগুন সমর্থকের
চোখ ধাঁধানো অসাধারণ ফুটবল না খেললেও কিছুটা ভাগ্যের জোরে এবং কয়েকটি ভাল গোলের সুবাদে খালিদের ভাড়ারে পয়েন্ট জমা হচ্ছে। কখনও ইনজুরি সময়ের গোল, কখনও মহমম্দ রফিকের মতো অনিয়মিত ফুটবলারের অসাধারণ গোল, কখনও ফর্মে না থাকা উইলিস প্লাজার গোলে ফেরা— ইস্টবেঙ্গলে কেউ না কেউ সফল হচ্ছেনই। পড়শি ক্লাব মোহনবাগানে যখন গোলের জন্য মাথা কুড়ে মরছেন আনসুমানা ক্রোমারা তখন লাল-হলুদে সেই সমস্যা নেই।
যেমন এ দিন করলেন জোবি জাস্টিন। উইলিস প্লাজার জায়গায় শুরুতে নেমে। কলকাতা লিগের পর চোট আঘাতে জর্জরিত হয়ে দীর্ঘদিন বসে থাকা এক ফুটবলার প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই অসাধারণ গোল করে ফেললেন এ দিন। গোয়ার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যের মতোই জোবির গোলটিও বারবার দেখা যেতে পারে। ডানদিক থেকে লালদুমাইয়া রালতের তোলা বল উড়ে গিয়ে হেডে ফ্লিক করে চার্চিল গোলে পাঠালেন তিরুঅনন্তপুরমের ছেলে। তবে আই এম বিজয়নের বেছে দেওয়া স্ট্রাইকারের গোল কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাম পেল না। মূলত ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের দোষে। কোফি যখন গোল করে যাচ্ছেন তখন এদুয়ার্দো ফেরিরারা দর্শকের ভূমিকায়।
নতুন বছরে চার্চিল বেশ কিছু নতুন ফুটবলার সই করিয়েছে। কিরঘিজস্তান, গাম্বিয়া, লেবানন থেকে নতুন বিদেশি এনে পুরো টিমেরই খোলনলচে বদলে দিয়েছে গোয়ার একমাত্র আই লিগ খেলা ক্লাব। সেটা এ দিন বারবার টের পেয়েছেন কাতসুমিরা। কলকাতায় দুটি ম্যাচ হেরে যাওয়া আলফ্রেড ফার্নান্দেজের টিম এ দিন সমান তালে পাল্লা দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে। লাল-হলুদের হৃদপিন্ড আল আমনাকে খেলতে দেননি সিসে গোয়ানরা। কাতসুমিকেও অঙ্ক করে আটকে দিয়েছিলেন চার্চিল কোচ। ফলে ম্যাচটা হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। দুটি দলই গোলের সুযোগ পেয়েছে, নষ্টও করেছে। বল পজেসন থেকে ফ্রি কিক সবেতেই প্রতিটি ইঞ্চিতে লড়েছেন বাংলা ও গোয়ার দুটি ক্লাব।
ইস্টবেঙ্গল: লুইস ব্যারেটো, প্রকাশ সরকার (লালরাম চুলোভা), অর্ণব মণ্ডল, এদুয়ার্দো ফেরিরা, সালামরঞ্জন সিংহ, ইউসা কাতসুমি, আল আমনা (কেভিন লোবো), মহম্মদ রফিক, লালদামুইয়া রালতে, বাজু আর্মান্ড, জোবি জাস্টিন (উইলিস প্লাজা)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy