বিতর্ক: আম্পায়ারের কাছে বিরাটের প্রতিবাদ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
ইডেন টেস্ট শেষ পর্যন্ত ড্র হলেও ম্যাচের শেষ এক ঘণ্টায় মাঠে যে রকম টানটান উত্তেজনা দেখা গেল, তা আইপিএলের যে কোনও ম্যাচকেও হার মানিয়ে দিতে পারে।
ইনিংসের ১৫ নম্বর ওভারে মহম্মদ শামিকে স্কুপ শটে ছয় মারলেন শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলা। স্ক্যোয়ার লেগের পিছনে তখন ভারতের তিন জন ফিল্ডার ছিল। এটা লক্ষ্য করেই ও ভাবে ব্যাট চালান তিনি। কারণ, জানতেন এ রকম হওয়া মানেই ‘নো বল’ হবে। ওই ওভারের প্রথম বলেও শামিকে পুল করে ছক্কা মারেন ডিকওয়েলা।
এর পরেই আর. অশ্বিনকে দেখা যায় ডিকওয়েলার কাছে গিয়ে তাঁকে কিছু বলতে। দুই অধিনায়ক বিরাট কোহালি ও দীনেশ চণ্ডীমলও এগিয়ে আসেন সেখানে। আম্পায়ার নাইজেল লং এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করায় তখনকার মতো পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়। কিন্তু ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ১৯তম ওভারে। যখন ফের শামি বোলিং করতে আসেন।
আরও পড়ুন: শামি উইকেট পেতেই লাফ ছোট্ট বেবোর
ওভারের প্রথম বলেই বাউন্সার দেন শামি। প্রায় পাত্তা না দিয়েই তা ছেড়ে দেন ডিকওয়েলা। দ্বিতীয় বলের জন্য রান-আপ শুরু করতে গিয়ে শামি দেখেন ডিকওয়েলা তখনও দাঁড়িয়ে। পিছনে স্লিপ থেকেও বিরাট কোহালি কিছু বলছিলেন। যা শুনে হাত নাড়িয়ে ইশারায় তাঁদের দু’জনকেই পিছু হঠার ইশারা করেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান। এতেই আবহাওয়া ফের গরম হয়ে ওঠে।
ঘড়িতে তখন পৌনে চারটে বাজে। আগের দু’দিনের অভিজ্ঞতা থেকেই মনে হচ্ছিল বড়জোর সাড়ে চারটে পর্যন্ত খেলা সম্ভব। অথচ ম্যাচ জেতার জন্য ভারতের তখন আরও ছ’টা উইকেট চাই। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা সময় নষ্ট করার মতলব নিলেন। কোহালির নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা উত্তেজিত ভাবে যার বিরোধিতা করতে শুরু করলেন।
শেষ ঘণ্টায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠা পরিবেশ নিয়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা কে এল রাহুল সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলে গেলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে এ রকম হওয়াই স্বাভাবিক। ওরা তো সময় নষ্ট করার চেষ্টা করবেই। আমরাও হয়তো তা-ই করতাম। কেউ তো আর হারতে মাঠে নামে না। তাই নানা কৌশল নেওয়া হয়। এতে অন্যায় কিছু নেই। আমরাও চাইছিলাম যত বেশি ওভার খেলা যায়, তত ভাল। ওদের সবাইকে আউট করার জন্য বেশ খানিকটা সময় দরকার ছিল।’’
বারবার ড্রেসিংরুম থেকে জল পাঠিয়ে, চোট লাগলে অনেকক্ষণ ধরে পরিচর্যা করে, প্যাভিলিয়ন থেকে নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিজে নামাতে দেরি করে সময় নষ্ট করার চেষ্টা করছিল শ্রীলঙ্কা। যা দেখে একটা সময় গ্যালারিও তেতে উঠেছিল। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে ড্রেসিংরুম থেকে জলের বোতল নিয়ে মাঠে ঢুকতে যান দুই সাপোর্ট স্টাফ। স্লিপ থেকে ছুটে এসে কোহালি আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আম্পায়ার নাইজেল লং তৎক্ষণাৎ তাঁদের বের করে দেন।
শ্রীলঙ্কার কোচ নিক পোথাস দিনের খেলা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলে গেলেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতিতে এ রকমই হয়। দুই দলের মধ্যে লড়াইটা কতটা তীব্র হয়েছে, তা এ সব ঘটনা থেকেই বোঝা গিয়েছে। এটাই টেস্ট ক্রিকেট। আমরা যে ভারতকে চাপে রাখতে পেরেছি, এটা আমাদের পক্ষে ভাল। ফয়সালা না হলেও ম্যাচটা দুর্দান্ত হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy