বরখাস্ত: সর্দারদের কোচের পদ থেকে সরানো হল অল্টম্যান্সকে। —ফাইল চিত্র।
সাড়ে চার বছর ভারতীয় হকি দলের দায়িত্বে থাকার পর ডাচ কোচ রোল্যান্ট অল্টম্যান্সকে সরিয়ে দিল হকি ইন্ডিয়া। জাতীয় হকি নিয়ামক সংস্থার এই সিদ্ধান্তে অবশ্য অবাক নন অল্টম্যান্স। বলেই দিলেন, ‘‘আমি তৈরিই ছিলাম।’’ বরং অবাক খেলোয়াড় থেকে প্রাক্তন কোচেরা।
তাঁর দেখানো পথে চললে হয়তো দূরপাল্লায় সাফল্য পেত ভারত। এমন বলতেনও ভারতীয় দলের এই ডাচ কোচ। কিন্তু তাঁর এই নীতিতে আস্থা নেই হকির কর্তাদের। যার জেরেই বলি হতে হল ফের এক বিদেশি কোচকে। রিক চার্লসওয়ার্থ, হোসে ব্রাসা, মাইকেল নবস্, টেরি ওয়ালশ, পল ফান অ্যাসের পর এ বার তিনিও হকি কর্তাদের কুনজরে পড়লেন। আট বছরে পাঁচজন কোচ এলেন-গেলেন ভারতীয় হকিতে।
শনিবার হকি ইন্ডিয়া তাদের হাই পারফরম্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিটির বৈঠকের পরে এক বিবৃতিতে জানিয়ে দেয়, ‘‘অল্টম্যান্সের কোচিংয়ে দলের খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও দলের সামঞ্জস্যে উন্নতি হলেও ফল ও ধারাবাহিকতা আশানুরূপ নয়। তাই তাঁকে সরে যেতে হচ্ছে।’’ তিন দিন ধরে প্রায় ২৪ জন কর্তা এই বৈঠকে অংশ নিয়ে শেষে এই সিদ্ধান্ত নিলেন।
যা শুনে সর্দার সিংহদের বিদায়ী কোচ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘আমরা বিদেশি কোচেরা জানি যে ভারতে কাজ করা মোটেই সহজ নয়। মানসিক ভাবে আমি তৈরিই ছিলাম। যখন প্রস্তাবটা গ্রহণ করি, তখন থেকেই জানতাম আমাকে যে কোনও দিন সরে যেতে হবে।’’
তবে অল্টম্যান্সের কোনও আক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি গত সাড়ে চার বছরে ভারতীয় হকিতে যথেষ্ট অবদান রেখেছি। যে পথে ভারতীয় হকি দলকে এগিয়ে নিয়ে এসেছি, তাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে এই উন্নতির ধারা বজায় রাখতে পারবে ওরা।’’
কিন্তু অল্টম্যান্সের বিদায়ের খবরে অবাক তাঁর পূর্বসূরি স্প্যানিশ কোচ হোসে ব্রাসা। সংবাদসংস্থাকে তিনি বলেন, ‘‘অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। রোল্যান্ট ভাল কাজ করা সত্ত্বেও ওকে সরিয়ে দেওয়া হল! ভারতের এই ঘনঘন কোচ সরানোর সিদ্ধান্ত ওদের দলের চরম ক্ষতি করবে। আসলে ওদের হকির কর্তাদের হকি সম্পর্কে কোনও জ্ঞানই নেই।’’
ভারতীয় হকির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য যে দূরপাল্লার লক্ষ্য ও পরিকল্পনা দরকার, তা বিশ্বাস করতেন অল্টম্যান্স। তিনি এ দিন ফের বলেন, ‘‘আমি বরাবরই বলে এসেছি, প্রথম তিনে আসতে ভারতের অন্তত ছ’টা বছর দরকার। কিন্তু ভারতে সব কিছুই অদ্ভূত। এখানে মানুষ রাতরাতি সব পাল্টাতে চায়। সবাই শুধু সাফল্য বোঝে। কিন্তু তা কী করে আসবে, তা বোঝে না।’’
ফের কোচ সরানোর এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ দেশজুড়ে। সমর্থক থেকে খেলোয়াড় সবাই ক্ষুব্ধ। যেমন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বীরেন রাস্কিনহা। কর্তাদের কটাক্ষ করে তাঁর টুইট, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি আমাদের অপসারিত বিদেশি কোচেদের ‘এ’ থেকে ‘জেড’ লেখা হয়ে যাবে বোধহয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy