Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ভারত যত এগিয়ে যাচ্ছে, তত পিছিয়ে পড়ছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট

নয়া ফিটনেস মন্ত্রেই সাফল্য ধবনদের

কঠোর এই ফিটনেস পরীক্ষার নামই ‘ইও ইও এনডুওরেন্স টেস্ট’। বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে এই বিশেষ ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়াতেই যুবরাজ সিংহের জায়গা হয়নি শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ান ডে দলে।

চ্যালেঞ্জ: কঠোর ফিটনেস পরীক্ষার মুখে ধবনরা। ফাইল চিত্র

চ্যালেঞ্জ: কঠোর ফিটনেস পরীক্ষার মুখে ধবনরা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৫০
Share: Save:

শিখর ধবনদের ধারাবাহিক সাফল্যের পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ পাল্টে যাওয়া ফিটনেস মন্ত্র। ভারতীয় দলের মধ্যে নতুন করে চালু হয়েছে যখন খুশি ফিটনেস পরীক্ষা নেওয়ার নীতি। এর ফলে দলের ফিজিক্যাল কন্ডিশনিং কোচ শঙ্কর ভাসু যে কোনও সময়ে যে কোনও ক্রিকেটার বা এক সঙ্গে দু’তিন জনকে ডেকে নিতে পারেন। কোচের ডাকে সাড়া দিয়ে তক্ষুনি ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে।

কঠোর এই ফিটনেস পরীক্ষার নামই ‘ইও ইও এনডুওরেন্স টেস্ট’। বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে এই বিশেষ ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়াতেই যুবরাজ সিংহের জায়গা হয়নি শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ান ডে দলে। মনে করা হচ্ছে, এই পরীক্ষা চালু করার ফলে অনেক ক্রিকেটারই দলে আসার যোগ্যতামান পেরনোর ব্যাপারে সমস্যায় পড়তে পারেন।

গত কাল ভারতকে জেতানোর পরে ম্যাচের সেরা শিখর ধবন নতুন এই ফিটনেস মন্ত্রের কথা জানান। ধবন বলে যান, ‘‘ফিটনেসের দিকে বরাবরই খুব জোর দেওয়া হতো। কিন্তু এখন আরও বেশি করে এ নিয়ে ভাবা হচ্ছে। দলের সকলে যাতে একই রকম ফিটনেস মান ধরে রাখতে পারে, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে আর সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ ধবন আরও ব্যাখ্যা দেন, ‘‘তিন ধরনের ক্রিকেটেই ফিটনেস খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফিল্ডিংয়ে সামান্য একটা ভুলের কারণে ম্যাচ হারতে হতে পারে। ফিটনেসের অভাবে করা একটা সামান্য ভুলও ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারে।’’

শ্রীলঙ্কা সফরে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারকে এই ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ধবন স্বয়ং দু’বার পরীক্ষা দিয়েছেন। ডাম্বুলায় প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচের আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দিয়েছেন। আর. অশ্বিনকে দিতে হয়েছে। ডাম্বুলায় প্র্যাকটিস সেশনে পরীক্ষা দিয়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহালিও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ ধরনের ফিটনেস পরীক্ষা এখন অনেক দলেই বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। ক্রিকেট যে ভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে কোনও রকম আপস আর কেউ করতে চাইছে না।

আরও পড়ুন: পাঠচক্র পাঠ ভুলল কামোর হ্যাটট্রিকে

নতুন এই নিয়মে কন্ডিশনিং কোচ ইচ্ছা মতো দু’তিন জনকে ডেকে নিতে পারেন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। আগে থেকে কাউকে কিছু জানানো হয় না। এ রকম নিয়ম আনার কারণ হল, হালফিলে ভারতীয় দলে ফিটনেসের মান পড়ে যাওয়া। টিম ম্যানেজমেন্টের মনে হচ্ছে, ফিটনেসের মান নিচুর দিকে থাকা ক্রিকেটারের সংখ্যা দলের মধ্যে বেড়ে গিয়েছে। যে কারণে ফিল্ডিংয়ে রান বাঁচানো বা ফিল্ডিংয়ের মান ধরে রাখা যাচ্ছে না। ব্যাটিং বা বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও ফিটনেস না থাকার কারণে ভুগতে হচ্ছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে ভাল ফল করতে গেলে সেরা ফিটনেস আনতে হবে বলে ভারতীয় দলের মস্তিষ্করা মনে করছেন। সেই কারণেই এমন কঠোর পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

ধবন সোচ্চার ভাবে বলে দিয়ে গেলেন যে, ফিটনেস নিয়ে কড়াকড়িতে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ‘‘এখনকার ক্রিকেট অনেক পাল্টে গিয়েছে। দশ বছর আগের মতো আর নেই। এখন ক্রিকেট খুব হাইস্পিডে খেলা হচ্ছে। প্রত্যেককে ফিট থাকতেই হবে। যদি কেউ ফিট না থাকে, তার ফল দলকে ভুগতে হবে এবং সেটা দলের জন্য খুবই অন্যায় হবে।’’ ভারতীয় দলের ওপেনার এর পর অন্যান্য দলের উদাহরণও নেন। বলেন, ‘‘এটা শুধু ভারতীয় ক্রিকেটে হচ্ছে এমনও তো নয়। অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডেও এ রকম ফিটনেস পরীক্ষা রয়েছে। ক্রিকেটারদের নির্দিষ্ট স্তরের ফিটনেস মান অর্জন করতে হয় জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে। এ বার আমাদের দলেও সেটা চালু হয়ে গেল।’’ তিনি মনে করছেন, ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চও এখন বেশ শক্তিশালী। সেই কারণে তারা ফিটনেস নিয়ে এই কড়াকড়ি করতেই পারে। ‘‘আমাদের দলে এক জন না পারলে অন্যরা তৈরি রয়েছে সেই জায়গা নেওয়ার জন্য। সেই কারণে ফিটনেস নিয়ে কড়াকড়ি করা যেতেই পারে। যে পারবে না, সে পারবে না। অন্য কেউ তার জায়গায় খেলবে,’’ বলে ধবন আরও যোগ করছেন, ‘‘যদি কারও হাতে বিকল্প না থাকে, সে সংশয়ে ভুগতে পারে ফিটনেস নিয়ে কড়াকড়ি আনতে। কিন্তু আমাদের হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে।’’

ফিটনেস নিয়ে এই কড়াকড়িতে কে টিকতে পারবেন, কে বাতিল হবেন, সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE