ইডেনের নেটে নাইট অধিনায়ক কার্তিক। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
জাভেদ মিয়াঁদাদের নাম শুনলেই যেমন শারজায় সেই শেষ বলে ছয়ের কথা মনে পড়ে, নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের সেই রাতের পর থেকে দীনেশ কার্তিকের নাম তেমনই এক কীর্তির সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে।
কলম্বোয় সেই চিরস্মরণীয় ছয় মেরে ভারতকে অসাধারণ জয় এনে দেওয়ার পরে আগামী রবিবারই প্রথম মাঠে দেখা যাবে দীনেশ কার্তিককে। তাও আবার ইডেনে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে।
তিনি ব্যাট নিয়ে নামার সময় ইডেনের গ্যালারিতে ‘ডিকে..ডিকে..’ আওয়াজ উঠতে পারে। কেকেআর বিপদে পড়লে সমর্থকেরা নিশ্চয়ই তাঁর সেই রূপই দেখতে চাইবেন আবার। নাইটদের নতুন অধিনায়ক সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। কিন্তু আইপিএলে ফিনিশারের ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে কি না, সে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি নিজেই।
রবিবার কলকাতায় নাইটদের আইপিএল-বোধনে এসে কার্তিক বলেন, ‘‘আইপিএল মানেই তো কঠিন পরিস্থিতি আর চাপ। দিন দশেক আগে কলম্বোয় সেই রাতে যে ভাবে চাপ সামলেছিলাম, এখানেও সে ভাবেই সামলাব। তবে কোন জায়গায় আমি ব্যাট করতে নামব, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করবে।’’
ভারতের হয়ে ছয়-সাত নম্বরে ব্যাট করলেও কেকেআরের জার্সি গায়ে তিনি যে আরও আগে ব্যাট করতে নামবেন, সেই ইঙ্গিত দিয়ে এ দিন কার্তিক বলে দেন, ‘‘ভারতীয় দলে যে জায়গায় ব্যাটিং করেছি, আইপিএলে সেখানে নামব বলে মনে হয় না।’’ কার্তিক ব্যাটিং অর্ডারে উপরে চলে এলে নাইটদের ফিনিশারের ভূমিকায় অন্য কাউকে দেখার সম্ভাবনা থাকছে। আগামী রবিবার বিরাট কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ম্যাচ কলকাতার। যেখানে পরিষ্কার হয়ে যাবে, ব্যাটিং অর্ডারে নিজের জন্য কী জায়গা রাখছেন কার্তিক। প্রথম ম্যাচ দেখতে ইডেনে আসতে পারেন শাহরুখ খান। কেকেআরের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) বেঙ্কি মাইসোর বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, শাহরুখ খান ওই ম্যাচে ইডেনে থাকবেন।’’
আইপিএলে এই নিয়ে ছ’নম্বর দল তাঁর। কলম্বোর সেই স্বপ্নের রাতের ঘোর কাটিয়েই যে আইপিএল বৃত্তে প্রবেশ করেছেন, তাও জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘দশ দিনেরও বেশি হয়ে গিয়েছে। এই ক’দিনে দুনিয়া অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। আমিও সেই ঘটনাকে পিছনে ফেলে এসেছি।’’
নাইটদের তিনবার প্লে অফে তোলা ও দু’বার আইপিএল ট্রফি এনে দেওয়া অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের ব্যাটন এ বার তাঁর হাতে। যা নিয়ে কার্তিক বলছেন, ‘‘গম্ভীর একটা মাইলফলক তৈরি করে গিয়েছে। জানি, আমার কাছ থেকেও এমন সাফল্যই চাইবে দল। অন্তত প্লে-অফে পৌঁছই, এই প্রত্যাশা থাকবেই। আমাকে এই চাপটা নিতেই হবে। তবে আমি এই চাপ নেওয়ার জায়গায় আছি বলেই মনে হয়।’’
এই নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে যাঁরা কার্তিকের ভরসা হয়ে উঠতে পারেন, তাঁদের অন্যতম আন্দ্রে রাসেল। যিনি এক বছর নির্বাসন কাটিয়ে ফিরেও পাকিস্তান সুপার লিগ থেকে ছিটকে যান হ্যামস্ট্রিং চোটের জন্য। সেই চোট কাটিয়ে ফিরে এসে আত্মবিশ্বাসী তিনি। রবিবার ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার বলেন, ‘‘ক্রিকেটে ফেরার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি। গান-বাজনা প্রায় ছেড়ে দিয়ে নেটে পড়েছিলাম নিজেকে ফেরানোর জন্য। জানি কঠোর পরিশ্রমে ভাল ফল পাওয়া যায়। এ বার আইপিএলেই তা প্রমাণ করতে পারব নিশ্চয়ই।’’
দলের আর এক ভরসা রবিন উথাপ্পার জীবনে আবার এক অন্য পরিবর্তন ঘটেছে। সদ্য বাবা হয়েছেন তিনি। সে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তাঁর উপরে থাকছে দলের ভারও। যা নিয়ে জানতে চাইলে উথাপ্পা বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা সম্পুর্ণ নতুন পরিস্থিতি। কী করে এই দ্বৈত ভূমিকা সামলাব, পীযূষের (চাওলা) কাছ থেকে তা শিখছি।’’ আসলে গত বছর চাওলাও আইপিএলের সময় বাবা হয়েছিলেন যে। তাই তিনিই এখন উথাপ্পার পথপ্রদর্শক!
দলের আর এক ভরসা চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব তো বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘আমার কব্জি আর বলের সিমের ওপর নজর রেখে কোনও লাভ নেই। আমার বল বোঝা ব্যাটসম্যানদের পক্ষে অত সোজা নয়।’’
কুলদীপের মতোই টগবগ করে ফুটছে নাইটদের নতুন শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy