জ্যাকসন সিংহ থাউনাওজাম
পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে পড়েছে, তিনি বেরিয়ে আসছেন ট্র্যাজিক নায়কের মতো। মাথা নিচু। বারবার দু’দিকে মাথা নাড়ছেন।
তাঁর যুব বিশ্বকাপের ছাত্ররা গ্যালারির দর্শকদের অভিবাদন জানাতে গিয়েছেন। সেই ছবি তুলে রাখতে অসংখ্য মোবাইল ক্যামেরা জ্বলে উঠছে। দেখা গেল সেই সময় তাঁর চোখে জল। তিনি— ভারতের কোচ লুইস নর্টন দে মাতোস।
সাংবাদিক সম্মেলন করতে যখন ফিফার মিডিয়া সেন্টারে তিনি যখন এলেন তখনও গলা ভাঙা। কথা বলতে গিয়ে আবেগে আটকে যাচ্ছে গলা। ভারতীয় সাংবাদিকরা হাততালি নিয়ে পর্তুগিজ কোচের টিমের লড়াইকে সম্মান জানানোর পরে হাতজোড় করলেন। তখনও চশমার কোণ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল।
আরও পড়ুন: গোল করার উচ্ছ্বাসেই দ্বিতীয় গোল হজম: মাতোস
‘‘আজ রাতটা আমি ঘুমোবো। এটা ভেবে স্বস্তি পাব, বিশ্বকাপেও আমরা গোল করতে পারি। ছেলেরা দেখাতে পেরেছে তারা পারে,’’ বলার পরে মুখটায় অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা গেল। স্বস্তি আর গৌরবের মিশেল তাতে।
মধুর: অনূর্ধ্ব সতেরো বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম গোল। দুরন্ত হেডে সেই গোল করল জ্যাকসন। যদিও কলম্বিয়ার কাছে ১-২ হেরে ভারত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের মুখে। ছবি: গেটি ইমেজেস
জ্যাকসন-অমরজিৎদের কোচকে প্রশ্ন করা হল, আপনি কি জেতার আশা করেছিলেন? ‘‘কলম্বিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমি কখনও জেতার স্বপ্ন দেখিনি। তবে আজ হয়তো জিততে পারতাম। যদি শুরুতে দু’টো সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট না করত ছেলেরা। তা হলে স্বপ্নের বেশি কিছু হয়তো ঘটত। তবে ১-১ হলে সেটা হতো সঠিক ফল।’’ কিন্ত মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই ২-১ হয়ে যাওয়াটা তো আশ্চর্যের? যেখানে এক সময় ভারত প্রায় কোণঠাসা করে ফেলেছিল কলম্বিয়াকে। মাতোস স্বীকার করলেন, ‘‘আমাদের ছেলেরা গোলটা করার পর কিছুক্ষণের জন্য ফোকাস থেকে সরে গিয়েছিল উত্তেজনায়। সেটা কাজে লাগিয়েছে কলম্বিয়া। তা সত্ত্বেও বলছি আমরা যে সংগঠিত ফুটবল খেলেছি সেটা আমার কাছে গৌরবের। যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, কলম্বিয়ার মতো শক্তিশালী টিমের কোচও তো বলে গিয়েছেন আমাদের সঙ্গে জিততে তাদের সমস্যা হয়েছে।’’
দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপের প্রথম গোল করে ইতিহাসে নাম লেখানোর পর জ্যাকসন কথা বলতে গিয়ে রীতিমতো আবেগে ভাসল। ‘‘গোলটা করার পর মনে হচ্ছিল আকাশে উড়ছি। তবে বিশ্বকাপের ম্যাচটা জিততে পারলে সেটা আরও মধুর হতো। এটা একটা বড় শিক্ষা।’’ জ্যাকসনের তুতো দাদা অধিনায়ক অমরজিৎ সিংহ বলল, ‘‘গোলের মুহূর্তটা সারা জীবন মনে থাকবে। ম্যাচটা আমরা জিততে পারতাম। অন্তত একটা পয়েন্ট তো পেতে পারতাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy