ফিরোজ শাহ কোটলা থেকে ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর— ধোঁয়াশার হাত থেকে মঙ্গলবারও রেহাই পেল না রাজধানী। গোটা দিনই দিল্লিতে জাঁকিয়ে বসে রইল ধোঁয়াশার চাদর। দৃশ্যমানতার অভাবে একাধিক ট্রেন বাতিল করল উত্তর রেলওয়ে। ব্যাহত হয় বিমান চলাচলও।
কোটলায় এ দিন ভারত-শ্রীলঙ্কা টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা চলাকালীন মাঠের মধ্যেই বমি করতে দেখা যায় শ্রীলঙ্কার পেসার সুরঙ্গা লাকমলকে। দিনভর শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের মুখোশ পরে ফিল্ডিং করতে দেখা যায়। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসমান দীনেশ চান্দিমল সবচেয়ে বেশিক্ষণ ক্রিজে ছিলেন। হেলমেট পরে ব্যাট করার সময় কাউকেই ‘মাস্ক’ পরতে দেখা যায়নি। কিন্তু ফিল্ডিং করার সময়ে শ্রীলঙ্কার প্রায় সব ক্রিকেটারকেই তা পরতে দেখা গিয়েছে। শুধু বোলারের পক্ষে ‘মাস্ক’ পরে বল করা সম্ভব নয় বলে কেউ কেউ বল করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। যেমন এ দিন অসুস্থ হয়ে বমি করেছেন দু’দলের দুই পেস বোলার লাকমল ও শামি।
পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ‘সফর’-এর হিসেবে মঙ্গলবার দিল্লিতে বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর কণা ‘পিএম ২.৫’ ও ‘পিএম ১০’-এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২০৯ ও ৩৩৯। যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি। পরিবেশবিদদের একাংশের মতে, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই সময়ে দিল্লিতে খেলা ফেলাই উচিত হয়নি। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বায়ু গবেষণা বিভাগের প্রধান দীপঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘বর্তমানে বাতাসে যে ভাসমান ক্ষতিকর কণা রয়েছে তাতে যথাসম্ভব বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এমনকী, ওই পরিবেশে সকালে হাঁটতে বেরোলেও লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি।’’ ক্রিকেট খেলায় পাঁচ দিন ধরে ছয় ঘণ্টা ধরে খেলা চলে। ফিল্ডিং বা বোলিংয়ের সময় বেশি করে ছুটোছুটি হয় এবং বেশি দম খরচ হতে থাকে। সেই কারণে দিল্লির দূষণে ফিল্ডিং করার সময়েই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি জয় আর ৭ উইকেট দূরে
তবে মুম্বইতে নিম্নচাপের ফলে আগামী দু’দিন দিল্লিতে বৃষ্টির আশা করছে মৌসম ভবন। তাতে দূষণ কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। আবার নিম্নচাপের জেরে শেষ দিনে কোহালিদের টেস্ট জয়ে কোনও বাধা পড়ুক, সেটাও চান না ক্রিকেট ভক্তরা। দিল্লির আবহাওয়া পরিস্থিতির সমালোচনা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলে, স্বচ্ছতা অভিযান কর। দেখো, দিল্লিতে শ্রীলঙ্কা খেলছে, নাকে মুখোশ পরে। আমরা বলি, ‘পহেলে ঘর সামলাও, ফির বাহার কো বোলো’। রাজধানী দিল্লিতে রাজনৈতিক দূষণ থেকে আবহাওয়ার দূষণ, এত বেশি হয়ে গিয়েছে যে, দিল্লিতে এখন মুখোশ পরে খেতে হচ্ছে, খেলতে হচ্ছে, চলাফেরা করতে হচ্ছে। নেতাদের এ বার বলতে গেলেও মুখোশ লাগবে। বড় বড় কথা বলে। মানুষ তৈরি করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy