স্বপ্নপূরণ: ম্যাচ চলাকালীন মাঠে ঢুকে প্রিয় তারকার সঙ্গে সেলফি। ছবি: এএফপি।
বার্সেলোনা ০ : অলিম্পিয়াকোস ০
এক দিকে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শততম গোলের হাতছানি। অন্য দিকে অলিম্পিয়াকোস এফসি-র বিরুদ্ধে জিতলেই শেষ ষোলোয় যোগ্যতা অর্জন। মঙ্গলবার রাতে কিন্তু শূন্য হাতেই ফিরতে হল লিওনেল মেসি-কে। গত পাঁচ বছরে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে কোনও গোল না করেই মাঠ ছাড়লেন বার্সেলোনা ফুটবলাররা। শুধু তাই নয়। গত সাতাত্তর দিনে সমস্ত ম্যাচেই গোল করেছিলেন তাঁরা। ব্যতিক্রম অলিম্পিয়াকো এফসি-র বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার রাতে ম্যাচ শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন এক মেসি-ভক্ত। বার্সেলোনা তারকা তখন কর্নার নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দ্বিতীয়ার্ধেও। এ বার মাঠের মধ্যেই প্রিয় তারকার সঙ্গে সেলফি তুললেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মেসি-র বুকে মাথা রাখলেন আপ্লুত অলিম্পিয়াকোস ডিফেন্ডার। ভক্তদের স্বপ্নপূরণের রাতে মেসি কিন্তু মাঠ ছাড়লেন হতাশা নিয়ে।
অলিম্পিয়াকোস এফসি-র বিরুদ্ধে গ্রপ লিগের প্রথম পর্বে ৩-১ জিতেছিল বার্সেলোনা। মঙ্গলবার রাতে ফিরতি লিগে জিতলেই শেষ ষোলোয় যোগ্যতা অর্জন করতেন মেসি-রা। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলেছিল বার্সেলোনা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৬৭৪টি পাস খেলেন বার্সেলোনার ফুটবলাররা। অলিম্পিয়াকোসের গোল লক্ষ্য করে মেসি-রা ২০টি শট নিয়েছিলেন। লক্ষ্যে পৌঁছেছিল ছ’টি শট। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে লুইস সুয়ারেজের শট ধাক্কা খায় ক্রসবারে। সেখানে ৯০ মিনিটে অলিম্পিয়াকোস ফুটবলাররা মাত্র পাঁচটি শট নিয়েছিলেন বার্সেলোনার গোল লক্ষ্য করে। লক্ষ্যে পৌঁছেছিল মাত্র একটি শট। তা সত্ত্বেও জয় হাতছাড়া হল বার্সেলোনার। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে শেষ দু’টো ম্যাচ থেকে অন্তত এক পয়েন্ট পেতেই হবে মেসি-দের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘ডি’ গ্রুপে চার ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে সাত পয়েন্ট নিয়ে দু’নম্বরে জুভেন্তাস। চতুর্থ ম্যাচে এসে প্রথম পয়েন্ট পেল অলিম্পিয়াকোস। এবং সেটা আবার ঘরের মাঠে বার্সেলোনার মতো দলকে আটকে দিয়ে।
অভিভূত: প্রতিপক্ষের সেরা অস্ত্র যখন আদর্শ। ম্যাচের মধ্যেই মেসিকে জড়িয়ে ধরলেন অলিম্পিয়াকোস ডিফেন্ডার। মঙ্গলবার রাতে আথেন্সে। ছবি: এপি।
অলিম্পিয়াকোসের বিরুদ্ধে জিততে না পারার কারণ কী? ম্যাচের পর বার্সেলোনো ম্যানেজার আর্নেস্তো ভালভার্দে। সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘অলিম্পিয়াকোসের রক্ষণাত্মক নীতি দুর্দান্ত ছিল। তবুও আমরা চেষ্টা করেছিলাম। বল দখলের লড়াইয়েও আমরা এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু গোলটাই করতে পারিনি।’’ মঙ্গলবার জিতলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় পৌঁছে যেত বার্সেলোনা। কিন্তু তা না হওয়ায় হতাশ ভালভার্দে বলেছেন, ‘‘এক পয়েন্ট অর্জন কখনওই আমাদের লক্ষ্য ছিল না। এই মুহূর্তে আমি সামনের দিকেই তাকাতে চাই।’’
ম্যাচ শুরু হওয়ার ঠিক আগে প্রথম একাদশে পরিবর্তন করেছিলেন বার্সেলোনা ম্যানেজার। সের্জিও রবের্তোর পরিবর্তে খেলান জেরার দেউলোফেউ-কে। স্প্যানিশ মিডিয়ার দাবি, ম্যাচের পর মেসি নাকি তা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন। এখানেই শেষ নয়। ভালভার্দে-কে বলেছেন, পরের ম্যাচ থেকে সের্জিও-কেই প্রথম দলে খেলাতে।
অলিম্পিয়াকোসের বিরুদ্ধে দেউলোফেউ-কে খেলানো নিয়ে ভালভার্দের যুক্তি, ‘‘আমার মনে হয়েছিল, এই ম্যাচের জন্য দেউলোফেউ যোগ্যতম। তাই ওকে প্রথম দলে রেখেছিলাম।’’
বার্সেলোনা তারকা সের্জিও বুস্কেৎস কিন্তু একেবারেই হতাশ নন ড্র হওয়ায়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা যদি এই ফর্ম ধরে রাখতে পারি, তা হলে একশোর মধ্যে পঁচানব্বইটা ম্যাচেই জিতব। আমরা চেষ্টা করেছি গোল করার। আমাদের শট ক্রসবারে লেগেছে। ফুটবলে এ রকম হতেই পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘গ্রুপে আমরা খুব ভাল জায়গায় রয়েছি। আমাদের এখন এগিয়ে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy