Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেতৃত্বে ফের শ্রীনি, বোর্ডের বিদ্রোহী বৈঠক আজ দিল্লিতে 

সিওএ সম্প্রতি চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি জারি করেছে যে, লোঢা কমিটি এ বার মেনে নিতেই হবে। একমাত্র তিন বছর মেয়াদে থাকার পরে বিশ্রামে যাওয়া বা ‘কুলিং অফ’ নিয়ে কিছুটা নরম মনোভাব দেখাতে রাজি বিনোদ রাই-রা।

আসরে: ফের সক্রিয় শ্রীনিবাসন। খুঁজছেন যুদ্ধের রাস্তা। ফাইল চিত্র

আসরে: ফের সক্রিয় শ্রীনিবাসন। খুঁজছেন যুদ্ধের রাস্তা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৪:৩২
Share: Save:

ভারতীয় বোর্ডের অন্দরমহলে ফিরে এলেন এন. শ্রীনিবাসন। লোঢা কমিটি এবং সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌স (সিওএ)-এর বাউন্সারে যিনি বোর্ড রাজনীতির পিচে ‘আউট’ হয়ে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছিল। সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে সিওএ এবং লোঢা কমিটির সুপারিশ নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নয়াদিল্লিতে আজ, শনিবার বৈঠক ডাকছেন শ্রীনি।

সিওএ সম্প্রতি চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি জারি করেছে যে, লোঢা কমিটি এ বার মেনে নিতেই হবে। একমাত্র তিন বছর মেয়াদে থাকার পরে বিশ্রামে যাওয়া বা ‘কুলিং অফ’ নিয়ে কিছুটা নরম মনোভাব দেখাতে রাজি বিনোদ রাই-রা। বাকি সমস্ত কিছু মানতেই হবে বলে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। অর্থাৎ, ৭০ পেরিয়ে গেলে থাকা যাবে না ক্রিকেট সংস্থার পদে। নয় বছর হয়ে গেলে সংস্থা ছেড়ে চিরতরে চলে যেতে হবে। এবং, লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে সংবিধানগত পরিবর্তন করতেই হবে বোর্ড এবং তার অনুমোদিত সমস্ত রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায়।

নতুন করে জারি হওয়া এই হুঁশিয়ারি নিয়ে ফের যুদ্ধং দেহি হচ্ছেন বোর্ড সদস্যরা। আর সেই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে বিস্ময়কর ভাবে ফিরে এসেছেন শ্রীনি। আজ, শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে যে জরুরি বৈঠক হচ্ছে, তা তিনিই ডেকেছেন। রাজধানীর সেই সভায় যোগ দিতে প্রভাবশালী কর্তারাও আসছেন বলে খবর। যাঁরা আসতে পারবেন না, তাঁরা টেলি-কনফারেন্সে যোগ দিতে পারেন। শ্রীনি-ঘনিষ্ঠ এক কর্তা দিল্লি থেকে শুক্রবার রাতে বললেন, ‘‘বৈঠক হচ্ছে। বোর্ডের মধ্যে দারুণ সাড়াও পেয়েছেন শ্রীনিবাসন।’’

বৈঠকে কী আলোচনা হতে পারে? জিজ্ঞেস করায় সেই কর্তা যোগ করলেন, ‘‘সিওএ তো বোর্ডের কোনও সদস্যের সঙ্গেই কোনও আলোচনা করছে না। এটা কী করে মেনে নেওয়া যায়? সদস্যরা কী পদক্ষেপ করতে পারে, সেটা নিয়েই সম্ভবত পথ খোঁজার চেষ্টা হবে।’’ পাশাপাশি বার্ষিক সাধারণ সভা নিয়েও আলোচনা হতে পারে, বলে মনে করা হচ্ছে।

সব চেয়ে বেশি কৌতূহল তৈরি হয়েছে বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত তিন পদাধিকারীকে নিয়ে। এঁরা হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না, সচিব অমিতাভ চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরীকে নিয়ে। এঁদের মধ্যে সচিব এবং কোষাধ্যক্ষ দু’জনেই এক সময় শ্রীনি অনুরাগী ছিলেন। বোর্ড নির্বাচনে জিতিয়ে তাঁদের পদাধিকারী করেন শ্রীনি-ই। পরে সিওএ-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে শ্রীনিকে ত্যাগ করেন অমিতাভ। আর অনিরুদ্ধকে সরিয়ে দেয় সিওএ।

রাজধানীতে শীর্ষ বৈঠকের আগের রাতে জোর জল্পনা যে, তিন পদাধিকারীই ফের শ্রীনির দিকে ঢলে পড়েছেন এবং বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। সঙ্গে অন্তত ১৫-১৬টি রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে থাকতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। কৌতূহল রয়েছে, অনুরাগ ঠাকুর বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা সেটা নিয়েও। অমিতাভদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে সিওএ। পাশাপাশি, ই-মেল মারফত এই তিন পদাধিকারীর সমস্ত ক্ষমতাও কেড়ে নিয়েছে। বিনোদ রাই-রা বলে দিয়েছেন, এই পদাধিকারীরা কোনও বৈঠক ডাকতে পারবেন না। কোনও ‘চেক’ সই করতে পারবেন না। আগাম অনুমতি ছাড়া ক্রিকেট দলের সঙ্গে বোর্ডের টাকায় কোনও সফর করতে পারবেন না।

শ্রীনি এর আগেও এ ধরনের বিদ্রোহী বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বোর্ড এককাট্টা থাকতে পারেনি। এ বার পারবে কি না, সেটা দেখার। সিওএ এই বৈঠককে কী ভাবে নেয়, সেই কৌতূহলও রয়েছে। তবু শনিবারের গোপন বৈঠক ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বোর্ডের অন্দরমহলে। আর কর্তাদের মুখে শোনা যাচ্ছে একটা কথা— লড়াই করতে হলে শ্রীনি ছাড়া উপায় কী!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket BCCI N. Srinivasan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE