আই লিগ ও আইএসএলের সংযুক্তিকরণ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে না জানাই ছিল।
দুই প্রধানকে আইএসএলে নিতে হবে, এ রকম নির্দেশ দেওয়া হবে না সেটাও জানতেন কুয়ালা লামপুরে যাওয়া দুই প্রধানের প্রতিনিধিরাও।
সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হল না আইএসএলকেও।
বুধবার বহুচর্চিত এএফসি-র সভায় বার্তা দেওয়া হল সবাইকে নিয়ে চলার। যেমন বলা হল,
এক) মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের মতো শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া বা ছুঁতে চলা ক্লাবের অবদান বা ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।
দুই) প্রচুর টাকা নিয়ে আসা নতুন কোনও টিম বা স্পনসরদেরও (আইএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি) সঙ্গে নিতে হবে ফুটবলের স্বার্থে।
আই লিগের ক্লাব বনাম আইএসএলের তীব্র লড়াইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে কী ভাবে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি করা যায় তার রাস্তা খুঁজতে বলল এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। যা থেকে পরিষ্কার স্পনসর আইএমজি-রিলায়্যান্সের পক্ষে এক তরফা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না ফেডারেশন। শুধু তাই নয়, সরকারি টুনার্মেন্ট করে দেওয়ার জন্য আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের এএফসি কাপে খেলতে দেওয়ার জন্য প্রফুল্ল পটেল-কুশল দাসদের চেষ্টাও বড় ধাক্কা খেল মনে করছে ফুটবলমহল।
আরও পড়ুন: এএফসির সঙ্গে মিটিং শেষে ভারতের হাতে এল ভবিষ্যতের রোডম্যাপ
এ দিন সকালে সব পক্ষের কথা শোনার পর এএফসি কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। জানিয়ে দিয়েছে, অগস্টে তারা একটা প্রস্তাবিত ‘রোড ম্যাপ’ তৈরি করে দেবে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে যুব বিশ্বকাপ অক্টোবরে শেষ হওয়ার পর তা চূড়ান্ত করতে হবে ফেডারেশনকে। যা খবর তাতে ভারতে ১৬ দলের একটা লিগ করার কথাই বলবে এএফসি।
কিন্তু এর মাঝের সময় কী ভাবে চলবে ভারতীয় ফুটবল? ১৫ নভেম্বর শুরু হওয়ার কথা আইএসএল। সেখানে ক’টা দল খেলবে? কবে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিলাম? ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান কি খেলবে আইএসএলে? আই লিগ ও আইএসএল একসঙ্গে হবে না আলাদা হবে? এ সব প্রশ্ন সভায় ওঠায় এএফসি সচিব দাতো উইন্ডসর বলে দিয়েছেন, ‘‘ওটা আইএসএল এবং আই লিগের ক্লাবেদের সঙ্গে বসে ঠিক করুক ফেডারেশন।’’ এবং সেটা লুফে নিয়েই সভায় উপস্থিত ফেডারেশন সচিব কুশল দাশ বলে দিয়েছেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করব।’’ আর এটা শোনার পরই সিঁদুরে মেঘ দেখছে ক্লাবেরা। তাদের শুরু করতে হচ্ছে নতুন যুদ্ধ।
আজ, বৃহস্পতিবার মুম্বইতে সভা রয়েছে ফেডারেশনের কর্তাদের। সেখানে স্পনসরদের খুশি করতে আইএসএল এবং আই লিগ আপাতত পাশাপাশি চলবে, প্রফুল্ল-কুশলরা এক তরফা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন আশঙ্কা করছেন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান কর্তারা। তাদের ধারণা, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ফেডারেশনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে আইএসএল কর্তৃপক্ষ। কারণ ফ্র্যাঞ্চাইজি নিলাম থেকে ফুটবলার নিলাম সবই যে আটকে আছে।
আর এই আশঙ্কা থেকেই কুয়ালা লামপুরের পরে ফের ফেডারেশন বনাম ক্লাবেদের নতুন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল এ দিন থেকেই। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং আইএফএ-র পক্ষ থেকে বুধবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি চিঠি পাঠানো হল ফেডারেশনে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘এএফসি-র নির্দেশ মতো আই লিগের ক্লাবগুলির সঙ্গে কথা বলে যেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক তরফা যেন কিছু না করা হয়।’’ দুই ক্লাবই চাইছে, ১২ জুন ফেডারেশনের লিগ কমিটির সভায় এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে। যে কমিটির চেয়ারম্যান বাংলার সুব্রত দত্ত। সুব্রত অবশ্য মুম্বইতে ফেডারেশনের কার্যকর কমিটির সভায় থাকবেন। আইএসএল-আই লিগ প্রসঙ্গ সভায় কেউ তুললে তিনি প্রতিবাদী হবেন বলেই খবর। শোনা যাচ্ছে, সব কিছু আটকে থাকলে বেঙ্গালুরু এফসি কীভাবে এএফসি কাপে খেলার জন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করবে সেই প্রসঙ্গ তুলে দুই লিগ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করছে আইএমজিআর। সেটা আটকাতেই ক্লাবেদের চিঠি। শুরু নতুন যুদ্ধও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy