চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পাকিস্তান দল। ছবি: এএফপি
বহু দিন পর ফের এক বার নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করলেন পাকিস্তান ক্রিকেটাররা। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম আইসিসির ৫০ ওভারের কোনও ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হল পাকিস্তান। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয়ের ধ্বজা উড়িয়ে গোটা ক্রিকেটবিশ্বকে প্রমাণ করে দিল, এখনও আগের মতোই ক্ষুরধার পাক-বাহিনী। শুধু জেতাই নয়, পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য সরফরাজের নেতৃত্বে তরুণ দলটাকে প্রায় পাকা করে ফেলল পাকিস্তান।
তবে, টুর্নামেন্টের শুরুটা মোটেও সুখকর ছিল না পাকিস্তানের জন্য। প্রথম ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারের মুখ দেখতে হয় আমেরদের। ১২৪ রানে টিম ইন্ডিয়ার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযানের শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান।
তাবড় তাবড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা যখন মনে করছিলেন ভারতের কাছে হেরে গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হবে পাকিস্তানকে, তখন হয়ত অলক্ষ্যে হাসছিলেন ক্রিকেট দেবতা।
বিরাটদের কাছে হারের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রতিটি ম্যাচই নক আউট ছিল পাকিস্তানের জন্য। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মাস্ট উইন ম্যাচে প্রথমে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তরুণ এই পাক দল।
নক আউটে উঠে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি পাকিস্তানকে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মিনি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠেন হাসান আলিরা।
আরও পড়ুন: জিতেই দাবি, ক্রিকেট ফিরুক পাকিস্তানে
এর পরই আরও এক বার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের মুখোমুখি হতে হয় পাকিস্তানকে। আইসিসি টুর্নামেন্টের ইতিহাস অনুযায়ী ফাইনাল ম্যাচেও আন্ডারডগ হিসাবেই নেমেছিলেন পাক ক্রিকেটারেরা। বিভিন্ন মহল থেকে রবিবারের মেগা ফাইনালে এগিয়ে রাখা হয়েছিল ভারতকেই। এমনকী বাজির দরেও অনেক এগিয়ে ছিল কোহালিরা।
কিন্তু অধিকাংশ ক্রিকেট বোদ্ধাদের ভুল প্রমাণ করে ১৮০ রানে টিম ইন্ডিয়াকে পর্যুদুস্ত করে ট্রফি জেতে পাকিস্তান।
গোটা টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের এই অসাধারণ কামব্যাকের পিছনে যাঁরা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ফখর জামান। ফখরের চওড়া ব্যাট চওড়া হাসি এনে দিয়েছে পাক সমর্থকদের মুখে। ফখর ছাড়াও বিশেষ করে উল্লেখ্য মহম্মদ আমির, হাসান আলি এবং জুনেইদ খান। পাকিস্তানের এই পেস ব্যাটারি গোটা টুর্নামেন্টে ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের। ফাইনালেও কার্যত পাকিস্তানের পেসকে না সামলাতে পরেই ভরাডুবি ঘটে টিম ইন্ডিয়ার।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতা এই পাকিস্তান দলে অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক এবং মহম্মদ হাফিজ থাকলেও নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হয় এই দু’জনই। গোটা টুর্নামেন্টেই পাকিস্তানকে টেনেছে পাক তরুণ তুর্কিরাই। ফলে যদি এভাবেই আগামীদিনে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে সফল হতে থাকেন মহম্মদ আমের-হাসান আলিরা, তাহলে বলা যায় এই তরুণ দলটিই বাজি হতে চলেছে পাকিস্তানের, আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy