কিদাম্বি শ্রীকান্ত। ছবি: এপি।
পুরো সুস্থ ছিলেন না। পেটের রোগ সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল সিডনি-তে পা দেওয়ার পরপরই। ফাইনালে অলিম্পিক্স ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি অসুস্থ শরীর সামলানোর কঠিন চ্যালেঞ্জটাও ছিল তাঁর। দুটোই সামলে শেষ পর্যন্ত রবিবার বিরল নজির গড়ে ফেললেন। তিনি— কিদম্বি শ্রীকান্ত।
ইন্দোনেশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া। এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দুটো সুপার সিরিজ জেতার রেকর্ড গড়ার পথে চিনের চেন লং-কে ফাইনালে স্ট্রেট গেমে হারালেন হায়দরাবাদি তারকা ২২-২০, ২১-১৬। যার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সচিন তেন্ডুলকর রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রীকান্তকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী টুইটারে লিখেছেন, ‘তোমার সাফল্যে আমরা গর্বিত।’ ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত শ্রীকান্ত বলে দেন, ‘‘সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টে ভালই খেলেছি। তবে সিডনিতে আসার পরে পেটের সমস্যায় ভুগছিলাম। শারীরিক দিক থেকে পুরোপুরি সুস্থ ছিলাম না। তবু চাপে পড়িনি কখনও। ফাইনালে ওঠার পরে মনে হল কোর্টে নামতেই হবে, যতটা ভাল পারব খেলব।’’
বিশ্বের ১১ নম্বর শ্রীকান্ত চতুর্থ সুপার সিরিজ জিতে ভারতীয় পুরুষ সিঙ্গলস খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে সফল হওয়ার নজিরও গড়ে ফেললেন। এর আগে তিনি দুটো সুরার সিরিজ জেতেন ২০১৪ চিন ওপেন এবং ২০১৫-এ ইন্ডিয়ান ওপেনে। শুধু তাই নয়, এপ্রিলে সিঙ্গাপুর ওপেনেও ফাইনালে উঠেছিলেন শ্রীকান্ত, যেখানে তিনি হেরে গিয়েছিলেন বি সাই প্রণীতের কাছে। ফলে পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে এই নিয়ে টানা তিনটি সুপার সিরিজের ফাইনালে ওঠার রেকর্ড করলেন হায়দরাবাদি তারকা। তবে এ সব কিছুই হত না যদি তিনি শারীরিক সমস্যা সরিয়ে মনের জোর ধরে রেখে ফাইনালে না নামতেন।
আরও পড়ুন: সুপার সিরিজে সুপার শ্রীকান্ত
শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘কোর্টে নেমে আমি হার বা জয়ের কথা ভাবছিলাম না। আমায় বেশ কিছুদিন ব্যাডমিন্টনের থাকতে হয়েছিল চোটের জন্য। তাই এই ম্যাচটা উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। চেয়েছিলাম হাল না ছেড়ে যতগুলো সম্ভব ম্যাচ খেলতে।’’
চেন লং-এর বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন শ্রীকান্ত। সেটাই তাঁর স্ট্র্যাটেজি ছিল ম্যাচে। ‘‘এখানকার কন্ডিশন এমনই যে চট করে আক্রমণ করা যায় না। একটু ধীর গতিতে খেলা চলে। তাই দীর্ঘ সময়ের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ফাইনালে প্রত্যেক বিরতির সময় আমি এগিয়ে ছিলাম চেনের থেকে। কোচ আমায় বলছিলেন তখন এটা ধরে রাখতে, কোনও ভুল না করতে, চেনকে ম্যাচে ফেরার কোনও সুযোগ না দিতে। আার আক্রমণ করে যাওয়াটাই দারুণ কাজে দিয়েছে,’’ বলছিলেন শ্রীকান্ত। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমার কেরিয়ারের সেরা সময় যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের শীর্ষ পর্যায়ে পরপর সুপার সিরিজ জেতার এই মুহূর্ত সারা জীবন মনে থাকবে।’’
যে ভাবে সম্প্রতি ভারতীয় খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সাফল্য পাচ্ছেন তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘প্রণীত, প্রণয় আর আমি গত এক মাসে যে পারফর্ম দেখিয়েছি সেটা ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের জন্য দারুণ ব্যাপার। এতেই স্পষ্ট আমাদের ক্ষমতা কতটা। ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাইব আরও ধারাবাহিক থাকতে। সেটাই লক্ষ্য এখন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy