Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘অযোগ্য’ মাঠ ম্যাচ হারালো, হতাশা গুয়াহাটিতে

গত ২১ অক্টোবর কোয়ার্টার ফাইনালের আগের রাত থেকে টানা প্রায় ৪০ ঘণ্টার বৃষ্টিতে সে দিনই খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল গুয়াহাটির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে।

খলনায়ক: এই সেই মাঠ। গুয়াহাটির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামের এই দশাই ছিল শেষ ম্যাচে। মাঠের কোনও উন্নতি হয়নি বলেই জানাল ফিফা। ফাইল চিত্র

খলনায়ক: এই সেই মাঠ। গুয়াহাটির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামের এই দশাই ছিল শেষ ম্যাচে। মাঠের কোনও উন্নতি হয়নি বলেই জানাল ফিফা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০৭
Share: Save:

গুয়াহাটির সাম্বা দর্শন শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল। নজিরবিহীন সিদ্ধান্তে ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়াম ম্যাচ করার অযোগ্য বলে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচটাই এখান থেকে সরিয়ে নিল ফিফা। রাতারাতি সেই ম্যাচের আয়োজন করা হচ্ছে কলকাতায়।

ঘটনা হচ্ছে, সোমবার দুপুরে যখন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ফিফা, তখন সেমিফাইনালের দু’টি দলই গুয়াহাটিতে বসা। জরুরিকালীন ভিত্তিতে দু’টি দলকে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়। রাতের দিকে বিশেষ বিমানে তাঁদের পাঠানো হয় কলকাতায়।

কিন্তু গোটা দেশের ফুটবলমহলে তত ক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে এই খবর যে, গুয়াহাটি থেকে ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কেন এই সিদ্ধান্ত? জানা গিয়েছে, গত ২১ অক্টোবর কোয়ার্টার ফাইনালের আগের রাত থেকে টানা প্রায় ৪০ ঘণ্টার বৃষ্টিতে সে দিনই খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল গুয়াহাটির ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচটিতে খেলছিল ঘানা ও মালি। বিশেষ ভাবে আপত্তি জানিয়েছিল ঘানা। কিন্তু ফিফা কর্তারা মাঠ পরীক্ষা করে জানান বলের ‘স্ট্যান্ডার্ড রোলিং’ হচ্ছে। খেলা হতে পারে। কিন্তু সে দিন খেলা হলেও মাঠের পরিস্থিতি মোটেও ভাল ছিল না। খেলার মধ্যেও মাঠে ঘাসের চাপড়া উঠে আসতে থাকে। ফুটবলারদের পা কাদার মধ্যে বসে যাওয়ার ছবিও দেখা গিয়েছে। খেলা শেষে মাঠের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়। কারও কারও মনে তখনই আশঙ্কা দেখা দেয়, এই মাঠে সেমিফাইনাল সম্ভব হবে কি না।

আরও পড়ুন: ব্রাজিল শিবিরে যেন ‘ঘরে’ ফেরার আনন্দ

এ দিন সেই আশঙ্কা সত্যিতে পরিণত হলেও স্থানীয় কর্মকর্তাদের দাবি, ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামের মাঠ দেশের অন্যতম সেরা। মাঠের দুরবস্থার কথা বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। মাঠের নিকাশি ব্যবস্থাও অন্য অনেক মাঠের চেয়ে ভাল। রবিবার থেকে বৃষ্টি হয়নি। ২৫ অক্টোবর সেমিফাইনালের আগে হাতে সময়ও রয়েছে। মাঠ সারিয়ে তোলা সম্ভব।

গত কাল রাত পর্যন্ত টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর হাভিয়ার সেপ্পি মাঠ শুকোনোর কাজ তদারকি করেন। আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান প্রফুল্ল পটেলও গত কাল পর্যন্ত জানিয়েছিলেন, গুয়াহাটির নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। খেলা সরছে না। যে কোনও উপায়ে গুয়াহাটিতে খেলা ধরে রাখতে আসরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তাঁর উদ্যোগে পবনহংসের একটি হেলিকপ্টার বেলা ২টো ৫০ মিনিট থেকে ২৫ মিনিট ধরে মাঠের উপরে উড়ে মাঠ শুকোনোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু সমস্ত চেষ্টাই বৃথা হয়ে যায়।

আয়োজক কমিটি সূত্রে খবর, এর পর, ফিফা কর্তারা দুই দলের কর্তাদের নিয়ে মাঠ পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু গত তিন বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সাফ জানায় তারা এই মাঠে খেলার ঝুঁকি নেবে না। ভেজা ও অসমান মাঠে ফুটবলারদের চোট লাগার বড় ঝুঁকি থাকবে। ইংল্যান্ড অবশ্য তেমন কোনও কড়া আপত্তি জানায়নি বলেই খবর। ফিফা জানায় টিকিটের দাম অনলাইনেই ফেরত দেওয়া হবে।

কলকাতার মতোই অসম ও উত্তর-পূর্বেও ব্রাজিলের সমর্থন ব্যাপক। সেই ব্রাজিলের আপত্তিতেই খেলা সরে যাওয়ার খবর চাউর হতেই ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন ফুটবল অনুরাগীরা। অস্ট্রেলিয়া টিম বাসে পাথর ছোড়ার কাণ্ড থেকে শিক্ষা নেওয়া অসম পুলিশ তাই দু’দলের ফুটবলারদের জন্য আগেভাগেই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। হাতের কাছে ব্রাজিলকে পেয়েও দেখতে না পাওয়ার হতাশা থেকেই গেল গুয়াহাটির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE