আইএসএল নিলামের কল্যাণে ভারতীয় ফুটবলের হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া বেশ কিছু তারকা-মুখ ভেসে উঠেছে বাজারে। আইএসএল নিলামের বাহাত্তর ঘণ্টা আগে দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির কারও কারও তালিকায় তাঁদের নামও উঠে পড়েছে বলে খবর। এবং সেটা সংগঠকদের বেঁধে দেওয়া বাজেটের জন্যই।
রহিম নবি, শৌমিক দে, মোহনরাজ, অসীম বিশ্বাস, রাকেশ মাসি, মঞ্জু, মোহনরাজ, অভ্র মণ্ডল—রবিবার মুম্বইতে কোটিপতি ফুটবলারদের সঙ্গে এঁরাও তাই নামছেন ভাগ্যান্বেষণে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবগুলির সামনে নিজেদের দাম নিয়ে বিক্রির আশায় হাজির তাঁরা।
আই লিগ এবং আইএসএল আলাদা সময়ে হওয়ায় একই ফুটবলার এত দিন দুটো টিমে খেলার সুযোগ পেয়ে যেতেন। ফলে হঠাৎই অসময়ে কার্যত দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল নবি, শমীক, অসীমদের ফুটবলার জীবনে। কেউ ঘরোয়া লিগে, কেউ আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলে বেঁচেবর্তে ছিলেন এত দিন।
কিন্তু এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। দুটো লিগ পাশাপাশি হওয়ায় প্রচুর ফুটবলার লাগবে। শুধু আইএসএলের নিলামেই বিক্রি হবেন প্রায় ১৩০ ফুটবলার। এর পর আবার আছে আই লিগ। সেখানেও লাগবে আরও একশো ফুটবলার। ফলে কিছু দিন আগেই যাঁদের দেখে মনে হয়েছিল বাজার নেই, তাঁদের কপালে হঠাৎই বৃহস্পতি তুঙ্গে। সেটা কীভাবে? অঙ্কটা খুব সহজ, দেশীয় ফুটবলারদের জন্য এক-একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি খরচ করতে পারবে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। নিতে হবে কমপক্ষে পনেরো জন ফুটবলার। ফলে কোটি টাকা বা পঞ্চাশ লাখ টাকার উপরে দু’তিনজন ফুটবলার নেওয়ার পর বাজেটে টান পড়বে। এই কারণেই রহিম নবি বা শমীক দে-র মতো প্রাক্তন তারকাদের কেনার হিড়িক পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
নবির অনেক আগে ময়দানে খেলা শুরু করেও মেহতাব হোসেনের দর উঠেছে ৫০ লাখ। যা খবর, তাতে অন্তত তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁকে চাইছে। আর নবি গত বার আই লিগ বা আইএসএল-এ খেলার সুযোগই পাননি। কলকাতা লিগে পিয়ারেলেসে চুটিয়ে খেলেও নবির মতো সফল ফুটবলার পিছিয়ে পড়েছিলেন। এ বার অবশ্য নবি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য তৈরি। বলছিলেন, ‘‘আমার দাম কম রেখেছি। জানি না, কোন টিমে সুযোগ পাব। তবে পেলে দেখিয়ে দেব, নবি পুরনো চাল হলেও ভাতে কতটা বাড়ে।’’ খেলতে চান বলেই নবি নিজের দাম রেখেছেন বারো লাখ। এক বছর মাঠের বাইরে থাকা ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকা শৌমিক দে-কে অবশ্য কিনতে হলে দিতে হবে ১৮ লাখ। আর এক সাইড ব্যাক শৌভিক ঘোষ গতবার সেভাবে সুযোগই পাননি মোহনবাগানে। তিনিও নিজের দাম রেখেছেন ১৭ লাখ। রাকেশ মাসি, অসীম বিশ্বাস, দুর্গা বোরোরা অবশ্য টাকার চেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন খেলাতেই। এক সময়ের এই তারকা ফুটবলাররা সবাই নিজেদের দাম রেখেছেন দশ লাখের মধ্যে। যাতে টিমগুলো বাজেটের মধ্যে তাঁদের নিতে পারে। খোঁজ করে দেখা গেল, ফ্র্যাঞ্চাইজিরা জনা ছয়েক তারকা ফুটবলার তুলে নিয়ে নবি-অসীমদের মতো কম দামের ফুটবলারদের কথা ভাবতে শুরু করেছেন।
তবে এ সবের মধ্যেই আই লিগ জয়ী আইজল এফসি-র ফুটবলারদের বাজার ভাল। ৪০-৫০ লাখের মধ্যেই পাওয়া যাবে তাঁদের। এজেন্টরা সে ভাবেই দাম রেখেছেন পাহাড়ি টিমের ছেলেদের। আইএসএলের নিলামে এ বার অবশ্য ফুটবলারদের নিয়ে নানা চমকের চেয়েও বড় ঘটনা এজেন্টদের উত্থান। তারকা থেকে অনামী—সবার হয়েই আইএসএলের সঙ্গে দর কষাকষি করেছেন এজেন্টরা। ফুটবলাররা পর্দায় আড়ালে ছিলেন। ভারতীয় ফুটবলে যা কখনও হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy